বঙ্গদেশ (শুরুবংশ ) [ 88& বঙ্গদেশ (শুরবংশ ) পরগণা। বাদ জাতীয় ইতিহাস (ব্রাহ্মণৰাও) ১ম ভাগ মাংশ मईव । ]. গণের বিশেষ অনুরক্ত ভক্ত ছিল । তৎকালে গৌড়দেশের প্রতি গওগ্রামে বৌদ্ধ মঠ বা বিহার ছিল, অধিকাংশ স্থলে সপ্তপর্তী ব্রাহ্মণেরাই ঐ সকল মঠ বা বিহারের আচাৰ্য্য ছিলেন। গ্রামবাসী জনসাধারণ র্তাহাদের উপদেশেই কাৰ্য্য করিতেন। এই সকল আচার্যের বিনা অনুমতিতে তাহার কোন কাৰ্য্য করিতেই সমর্থ ছিল না । তাহাদের উপর সপ্তশতী বৌদ্ধাচার্য্যেরা আচল অটল প্রভুত্ব বিস্তার করিয়াছিলেন । এই সকল ব্রাহ্মণের মধ্যে অধিকাংশই বৌদ্ধতান্ত্রিকতার আচ্ছন্ন ও বিষয় সুখে কতকটা নিমগ্ন হইয়া পড়িয়াছিলেন। তবে আভিচারিক ও শাস্তিকার্য্যে বিশেষ পটু ছিলেন বলিয়া তাহাদিগকে উচ্চ নীচ সকলেই ভয় ভক্তি করিত। আদিশূরের অভু্যদয়ে রাজনৈতিক পরিবর্তন দেখিয় তাহারা বুঝিয়াছিলেন যে, তাহদের বর্তমান অবস্থা চিরদিন সমান থাকিবে না । তাহারা ব্রাহ্মণ সস্তান হইলেও বেদবিং ব্রাহ্মণগণের নিকট হেয় হইতেছেন। বিশেষতঃ তাহার বুধিয়াছিলেন যে, হিন্দুধর্মের অভু্যদয়ের সহিত যদি বৌদ্ধাধিকার লোপ হয়, তাহ হইলে হিন্দুসমাজে আর তাহদের স্থান হইবে না; আজ তাহারা যেরূপ জন সাধারণের উপর কর্তৃত্ব চালাইতেছেন, এই অসাধারণ প্রতিপত্তি জলবুদবুদ্ৰবং বিলীন হইবে । বিচক্ষণ রাজা আদিশূরও নবলব্ধ রাজ্যের সামাজিক অবস্থা দেখিয়া বুঝিয়াছিলেন যে, দেশের প্রাচীন ব্রাহ্মণবংশের প্রতি দেশের সাধারণ লোকের অচল অটল বিশ্বাস ও ভক্তি বৰ্ত্তমান । রাজশক্তি বৃদ্ধি করিতে হইলে সমাজশক্তি আয়ন্ত করা আবশুক । সপ্তশতী বি প্রগণ তৎকালে একরূপ সমাজশক্তির পরিচালক ছিলেন। তাই প্রথমেই মহারাজ আদিশূর সপ্তশতী ব্রাহ্মণদিগকে বহু শাসন গ্রাম দাম দ্বারা সন্মানিত করিয়া তাহাদিগকে স্বীয় রাজ্যপ্রতিষ্ঠার জন্ত আহবান করিয়াছিলেন । এই সংবৰ্দ্ধনার সময়েই সপ্তশতীয় গাঞিমালার উৎপত্তি হইয়াছিল। সপ্তশতী ব্রাহ্মণেরাও পরিণাম চিন্তা করিয়াই আদিশূরের আহবানে রাঢ়ের বীরপুত্রগণকে লইয়া গোঁড়াধিপের ছত্রতলে উপনীত হইয়াছিলেন। সেই জাতীয় অত্যুথান কালে, সেই অসাধ্য সংসাধনে কাশ্মীরপতি জয়াদিত্য গোঁড়াধিপ আদিশূরের মন্ত্রী ও প্রধান সেনাপতির কার্য্য করিয়াছিলেন । কছলণও লিথিয়াছেন, মহারাজ জয়াদিত্য গৌড়ের পাঁচ জন নৃপতিকে পরাজিত করিয়া শ্বশুর আদিশূরকে তাহদের অধীশ্বর করিয়াছিলেন। ঐ পাঁচ জন রাজার নাম জানা যায় না, ঐ পাঁচ জন সম্ভবতঃ হিরণ্যপৰ্ব্বত, চম্প, কজঘির, তাম্রলিপ্ত ও সমতট এই পঞ্চ প্রদেশের রাজা হইবেন ।
