পাতা:বিলাতযাত্রী সন্ন্যাসীর চিঠি - ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়.pdf/৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৬
বিলাত ফেরত

ইত্যাদি উপাধির কথা বোলেছিলাম। শেষ উপাধিটি শুনিয়া দার্শনিকের পত্নী বলিলেন—জন (দার্শনিকের ঐ নাম)—তুমি ভারি তার্কিক—তুমি তর্করত্ন উপাধিটি গ্রহণ কর। বাস্তবিক সেদিন কবে আসিবে—যেদিন য়ুরােপীয় পণ্ডিতেরা আমাদের কাছ থেকে উপাধি পেয়ে গৌরবান্বিত বােধ করিবেন।

ইংরেজের পারিবারিক বা সামাজিক বন্ধন একপ্রকার নাই বলিলেই হয়। আমি উক্ষপারে দিন কতকের জন্য এক বাসায় ছিলাম। একটি বৃদ্ধা ও তাহার কন্যা সেই বাসাটি রেখেছে। তারা সমস্তদিন দাস্যবৃত্তি কোরে আপনাদের ভরণ পােষণ করে। কিন্তু ঐ বৃদ্ধার পুত্র একটি জাহাজের কাপ্তেন―বেস দু-পয়সা পায় কিন্তু সে নিজে ভদ্রলােকের মত থাকে ও সব টাকা খরচ করে। মা ও ভগ্নী যেমন দাসী তেমনই আছে। বেশ-বিলাসের খরচ কমাইয়া মা ও ভগ্নীকে যে কোন রকম আর্থিক সাহায্য করা উচিত সে ভাবনা কাপ্তেন বাবুর মনেই হয় না। ইংরেজসমাজের চক্ষে এরূপ ব্যবহার কিছু অন্যায় বােলে বােধ হয় না। এরকম ব্যাপার আকছার দেখা যায়। ছেলে গাড়ী হাঁকিয়ে যাচ্ছে আর বাপ মা দাস্যবৃত্তি কোরে জীবিকা নির্ব্বাহ কোচ্চে। বাপ মার সঙ্গে যখন এইরূপ সম্বন্ধ তখন অপর অপর কুটুম্বদের কথা অধিক বলিবার আবশ্যক নাই। স্ত্রীলােকের সম্মান ও রক্ষণাবেক্ষণ করিতে কি রকম হয় তাহা ইংরেজদের হিন্দুজাতির কাছে ভাল কোরে শেখা দরকার। কিন্তু উল্টাশ্রী দাঁড়িয়েছে। নব্য বাবু-সংস্কারকেরা বলেন যে আমাদের ঐ বিষয় ইংরেজের কাছে শেখা উচিত। ইংরেজের কাছে স্ত্রীলােকের আদর শিখিতে গিয়ে সংস্কারকেরা কি বিপদই যে ঘটাইয়াছেন তা অনেকেরই জানা আছে। স্ত্রীলােকের আদর বলিলে—ইংরেজের কাছে কেবল নিজের পত্নীর আদর বােঝায়—মা বোন ভাজ ভাইঝি বা অন্য কোন