পাতা:বিলাপ - অমৃতলাল বসু.pdf/১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিদ্যাসাগরের স্বর্গে আবাহন।
 

প্রসাদ পাইলেন, পুরোহিত অম্ররস ক্ষীর খদিক সংযোগে ফলাহার করিয়া একাদশী ব্রত পালনে পুণ্য সঞ্চয় করিলেন, আর একাদশবর্ষীয়া বিধবা বালিকা সেই জ্যৈষ্ঠের নিদাঘে জলবিন্দু জিহ্বায় না দিয়া ধর্ম্মরক্ষক ধর্ম্মোপদেষ্টদিগের আহার কালে তালবৃন্ত সঞ্চালন করিতে লাগিলেন, নিশা সমাগমে লালসা উদ্দীপনকারী বিলাসবেশে বিভূষিত হইয়া সঙ্গিনী সধবাগণ স্বামী সঙ্গে পালঙ্কে সুকোমল শয্যায় শয়ন করিলেন, আর রুক্ষ্মকেশ মলিনবেশা কৌমার-পতিহীনা বালা পার্শ্বস্থ কুটীরে কঠোর শয্যায় মৃদুহাস্য মিশ্রিত কঙ্কন ঝঞ্চন শুনিতে শুনিতে জাগিয়া যামিনী যাপন করিল! কি দৃষ্টান্ত দেখিয়া, কি উপদেশ পাইয়া, কি সঙ্গ গুণে, সে বয়ঃস্বভাব সুলভ মনোবৃত্তি দেহের আসক্তি নিবৃত্ত করিবে? উপদেষ্ট নাই, দৃষ্টান্ত নাই, সাধুসঙ্গ নাই, কাযেই আপনাকে সর্ব্বসুখে বঞ্চিত উৎপীড়িতা জ্ঞানে চক্ষু হ’তে অশ্রুজল প্রবাহিত করিতে লাগিল; বিদ্যাসাগরের হৃদয়ে সেই অশ্রুকণা মিশ্রিত হইয়া দয়ার সাগরে করুণার তরঙ্গ উথলিত করিল। তিনি যে ব্রত অবলম্বন করিয়া কার্যক্ষেত্রে প্রবিষ্ট হইয়াছিলেন, সে ব্রতের সমক্ষে সকল আপত্তি তিরোহিত হইত; সেই মহাব্রত—দয়া,—দান তার অনুষ্ঠান। বিদ্যাসাগরের প্রতি কার্য্যে দেখিবে দান বই আর কিছু নাই, যে দয়া ব্রতে ব্রতী হইয়া তিনি ভাষাকে জীবন দান, সাহিত্যকে সৌন্দর্য্যদান, অজ্ঞানকে জ্ঞানদান, শোকাতুরকে প্রবোধদান, ভয়ার্ত্তকে অভয় দান, নিরাশ্রয়কে আশ্রয়দান, ক্ষুধাতুরকে অন্নদান করিয়াছিলেন, সেই দয়াব্রতের অনুষ্ঠানেই পতিসঙ্গ-জ্ঞান-রহিত কুমারী বিধবার কাতর তাতে কাতর হইয়া তাহাদিগকে পতি