পাতা:বিলাতযাত্রী সন্ন্যাসীর চিঠি - ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়.pdf/৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৬
বিলাত-প্রবাসী

পারিলে বাঁচে। আমার শীতসহিষ্ণুতা দেখে এরা বিস্মিত হয়। গত কল্য দু জন ইংরেজ থিওসফিষ্টের সঙ্গে খুব আলাপ পরিচয় হইল। আমায় শীতে কাবু করিতে পারে না দেখে একজন আভাস দিলে যে আমার বােধ হয় যােগবল আছে। আমি যদি কথাটাতে সায় দিয়ে একটু গম্ভীর ভাবে যােগমাহাত্ম্য বর্ণন করিতাম তা হলে খাতিরটা বােধ হয় একটু জমিত। অমনিতেই যথেষ্ট হোয়েছিল তাই আর ভাণ করিবার প্রয়ােজন ছিল না।

গেল সােমবারে এখানকার একজন অধ্যাপক আমায় গাড়ি কোরে বেড়াতে নিয়ে গিয়াছিলেন। আমার মাথায় মলিদার টুপি ও গায়ে পীতবর্ণের বনাত ছিল। রাস্তায় বড় বাহার হােয়েছিল—লােকে হাঁ করে দেখিতে লাগিল। গােটাকতক ছোঁড়া হাে হাে করে হেঁসেও উঠিল। আর আমি ফর্ ফর্ কোরে ইংরেজি কথা কহিতেছি দেখে মেম সাহেবেরা একবারে অবাক্‌। এইরূপ ধবলশ্যাম যুগলমূর্ত্তি অশ্বযানে অতি দ্রুতবেগে চলিলাম। দেড় ক্রোশ দূরে লিটল্-মাের নামক এক গ্রামে আমরা উপনীত হইলাম। এই গ্রাম ইংলণ্ডের ইতিহাসে চিরকালই প্রসিদ্ধ থাকিবে। এখানে স্বর্গীয় নিউম্যান বাস করিতেন। ইনি একজন ধর্ম্মবীর। ইংলণ্ডে ধর্ম্মসম্বন্ধীয় চিন্তার গতি―বিশ্বাস ও ভক্তির দিকে ফিরাইয়া দিয়াছেন। যে গৃহে তিনি বাস করিতেন সেই গৃহে আমরা গেলাম। সেখানে এখন আর একজন অধ্যাপক বাস করেন। ভিতরে গিয়া দেখি যে মল্লিখিত এক ইংরেজি প্রবন্ধ মেজে খোলা রহিয়াছে ও পাতায় পাতায় পেন্সিলের আলােচনা ঘন-সন্নিবিষ্ট। অধ্যাপক আসিয়া উহা সম্ভাষণ করিয়া আমার সহিত মায়া-বাদ সম্বন্ধে আলাপ করিতে ইচ্ছা প্রকাশ করিলেন। আমার তখন বেড়াবার সখ চেপেছে। আমি তাঁকে আর একদিন আসিবার অঙ্গীকার করিয়া বিদায় লইলাম। প্রবন্ধে