পাতা:বিলাসী - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তেমনি শুষ্ক। কণ্ঠভরা তুলসীর মালা। দাড়ি-গোফ কামান, মুখখানার প্ৰতি চাহিলে মনে হয় না যে কোথাও ইহার লেশমাত্র রসকস আছে। ইক্ষু যেমন নিজের রস কলের পেষণে বাহির করিয়া দিয়া, অবশেষে নিজেই ইন্ধন হইয়া তাহাকে জ্বালাইয়া শুষ্ক করে, এ ব্যক্তি যেন তেমনি মানুষকে পুড়াইয়া শুষ্ক করিবার জন্যই নিজের সমস্ত মনুষ্যত্বকে নিঙড়াইয়া বিসর্জন দিয়া মহাজন হইয়া বসিয়া আছে। তাহার শুধু চেহারা দেখিয়াই অপূর্ব মনে মনে দমিয়া গেল। চণ্ডীমণ্ডপের উপর ঢালা বিছান। মাঝখানে একাদশী বিরাজ করিতেছে । তাহার সম্মুখে একটা কাঠের হাতবাক্স এবং একপাশে থাক-দেওয়া হিসাবের খাতপত্র । একজন বুদ্ধগোছের গোমস্ত খালিগায়ে পৈতার গোছা গলায় বুলাইয়া শ্লেটের উপর সুদের হিসাব করিতেছে এবং সম্মুখে, পাশ্বে, বারান্দায় খুটির আড়ালে নানা বয়সের নানা অবস্থার স্ত্রী-পুরুষ মানমুখে বসিয়া আছে। কেহ ঋণ গ্ৰহণ করিতে, কেহ সুন্দ দিতে, কেহ-বা শুধু সময় ভিক্ষা কবিতেই আসিয়াছে ; কিন্তু ঋণ পরিশোধের জন্য কেহ যে বসিয়াছিল, তাহা কাহারও মুখ দেখিয়া মনে হইল না । অকস্মাৎ কয়েকজন অপরিচিত ভদ্রসন্তান দেখিয়া বিস্ময়াপন্ন হইয়াi চাহিল । গোমস্ত শ্লেটখানা রাখিয়া দিয়া কহিল, কোথেকে আসচেন ? অপূৰ্ব কহিল, কালীদহ থেকে। মশায় আপনারা ? আমরা সবাই ব্ৰাহ্মণ । ব্ৰাহ্মণ শুনিয়া একাদশী সসন্ত্ৰমে উঠিয়া দাড়াইয়া ঘাড় বুকাইয়া প্ৰণাম করিল ; কহিল, বসতে আজ্ঞা হোক । সকলে উপবেশন করিলে একাদশী নিজেও বসিল । গোমস্ত প্রশ্ন করিল, আপনাদের কি প্রয়োজন ? অপূর্ব লাইব্রেরীর উপকারিতা-সম্বন্ধে সামান্য একটু ভূমিকা করিয়া চাদার কথা পাড়িতে গিয়া দেখিল, একাদশীর ঘাড় আর এক Š ዓ