লঙ্কা [ •8१ ] & লঙ্কণ করিতে এই ভয়ঙ্কর গহবর মধ্যে এক যোজন গমসের পর তাহার এক রমণীয় স্থান দেখিতে পাইল। সেই স্থানে নীল, বৈদূর্ঘ্য মণি ও পরিনী সকল পতঙ্গলে পরিবৃত রহিয়াছে, রঞ্জত ও কাঞ্চননিৰ্ম্মিত বিমানসকল শোভা পাইতেছে, মুক্তাজালে সমাবৃত সুবর্ণগবাক্ষ্যুক্ত হেম ও রজতনিৰ্ম্মিত গৃহসকল বিদ্যমান রহিয়াছে ( ইত্যাদি। ) তাছার অনতিদূরে একজন তপস্বিনীকে দেখিতে পাইল । এই তপস্বিনীর নিকট হইতেই সকলে জানিতে পারিল,— “ময়ে নাম মহাতেজ মায়াবী বানরর্ষভ | তেনেদং নিৰ্ম্মিতং সৰ্ব্বং মায়য়া কাঞ্চনং বনম্। পুরা দানবমুখ্যানাং বিশ্বকৰ্ম্ম বভুব হ । স তু বর্ষসহস্রাণি তপস্তপ্ত মহাবনে। পিতামহাদ্বরং লেভে সৰ্ব্বমেশনসং ধনম্। বিধায় সৰ্ব্বং বলবান সৰ্ব্বকামেশ্বরস্তদা । উবাস মুখিতং কালং কঞ্চিদস্মিন মহাবনে । তমপারসি হেমায়াং সক্তং দানবপুঙ্গবম্ ॥ বিক্রম্যৈবাশনিং গৃহ জঘানেশঃ পুরন্দর । ইদঞ্চ ব্রহ্মণ দত্তং হেমায়ে বনমুত্তমম্।” কিষ্কিন্ধ্যা ৫১ সঃ । ১০-১৫ শ্লো । মহাতেজ মায়াবী ময়দানব মায়াবলে এই কাঞ্চনময় বনভূমি নিৰ্ম্মাণ করিয়াছেন। তিনি পূৰ্ব্বে দানবদিগের বিশ্বকৰ্ম্ম ছিলেন। তিনি এই মহাবনে সহস্রবর্ষ তপস্যা করিয়া পিতামহ ব্ৰহ্মার নিকট হইতে বরস্বরূপ ঔশনস-রচিত সৰ্ব্বপ্রকার শিল্পশাস্ত্র লাভ করেন । এইরূপে তিনি সৰ্ব্বশক্তিসম্পন্ন ও স্বকৃষ্ট ভোগ্য বিষয়ের ভোক্ত হইয়া কিছুকাল সুখে এই বনে বাস করেন। সেই সময়ে হেমা নাম্নী অপসরাতে আসক্ত হওয়ায় দেবরাজ ইন্দ্র বজ্র দ্বারা তঁহাকে নিহত করিয়াছিলেন। তৎপরে ব্ৰহ্মা হেমাকে এই অনুত্তম বন প্রদান করেন । মহাবংশ নামক পালিগ্রন্থের মতে সিংহলদ্বীপের একটি বিভাগের নাম ময়। ধর্তমান আদমশৃঙ্গ বা শ্ৰীপাদশৈল ও তন্নিকটস্থ স্থান ময়রাজ্যের অন্তর্গত বলিয়া অনেকে অনুমান *Con I (Tennent's Ceylon, Vol. I. p. 337 n.) যদিও মহাবংশে সিংহল, নাগদ্বীপ ও তাম্প এক দ্বীপের পর্য্যায় বলিয়া উল্লিখিত হইয়াছে, কিন্তু এই বৌদ্ধমত্ত অনেকটা অসঙ্গত বলিয়া বোধ হয়। কারণ প্রথমেই মহাবংশপ্রণেতা সিংহল এই নাম লইয়াই গোল বাধাইয়াছেন। তিনি বলেন, পূৰ্ব্বে এই স্থানের নাম সিংহল ছিল না, বঙ্গরাজকুমার বিজয়সিংহ এই দ্বীপ জয় করিলে তাহারই নামানুসারে এই স্থানের নাম সিংহল হয়। কিন্তু সেই সময়ের অনেক পূৰ্ব্বে যে এই
.۔ یہ۔--
