লোঁহ প্রস্তুত-প্রণালী । বাণিজ্যাৰ্থ বাজারে ষে লৌহ দেখা যায়, তাহা হইতে ঐ প্রাকৃত লৌহ সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র। পাথুরে কয়লার একটা প্রকাও র প্রস্তুত করিয়া তাহাতে লৌহের খনিজ যৌগিকদিগকে সৰ্ব্বপ্রথমে দগ্ধ করিয়া লইলে লৌহকে মুক্তাবস্থায় আনয়ন করা যায়। এই প্রক্রিয়ায় জল, কাৰ্ব্বণিক্ আনহাইড্রাইড, ও গন্ধকাদি অকৃসিজেনকর্তৃক সালফার ডাইঅক্সাইড রূপে বহিগত হয় এবং লৌহ প্রায় ফেরিক অক্সাইড রূপে পরিবর্তিত হইয়া যায়। এই ফেরিক অক্সাইডের সহিত কয়লা, কিংবা কোক এবং লাইম্ ষ্টোন (কাৰ্ব্বশেট অব লাইম্) মিশ্রিত করিয়া प्लाटे ফার্ণের্স (Blast furnace) attos বিস্তীর্ণ চুলায় উত্তপ্ত করিলে লৌহ অকৃসিজেনবিহীন হইয়া আইসে। সুইডেন, রুসিয়া ও পূৰ্ব্ব ভারতীয় জনপদসমূহে এই প্রথায় লোঁহ গালাই হইয়া থাকে। নিয়ে লৌহ গলাইবার চুল্লী এবং লোঁহের পর্যায়িক পরিণতির বিষয় উদ্ভূত হইল : রাষ্ট, ফার্ণেস—ইষ্টক দ্বারা এই চূলা গঠিত হয়। ইহা প্রায় ৮• ফিট উচ্চ। উহার উদ্ধ এবং নিম্নদেশ মধ্যদেশপেক্ষা অল্প বিস্তীর্ণ। নিম্নদেশে বায়ু প্রবেশ করিবার জন্য নল এবং ধাতু গলিয়া বাহির হইবার নিমিত্ত ছিদ্র থাকে। চুল্লীর উদ্ধদেশ দিয়া উপরোক্ত ফেরিক অক্সাইডের মিশ্রণ প্রবেশ করাইয়া দিতে হয়। রাষ্ট ফার্ণে ব্যবহার করিবার তাৎপর্য এই যে, চুল্লীর নিম্নদেশস্থিত নলের দ্বারা যে বায়ু প্রবিষ্ট হয়, তদ্বারা কোক দগ্ধ হইয়া কাৰ্ব্বণিক আনহাইড্রাইড উৎপন্ন করে। ঐ বাষ্প যতই উৰ্দ্ধগামী হইতে থাকে, অঙ্গারের দ্বারা উহা ততই অকৃসিজেনবিহীন হইয়া কাৰ্ব্বণিক অক্সাইডে পরিণত হইয়া যায়। পরে এই কাৰ্ব্বণিক অক্সাইড, উত্তপ্ত ফেরিক্-অক্সাইডের অকৃসিজেন আকর্ষণ করিয়া লয়; তখন লৌহ মুক্ত হইয়া পড়ে। লৌহ যে সময় দ্রবীভূতাবস্থায় নিম্নদেশে সমাগত হয়, সে সময়ে উহা কিঞ্চিৎ অঙ্গারের সহিত মিলিত হইয়া থাকে। লাইম্ ষ্টোন ব্যবহার করিবার তাৎপৰ্য্য এই যে, ইহা উত্তপ্তাবস্থায় কাৰ্ব্বণিক আনহাইড্রাইড, বাষ্প বিবর্জিত হইয়া কালসিয়াম্ অক্সাইডে (চুণে) পরিণত হয় এবং এই অবস্থায় কঠিন কর্দমাদির সহিত সম্মিলিত হইয়া তরলাকারে লৌহের উপর ভাসিতে থাকে। ইহাকে সুাগ (Sing) কহে। চুল্লীর নিম্নদেশস্থিত ছিদ্রবিশেষ দিয়া ইহা বাহির হইয়া যায় এবং লৌহ অপর ছিদ্র দ্বারা বাহিরে আইসে। এই তরল লৌহ কঠিন হইলে তাহাকে কাষ্ট বা পিগ, ( Cast or pig ) বলে। ভারতের নানা স্থানে সাধারণতঃ ৩। ৪ ফিট, হইতে ২০ ফিট, পর্যন্ত উচ্চ ফার্ণেল দেখা যায়। কাষ্ট আয়রণে শতকরা ২ হইতে ৫ ভাগ অঙ্গার এবং XVII [ ৩৩৭ ]
- 電
