পাতা:বিলাতযাত্রী সন্ন্যাসীর চিঠি - ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়.pdf/৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৮
সন্ন্যাসীর চিঠি।

কত যুবক আমার প্রণয়ের ভিখারী হয়েছিল। মেসো মহাশয় ছাড়বার পাত্র নন―তিনি জবাব দিলেন —হ্যারি পাকিন্‌স্‌কে মনে আছে। হাঁ আমার সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা হয়েছিল বটে কিন্তু আমার এই বর্ত্তমান সুইটহার্ট আমার ঠিক মনের মতন হয়েছে। সুইটহার্ট বেচারি বড় কথা টথা কয় না। তিনি প্রণয়িনীর জুতা বুরুস করিয়া দেন―কাপড় টাপড় ঝেড়ে দেন আর কেবল একদৃষ্টিতে সেই প্রণয়িনীর রূপমধু পান করেন। আর এদিকে প্রণয়িনীর মুখে খই ফোটে। আমার গল্প তার বড় ভাল লেগেছিল। অনেকক্ষণ ধরে আমার কাছে তারা বসে থাকত ও গল্প শুন্‌ত। আমিও মিষ্টি মিষ্টি কোরে মধুরে কেমন কোরে মঙ্গলভাব মিশাতে হয় তা আমাদের হিন্দু আচার ব্যবহারের গল্প কোরে বলেছিলাম। অক্ষফোর্ডে এক স্ত্রীলোকদের সভা আছে। আমাকে সেই সভায় হিন্দুগৃহস্থালী সম্বন্ধে বক্তৃতা করিতে হয়েছিল। এক অধ্যাপকের ঘরণী ভারি বিদুষী―সভাপতি (পত্নি) ছিলেন। মেয়ের পাল সভায় উপস্থিত আর দু দশজন পুরুষও ছিল। আমাদের ছোট মেয়েরা কি রকম পুণ্যপুকুরে যমপুকুরেরর ব্রত করে—গোলাপ টগর পাতায় বলেছিলাম। হিন্দুবিবাহের বিবরণ শুনে তারা ভারি খুসি। ঢেলাভাঙ্গানি শয্যাতোলানী বাসর ঘর ইত্যাদিও বল্‌তে হয়েছিল। ছালনাতলায় বর কানমলা ও কীল খায় শুনে রমণীদের কেবল হো হো হাসি। ঘাটে নাইতে গিয়ে মেয়েরা কি রকম কমিটি করে—শাশুড়ী কেমন কনে-বউকে সায়েস্তা করে স্বামী-স্ত্রী অন্যের সামনে বিশেষ গুরুজনের সমক্ষে দেখাদেখি বা কথা কইতে পারে না—আমরা ভালবেসে বিয়ে করিনি বিয়ে করে ভাল বাসি—এসব কথা বর্ণনা করেছিলাম। শেষ কথা যে আমরা তোমাদের মতন কেবল জুতার ফিতা বেঁধে দিয়ে বা জুতা বুরুষ করে স্ত্রীলোকের সম্মান করি না। কিন্তু আসলে করি।