পাতা:বিলাপ - অমৃতলাল বসু.pdf/৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিদ্যাসাগরের স্বৰ্গে আবাহন।
১৩

স্মাত্রও অগ্রবর্ত্তী হইতে পারিলে আমরা তাঁহার যথার্থ সম্মান প্রদর্শন করিব। তবে লৌকিকতার অনুরোধে একান্তই যদি কোন দৰ্শন-চিহ্ন স্থাপন করিবার আবশ্যক হয়, তাহা হইলে আমার মতে বৈদেশিক চিত্রকর ভাস্করাদির উদর পরিপূর্ণ না করিয়া, যে মহাকার্য্যের জন্য তিনি ধন মন প্রাণ দান করিয়াছিলেন, সেইরূপ কোন কার্য্য করা উচিত; একটি অনাথাশ্রম স্থাপন, যেখানে অনন্যোপায় বালকগণ গ্রাসাচ্ছাদন ও বিদ্যাদান প্রাপ্ত হইয়া সংসারক্ষেত্রে প্রবেশ করতঃ যাবজ্জীবন সেই মহাপুরুষ বিদ্যাসাগরের নাম গান করিতে পারে, ইহাই বোধ হয় সর্ব্বতোভাবে প্রশংসনীয়।

নেপথ্যে। হরিবোল, হরিবোল, হরিবোল।

নাগরিকগণ। শেষ কার্য্য অবসান,—হরিবোল, হরিবোল, হরিবোল।

(একজন আত্মীয়েয় প্রবেশ।)

আত্মীয় হরিবোল হরিবোল হরিবোল; আর কি, সব শেষ হ’ল, খুব কাযে এসেছিলেম, খুব দেখলেম, ধীশক্তির আধার সেই প্রশান্ত ললাট, সেই করুণাপূর্ণ সহাস্য বদন, আজ হুতাশনে আহুতি দিলেম; যে স্নেহমাথা বাহুযুগল পর্ব্বতবাসী অসভ্য সাঁওতালদিগকেও সস্তানের ন্যায় আলিঙ্গন করিত, যে পদপ্রান্তে লুষ্ঠিত হইতে মন সতত লালায়িত হইত, সেই সকলই আজ বহ্নিমুখে ভস্মসাৎ করিলাম হা বিদ্যাসাগর, হা বিদ্যাসাগর যারে সকলে চায়, সেই চলে যায়, যে অনেকের আশ্রয়, কাল তারে আগেই নেয়, হা বিদ্যাসাগর, হা বিদ্যাসাগর।