লোঁহ সিলিকা, গন্ধক, ফফরাস, আলুমিনাম প্রভৃতি নানাবিধ ধাতু মিশ্রিত থাকে । লৌহকে বিশুদ্ধাবস্থায় পরিণত করিতে হইলে, উহাকে পুনৰ্ব্বার গলাইতে হয় এবং সেই সময়ে বায়ুর অকৃসিজেনের দ্বারা অন্তান্ত পদার্থের সহিত লৌহকে সম্মিলিত করিয়া, পরে উহাকে পিটিয়া যে অবস্থায় অনিয়ন করা যায়, তাহাকে রটু (Wrought) আয়রণ কহে । রট আয়রণে শতকরা ৮১৫ হইতে ০.৫ ভাগ অঙ্গার থাকে। যখন শতকরা ০৬ হইতে ২০ ভাগ অঙ্গার রাসায়নিক যোগে লৌহের সহিত অবস্থিতি করে, তখন তাহা ইস্পাত (Steel) নামে উল্লেখিত হইয়া থাকে। ইস্পাত প্রস্তুত করিতে হইলে রট আয়রণকে কয়লার অগ্নিতে দীর্ঘকাল উত্তপ্ত করিতে হয়। পরে লোহিতোষ্ণুপ্ত সেই লৌহখণ্ড শীতল জলে কিংবা তৈলে সহসা নিমজ্জিত করিলে অতিশয় কঠিন ইস্পাতে পরিণত হয়। ঐ ইস্পাত ভঙ্গুর এবং স্থিতিস্থাপক ধৰ্ম্মলাভ করিয়া থাকে। যে যে পদার্থ প্রস্তুত করিতে যে প্রকার ইস্পাত প্রয়োজন হয়, তাহাতে সেইরূপ পান দেওয়া আবশ্যক। ইস্পাতকে ২২১° সেণ্টি’র উত্তাপে উত্তপ্ত করিয়া ক্রমে ক্রমে শীতল করিলে অতিশয় কঠিন হয় এবং তস্থার ছুরি প্রভৃতি অস্ত্রাদি প্রস্তুত হইয়া থাকে। যদ্যপি ২৮৭° সেঃ পর্য্যন্ত উত্তপ্ত করিয়া শীতল করা যায়, তাহ হইলে ইহা অতিশয় স্থিতিস্থাপক ধৰ্ম্মলাভ করে। ইহার দ্বারা ঘড়ির প্রাং প্রভৃতি গঠিত হয়। বেপুর, সালেম, পালম্কোট্ট, পেণাতুর ও পুদুকোট্ট নামক স্থানে লোঁহের Q magnetic oxide যৌগিক পাওয়া যায়, ' পার্থিব পদার্থ হইতে বিযুক্ত *for Blast furnaco Woo, তাহা গলাইলে উৎকৃষ্ট লৌহ প্রস্তুত হয়, উহাতে শতকরা প্রায় ৭২ ভাগ লৌহ থাকে। উহা গন্ধক, আর্সেনিক, অথবা ফল্ফরাসবিবর্জিত। পানপাড়া ও হেনোর নামক স্থানের খনিজ লৌহই ইস্পাত প্রস্তুত কাৰ্য্যে বিশেষ প্রশস্ত। বেপুর লোহার কারখানায় ভারতীয় কাষ্ট-ষ্টীল (east-steel) প্রস্তুত করিতে যে প্রথা অবলম্বিত হইয়া থাকে, তাহাকে Bessemer-process Tzi i gÈTER 2"#fs off-sfē7 জনপদে প্রায় উহার অনুরূপ প্রথায়ই ইস্পাত প্রস্তুত হইয়া থাকে ; কিন্তু গ্রেট-বৃটেন রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে বিশেষতঃ সেফিল্ড নগরের সুপ্রসিদ্ধ লোহার কারখানায় যে উপায়ে ইস্পাত প্রস্তুত হয়, তাহা উপরোক্ত প্রণালী হইতে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র। সেফিল্ডের চুরী কঁচি (Cutlery) প্রস্তুত করিবার উপযোগী ইস্পাত নিৰ্ম্মাণপ্রণালী অতি সুকঠিন ও বহু ব্যয়সাধ্যবোধে এ দেশীয় লোহার কারখানাসমূহে পরিত্যক্ত হইয়াছে। তথায় “পিগ্আয়ত্নণ” প্রস্তুত করণার্থ একটা মালোড়ন বা প্রতিঘাতকারী