পাতা:বিলাসী - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আসিবে, তখন ওইরূপ কোন একটা নরকে যাওয়ার প্রস্তাবে পিছাইয়া দাড়াইব না একমাত্ৰ বলিতে পারি। খড়ামশাই ষোল আনা বাগান দখল করিয়া অত্যন্ত বিজ্ঞের মত চারিদিকে বলিয়া বেড়াইতে লাগিলেন, ওর যদি না অপঘাত মৃত্যু হবে, তা হবে কার ? পুরুষমানুষ এমন একটা ছেড়ে দশটা করুক না, তাতে ত তেমন আসে-যায় না-না হয় একট, নিন্দাই হ’তো । কিন্তু হাতে ভাত খেয়ে মরতে গেলি কেন ? নিজে ম’লো, আমার পর্যন্ত মাথা ঠোঁট করে গেল । না পেলে একফোটা আগুন না পেলে একটা পিণ্ডি, না হ’লো একটা ভূজ্যি উচ্ছগু্য। গ্রামের লোক একবাক্যে বলিতে লাগিল, তাহাতে আর সন্দেহু কি ! অন্ন-পাপ ! বাপারে! এর কি আর প্রায়শ্চিত্ত আছে! বিলাসীর আত্মহত্যার ব্যাপারটাও অনেকের কাছে পরিহাসের বিষয় হইল। আমি প্রায়ই ভাবি, এ অপরাধ হয়ত ইহারা উভয়েই করিয়াছিল, কিন্তু মৃত্যুঞ্জয় তা পল্লীগ্রামেরই ছেলে, পাড়াগায়ের তেলে-জলেই ত মানুষ। তত্ত্ব এত বড় দুঃসাহসের কাজে প্ৰবৃত্ত করাইয়াছিল তাহাকে যে বস্তুটা, সেটা কেহ একবার চোখ মেলিয়া দেখিয়া পাইল না ? আমার মনে হয়, যে দেশের নর-নারীর মধ্যে পরস্পরের হৃদয় জয় করিয়া বিবাহ করিবার রীতি নাই, বরঞ্চ তাহা নিন্দার সামগ্ৰী, যে দেশের নর-নারী আশা করিবার সৌভাগ্য, আকাজক্ষা করিবার ভয়ঙ্কর আনন্দ হইতে চিরদিনের জন্য বঞ্চিত, যাহাদের জয়ের গর্ব, পরাজয়ের ব্যথা, কোনটাই জীবনে একটিবারও বহন করিতে হয় না, যাহাঁদের ভুল করিবার দুঃখ, আর ভুল না করিবার আত্মপ্রসাদ, কিছুরই বালাই নাই, যাহাঁদের প্রাচীন এবং বহুদৰ্শী বিজ্ঞ-সমাজ সর্বপ্রকারের হাঙ্গামা হইতে অত্যন্ত সাবধানে দেশের লোককে তফাত করিয়া, আজীবন কেবল ভালটি হইয়া থাকিবারই ব্যবস্থা করিয়া ર૩