পাতা:বিলাতযাত্রী সন্ন্যাসীর চিঠি - ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়.pdf/৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সন্ন্যাসীর চিঠি।
৬৫

গদিপাতা। দেশে কম্বলে মাদুরে শুয়ে বৈরাগ্য সাধন করিতাম। এখানে বৈরাগ্য টৈরাগ্য কোথায় ভেসে গেছে। প্রাতে উঠে মুখ হাত ধুয়েই খাওয়া। দু পেয়ালা চা-চারি টুকরা রুটী একতাল মাখন ও এক পেলেট পরিজ (Porridge) অর্থাৎ সিদ্ধকরা কোন শস্য—আমি রোজ বেলা ৮॥টার সময় উদরসাৎ করি। ইহাকে উপবাস-ভঞ্জন breakfast বলে। তার পর বেলা একটার সময় লাঞ্চ (lunch) অর্থাৎ মধ্যাহ্নের আহার। ভাত ডাল আলু ভাজা কপির তরকারী রুটী মাখন ও ফল ইত্যাদি খাই। আবার চারিটার সময় টোষ্ট অর্থাৎ রুটী মাখমে ভাজা-কেক্ আর দু পেয়ালা চা অবাধে গ্রহণ করি। রাত্রি। আটটার সময় ডিনার (Dinner) অর্থাৎ প্রধান আহার। আমি প্রায়ই আলু বরবটি ও কলাই শুঁটির তরকারী রুটী ও পুডিং (Pudding) খাই। এখনও শেষ হয় নি। শোবার আগে এক পেয়ালা গরম দুগ্ধ পান করি। দেশে যদি এত খাই তা হলে দু চার দিনেই শমন-ভবন গমন করিতে হয়। তবু আমি এখানে একজন মস্ত সাধু। মাছ মাংস ডিম কিছু খাই না—কি কোরে বাঁচি তাই সবাই অবাক্। এখানকার নিরামিষাশীরা (Vegetarian) ডিম খায় কেননা ডিমের কোন কষ্ট হয় না। কিন্তু এখানে যেমন খাওয়া তেমনি পরিশ্রম। করা চাই। ছ সাত মাইল অন্ততঃ রোজ না বেড়ালে অসুখ করে। আমার শরীর বেশ শুধরে গেছে। চেহারা লাল হয়ে উঠেছে। কিন্তু মাসে ৫০টি করে টাকা দিতে হয়। এর চেয়ে সস্তা হয় না। গৃহিণী মাঝে মাঝে মিষ্টান্ন করেও খাওয়ান। আর ডিম খাইনে বোলে প্রায়ই ডিম না দিয়ে কেক্ তৈয়ারী করেন। কাপড় চোপড় নিজেই কেচে দেন ধোপার খরচ লাগে না। বাড়িতে ইস্ত্রি করিবার বন্দোবস্ত আছে। ইজের মোজা ছিঁড়ে গেলে খুব ভাল রকম নিজে রিপু কোরে দেন। গৃহিণী