- এই সপ্তশতিক জনপদ এক্ষণে ধৰ্দ্ধমান জেলার অন্তর্গত “সাতশইকা"
משל: কায়স্থবীর জয়াদিত্য কল্যাণদেবীকে লইয়া সসৈন্তে মিলিত হইয়া কাশ্মীর-যাত্রাকালে পথে কনোজের সিংহাসন জয় করিয়া লইয়া যান। এ সময়ে মহারাজ যশোবর্ষদেবের মৃত্যু ঘটিয়াছে, তৎপুত্র চক্রায়ুধ আমরাজ জৈনধৰ্ম্ম গ্রহণপূর্বক সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হইয়াছেন। বৈদিক বিগ্রগণ রাজপুত্রের ধৰ্ম্মান্তর গুহ+ দর্শনে ব্যথিত হইয়া অনেকে শাসন ও সন্মান লাভের আশায় গৌড়রাঞ্জাশয়ে আসিয়া বাস করিতে লাগিলেন। এ সময়েও কনোজ হইতে বহু বেদবি সাগ্নিক বিপ্রের আগমন ঘটিয়াছিল এবং মহারাজ আদিশূর সপ্তশতী ব্রাহ্মণের সহিত কনেজীয় বিপ্রের বৈবাহিক সম্বন্ধ স্থাপন করিয়া সপ্তশতীদিগকে শূদ্রাপবাদ হইতে মুক্তিদান করিয়াছিলেন। তৎকালে অযোধ্যা, কান্তকুঞ্জ প্রভৃতি স্থান হইতেও কায়স্থগণ আদিশূরের সভায় আগমন করেন। তাছাদের আগমনের অতাল্প কাল পরেই আদিশূর জয়স্তের ইহলীলা শেষ হয়। এ সময়ে পুণ্ডবৰ্দ্ধনের সভায় গোলমাল দেখিয়া কতিপয় ব্রাহ্মণকায়স্থ উত্তররাঢ়ে আসিয়া উপস্থিত হইলেন। এ সময়ে রাঢ়ের সুপ্রাচীন রাজধানী কর্ণসুবর্ণ পরিত্যক্ত ও জঙ্গলাবৃত হইয়াছে ;–তৎকালে কর্ণসুবর্ণের নিকট সিংহেশ্বর নামক স্থানে আদিশূরের আত্নীয় আদিত্যশূর রাজত্ব করিতেছিলেন। সমাগত বিদেশীয় ব্রাহ্মণকায়স্কৃগণ তাহার আশ্রয়ে উচ্চ রাজকাৰ্য্যে নিযুক্ত হইয়া উত্তররাঢ়বাসী হইলেন এবং উত্তররাঢ়ে বাস হেতু সেই কায়স্থগণের বংশধরগণ উত্তররাষ্ট্ৰীয় বলিয়া খ্যাত হইলেন। যত দিন আদিশূর জীবিত ছিলেন, ততদিন কনোজগত বৈদিক ব্রাহ্মণগণ গৌড়মণ্ডলে বৈদিকধৰ্ম্মপ্রচারে সুযোগ ও সুবিধা পাইয়াছিলেন। তাহার জীবনাবসান কালে পশ্চিমোত্তর গৌড়ে ও মগধে বৌদ্ধ জন সাধারণ একত্র হইয়া বপ্যটের পুত্র গোপালকে অভিষিক্ত করিল এবং তঁহি দ্বারা পুনবায় বৌদ্ধপ্রাধান্তস্থাপনের আয়োজন চলিতে লাগিল, কিন্তু মগধপতি গোপাল বয়োবৃদ্ধ ও জ্ঞানবৃদ্ধ আদিশূরের প্রভাব খর্ব করিতে সমর্থ হন নাই। দীর্ঘকাল পঞ্চগৌড় শাসন করিয়া মহারাজ আদিশূর ইহলোক পরিত্যাগ করিলে তৎপুত্র ভূশুর পেও বৰ্দ্ধনের সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হইলেন। তিনি পিতার মত সাহসী, রাজনীতিকুশল ও শক্তিশালী ছিলেন না। তাহারই সময়ে মগধপতি , খালিমপুর হইতে আবিষ্কৃত ধৰ্ম্মপালের শিলালিপি। মুঙ্গের হইতে আবিষ্কৃত দেবপালের তাম্রশাসন হইতে জানা যায় যে, ধর্মপাল রাষ্ট্রকূটপতি ঐৰয়ড়ের কন রাদেবীর পাণিগ্রহণ করেন, তাহারই গর্তে তাঁহার প্রসিদ্ধ পুত্র দেবপালের জন্ম।