কাঁকশিয়ালী, কালা, কাঁসবাঁশ, কাপ্তাই, কর্করী, উত্তর ও দক্ষিণ কারো, কাশাই, কসালঙ্গ, কাশীগঞ্জ, কস্তুয়াখাড়ী, কট্কী, কট্না, কয়া, কেলো, কিউল, খয়রাবাদ, থান্বানদী, খারী, খড়িয়া, থরখাই, খর্শুয়া, খাট্সা, খোলপেটুয়া, খুদিয়া, কিমিরিয়া, উত্তর ও দক্ষিণ কোয়েল, কোহেরা, কোইনা, কুইয়া, কুকুই, কুল্টীগাঙ্গ, কুমারী, কুণুর, কুশভদ্রা, কৌশিকী বা কুশী, লাক্হাণ্ডাই, লক্ষ্মীয়া, লক্ষ্মীদোনা, লালবক্যা, লীলাজন, ছোট রণজিৎ, ছোট বলান্, লোক, লোরান্, মাদারি, মাতামুড়ি, মহোন, মহানন্দা, মাইপাড়া, মান, মনু, মরা-হিরণ, মেঘনা, মরানদী, মরা-তিস্তা, মর্জাতা বা কাজানদী, মরিচ্ছাপ-গাঙ্গ, মসান, মাতাভাঙ্গা বা হাউলী, মাতাই, মাথামুড়ী, মাতলা বা রায়মাতলা, ময়ূরাক্ষী, মেচী, মেন্দিখালী, মোহনী, মুহুরি, মুজনাই, মুরহর, মুড়িখালী, নাগর, নক্তি, নন্দাকুজা, নারদ, নরশিলা, নর্ত্তা, নেয়ুর, নীলকুমার, নূননদী, নুনা, পদ্মা, পাইকা, পণার, পঞ্চান, পাঁচপাড়া, পাণ্ডই, পাঙ্গাসী, পর্ব্বাণ, পসর, পাট্কি, পাত্রো, পটুয়াখালী, ফল্গু, ফেণী, ফুলঝুর, পিয়ালী, পীতানু, পিথ্রাগঞ্জ, প্রাচী, পুণ্পুন্, পূর্ণভবা (পুনর্ভবা), রায়ঢাক, রায়-মা, রাম্মান বা রম্মান, রামরায়কা, রঙ্খেওঙ্গ, রংগুন্, রণজিৎ, রারো, রাগদা, রড়ুয়া, রেহর, রোলী, রূপনারায়ণ, রূপসা, সালন্দী, শালী, শালিগ্রামী, (গণ্ডকাংশ), সন্দীপ, সঞ্জয়, সঙ্কোশ, সরস্বতী, সর্শুয়া, সাতখড়িয়া, সৌরা, শাহবাজপুর, শিয়ালভাঙ্গা, শিয়ালমারী, শিবসা, শিখরেণা, শিঙ্গা, সিংহরণ, সিঙ্গিয়া, সিংহীমারী, শোভনালী, সোণাই, সোণাখালী, শঙ্কুয়া, শ্রী, সুবর্ণরেখা, শুল্ক, শূরা, তলাবা, তালেশ্বর, তাম্লানদী, তঙ্গন, তের্লো, তিলেয়া, তিলাই, তিলসুগা, তিতাস, তুলসীগঙ্গা, তুণীনদী প্রভৃতি।
উপরোক্ত নদী বা তাহার শাখাসমূহ এবং তাহাদের সংযুক্ত খালগুলি বাঙ্গালার বিভিন্ন স্থানে বিস্তারিত থাকায় কৃষিক্ষেত্রাদিতে জলদানের যেরূপ সুবিধা ঘটিয়াছে, নৌকাযোগে পণ্যদ্রব্য লইয়া যাতায়াতেরও সেইরূপ সুযোগ আছে। দুঃখের বিষয়, প্রাকৃতিক পরিবর্ত্তনে নদীর গতি ভিন্নদিকে চালিত হওয়ায় অনেক নদীর প্রাচীন খাত প্রায় শুষ্ক হইয়া পড়িয়াছে। ঐ খাতগুলিতে বৰ্ষাঋতু ব্যতীত অন্য সময়ে অতি সামান্যই জল থাকে। এরূপ থাতগুলি মরাতিস্তা, বুড়ীগঙ্গা প্রভৃতি নামে পরিচিত। অপর কতকগুলিতে স্থানে স্থানে আদৌ জল থাকে না। ইহার উপর, নানাস্থানে রেলপথ বিস্তৃত হওয়ায় নদীবক্ষে সেতু নির্ম্মিত হইয়াছে। তাহাতে কোন কোন নদীর বেগ খর্ব্ব হইয়া পলিজাত চর দ্বারা উহার পরিসর ক্রমশঃ কম হইয়া পড়িয়াছে। অনেক মরা নদী ভরাট করিয়া তদুপরি লৌহবর্ত্ম বিস্তারিতনদী ব্যতীত স্থানে স্থানে কূপতড়াগাদি হইতে স্থানীয় জলাভাব বিদূরিত হইতেছে। সিংহভূম, মানভূম, হাজারিবাগ প্রভৃতি ছোট-নাগপুরের নানাস্থানে পার্ব্বতীয় ক্রমোচ্চ-নিম্ন ভূমিতে বাঁধ দিয়া জলরক্ষার ব্যবস্থা আছে। তথাকার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জলধারা ব্যতীত এই বাঁধগুলিই স্থানীয় লোকের বিশেষ উপকারী। উড়িষ্যার চিল্কাহ্রদ ব্যতীত বাঙ্গালার আর সেরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যপূর্ণ হ্রদ দৃষ্ট হয় না। উহার জল লবণাক্ত থাকায় সাধারণের নিকট ততদূর আদরণীয় নহে। কলিকাতার দক্ষিণস্থ বিস্তৃত “বাদা ভূমি” গবর্মেণ্টের তালিকায় “Salt lake” বলিয়া উক্ত আছে।
মুঙ্গের, রাজগৃহ, ভাগলপুর, সিংহভূম, বীরভূম প্রভৃতি নানা স্থানে নানা শীতল, লবণ ও উষ্ণ জলপূর্ণ প্রস্রবণ দেখিতে পাওয়া যায়। ঐ সকল স্থান বহু প্রাচীনকাল হইতেই তীর্থক্ষেত্ররূপে বিদিত হইয়া আসিতেছে। আকাশগঙ্গা, লবণাখ্যা, মোতিঝরণা, ঋষিকুণ্ড, সীতাকুণ্ড, সূর্য্যকুণ্ড প্রভৃতি নামে ঐ সকল প্রস্রবণতীর্থ বিদিত। ইহাদের বিশেষ বিবরণ জেলা প্রসঙ্গে লিখিত হইয়াছে। প্রস্রবণগুলি যে প্রাচীনত্বের পরিচায়ক, তাহা বাঙ্গালার ভূতত্ত্ব আলোচনা করিলে সহজেই উপলদ্ধি হইতে পারে।
ভূতত্ত্ব৷