স্থানকে সিংহল বলিত, তাহা মহাভারতের অনেকস্থলেই উক্ত হইয়াছে। এ ছাড়া তাম্রপর্ণ (সিংহল) ও নাগদ্বীপ যে দুইটি স্বতন্ত্র, তাহা সকল পুরাণ পাঠেই জানা যায়। রাম কপিসৈন্ত সঙ্গে সাগরতীরে উপনীত হইবার পর নল ১•• যোজন পরিমিত সেতু নিৰ্ম্মাণ করিয়াছিল। ইহাতে জানা যাইতেছে, সেই সমুদ্রতীর হইতে লঙ্কার বেলাভূমি ১০• যৈাজন অর্থাৎ ৪ • • ক্রোশ । to কেহ কেহ বলেন, রামেশ্বরদ্বীপ হইতে সেতু আরম্ভ হইয়াছিল, এবং বর্তমান আদম্স ব্রিজকেই কেহ কেহ নলনিৰ্ম্মিত সেতু বলিয়া উল্লেখ করেন। কিন্তু উহা আধুনিক লোকদিগের কল্পনামাত্র। রামেশ্বর দ্বীপ হইতে নলসেতু হইতে পারে, কিন্তু বর্তমান আদমসব্রিজকে আমরা নলসেতুর নিদর্শন বলিতে প্রস্তুত নহি । যে সকল সঙ্কীর্ণ স্থান. সেই নলসেতুর প্রস্তরখণ্ড বলিয়া অনেকে মনে করেন, সে গুলি সমুদ্রস্রোতে গুপীকৃত বালি অথবা বেলেপাথর (Saudstoue ) মাত্র । ভূতত্ত্ববিদেরা পরীক্ষা করিয়া দেখিয়াছেন, ঐ থও সকল নিতান্ত আধুনিক সময়ে ss55 t (Ouden Nieuw Oost Indien, Ch, XW. P. 218. ) ইহার নিকটেই সমুদ্রের স্বচ্ছসলিল মধ্যে বিস্তর প্রবাল দেখা যায়। কালে প্রবালসমূহ ঐ খণ্ড সকলে মিলিত হইয়া দ্বীপাকারে পরিণত হইবে।—অনেকের মতে পূৰ্ব্বে সিংহলদ্বীপ ভারতবর্ষের সহিত মিলিত ছিল। বিশেষত: বর্তমান রামেশ্বর দ্বীপ হইতে সিংস্থলের বেলাভূমি ১• • যোজন নহে। খৃষ্টীয় ৫ম শতাদে, পালিগ্রন্থ মহাবংশ প্রথম রচিত হয়। ঐ মহাবংশের মতে সিংহলের অপর নাম লঙ্কা । কিন্তু ঐ সময়ে ( খুষ্ট্রের সপ্তম শতাব্দীতে ) প্রসিদ্ধ চীনপরিব্রাজক হিউএনসিয়াং সিংহল-দ্বীপে গমন করেন। তিনি সিংহল দ্বীপকে লঙ্কা বলেন নাই । তিনি লিখিয়া গিয়াছেন—“সিংহল দ্বীপের দক্ষিণ-পূৰ্ব্বে একটি পৰ্ব্বত আছে, ঐ পৰ্ব্বতকে লোকে লঙ্ক বলে । সেখানে যক্ষ প্রভৃতি বাস করে।” সুতরাং স্বীকার করিতে হইবে যে, হিউএন্সিয়াংএর সময়েও সিংহল-দ্বীপকে কেহ কেহ লঙ্কাদ্বীপ বলিত না । সিংহল-দ্বীপের সুদূর দক্ষিণ-পূৰ্ব্বে লঙ্কা নামে একটি সামান্ত পৰ্ব্বত থাকিলেও সমগ্ৰ সিংহলকে আমরা রামায়ণোক্ত লঙ্কা বলিতে পারি না । সি তলে লঙ্কাপাহাড় আছে শুনিয়াই কেহ যদি সিংহলকেই লঙ্কা বলিতে চান, তাহা হইলে অনেকে কাশ্মীরের অন্তর্গত লঙ্কা দ্বীপকে অনায়াসেই রাবণের লঙ্কা বলিতে পারেন।* কেবল একটি নামের মিল পাইলে প্রাচীন জনপদাদির অবস্থিতি নিরূপিত হইতে পারে - ... مهس----------حمح- ۔.ممتاس------------------------------------------
- J. A. 8. Leugal. Vol. XXXV. pt. i. p, iii,