পাতা:বিরাজবৌ - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/২৮

S আরও ছয় মাস অতিবাহিত হইয়া গেল। হরিমতির বিবাহের পূর্বেই ছোটভাই বিষয় সম্পত্তি ভাগ করিয়া লইয়াছিল। নীলাম্বরের নিজের ভাগে যাহা পড়িয়াছিল। তাহার কিয়দংশ সেই সময়েই বাধা দিয়া অর্থ সংগ্ৰহ করিতে হইয়াছিল-বলা বাহুল্য, পীতাম্বর এক কপৰ্দক দিয়াও সাহায্য করে নাই। অবশিষ্ট জমি-জমা যাহা ছিল, তাহাঁই একটির পর একটি বন্ধক দিয়া নীলাম্বর বিবাহের সর্ত পালন করিয়া ভগিনীপতির পড়ার খরচ যোগাইতে লাগিল এবং সংসার চালাইতে লাগিল। এইরূপে দিন দিন "নিজেকে সে.ক্রমাগত শক্ত করিয়া জড়াইয়া ফেলিতে লাগিল, কিন্তু মমতাবশে কোন মতেই পৈতৃক-সম্পত্তি একেবারে বিক্রয় করিয়া ফেলিতে পারিল না। আজ বৈকালে ও-পাড়ার ভোলানাথ মুখুয্যে আসিয়া বাকি সুদের জন্য কয়েকটা কথা কড়া করিয়াই বলিয়া গিয়াছিল, আড়ালে দাড়াইয়া বিরাজ তাহ সমস্তই শুনিল এবং নীলাম্বর ঘরে আসিতেই, সে রান্না-ঘর হইতে নিঃশব্দে সন্মুখে আসিয়া দাড়াইল। তাহার মুখের পানে চাহিয়া নীলাম্বর মনে মনে প্ৰমাদ গণিল । ক্ষোভে অপমানে বিরাজের বুকের ভিতরটা হু হু করিয়া জ্বলিতেছিল; কিন্তু সে ভাব সে সংযত করিয়া হাত দিয়া খাট দেখাইয়া দিয়া প্ৰশান্ত-গভীর কণ্ঠে বলিল, ঐখানে ব’স। নীলাম্বুল্ল শ্যার উপর বসিতেই সে নিচে পায়ের কাছে বসিয়া পড়িয়া