বয়নবিদ্যা রক্ষা করিতে ধীরে ধীরে এদেশের তত্ত্ববায় জাতির চিরপোষিত বস্ত্রবাণিজ্যের মূলে কুঠারাঘাত করা হইয়াছে, এখন হতাশ্বাস তস্তুবারকুল অার সেরূপ উদ্যমে কাৰ্য্য করিতে পারে না । প্রাচীন শিল্পিগণ ইহজগৎ হইতে অপস্থত, সুতরাং তাহাদের সঙ্গে সঙ্গে ভারতীয় বস্ত্রশিল্প একরূপ অবসাদ প্রাপ্ত হইয়াছে। এখন যাহারা বিশেষ চেষ্টা করিয়া সেই প্রাচীন শিল্পকীৰ্ত্তি বজায় রাখিতে যত্নবান আছেন, তাহারাও বৈদেশিক বস্ত্রের তুলনায় লাভের পরিবর্তে ক্ষতির অংশ বেশী দেখিয়া স্ব স্ব ব্যবসায়ে বীতশ্রদ্ধ হইয়া পড়িতেছেন। কাজে কাজেই পূৰ্ব্বাপেক্ষ। বস্ত্রশিল্পে অনেক দৈন্তত আসিয়া পড়িয়ছে, তবে এই শ্ৰীহীন বাণিজ্যেরও গৌরব করিবার এখনও অনেক আছে। বারাণসীর সুবিখ্যাত জরির ফিতা, সোণ বা রূপার তত্ত্বদ্বারা প্রস্তুত গুলবাহার সাট, জামদানী, কামদানী ও জগতের অতুলনীয় কিংখাপ বস্ত্র এখনও শিল্পচাতুৰ্য্যের পরাকাষ্ঠ জ্ঞাপন করিতেছে । ঐ সকল বস্ত্র প্রধানত: কার্পাস বা রেশমী স্থত্রের উপর জরির ফুলদিয়া বুনা হইয়া থাকে। বুর্হানপুর, মহিমুর, আর্কট, দিল্লী ও অরঙ্গাবাদ প্রভৃতি স্থানে এখনও তত্ত্বশিল্পের যথেষ্ট আদর ও বিস্তার দেখা যায়। মম্বাদি-লিখিত সেই সুপ্রাচীনযুগ হইতে আজ পর্য্যন্ত ভারতবাসী সকল বর্ণের রমণীদিগের মধ্যে চরকা কাটার প্রথা দেখা যায়। এখনও উপরিউক্ত স্থানসমূহে রমণীগণ চরকা কাটিয়া সরু স্থতা প্রস্তুত করিয়া থাকে । খৃষ্টীয় ১৯শ শতাব্দে ভারতে ইংলগুদি নানা পাশ্চাত্য ও প্রাচ্যদেশজাত দ্রব্যের আমদানী হওয়ায় দেশীয় চরকাদ্বারা স্থতা প্রস্তুত ও প্রচারের অনেক অবনতি ঘটিয়াছে, কিন্তু এখনও যে যে স্থলে রেশমীবস্ত্র প্রস্তুত হয়, তত্তৎস্থানে প্রভূত পরিমাণে চরকার প্রচলন আছে । বাঙ্গালার অন্তর্গত মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুর সদরে দেশী তাতে রেশমী গরদ বস্ত্র এবং মানভূম জেলার বযুনাথপুরে এখনও শুটা হইতে চরকার স্থত কাটিয়া তসর-বস্ত্র বুনা হইতেছে। বীরভূম, বাঁকুড়া প্রভৃতি স্থানেও গুটী হইতে স্বতা প্রস্তুত এবং বস্ত্রবয়নকার্য্যের যথেষ্ট প্রভাব বিদ্যমান আছে । এখন মাঞ্চেপ্পরের কলে নিৰ্ম্মিত কার্পাস স্বত্রের প্রভূত আমদানী হওয়ায় বাঙ্গালীর রমণীগণ চরকা কাটা বন্ধ করিয়াছেন। বিলাতী স্বত্তা দরে সন্তা ও অনায়াসলভ্য, এজন্য দেশীয় সভ্যবৃন্দ আর স্বকুলকামিনীকুলকে স্বতা কাটার কষ্ট সহ করিতে দেন না, বস্তুতঃ সেই বিলাসিতার প্রভাবে বাঙ্গালায় আজ চির দৈন্ত আলিয়া সমুপস্থিত । বঙ্গবাসীকে অঙ্গাচ্ছাদন-বাসের জন্ত আজ পরমুখাপেক্ষী হইতে হইয়াছে। উচ্চ শ্রেণীর শিক্ষিত ও লৌধীন বাঙ্গালীগণ কুলকামিনীদিগকে চরকা কাটার কষ্ট [ &0& J বয়নবিদ্যা इहेष्ठ अबाॉरुठि निद्रा श्राण ठाशरमब्र कॉफ़ेबांटनग्न अङांद ঘটাইয়াছেন। তন্তুবায়কুল স্বার্থহানি দেখিয়া জাতীয় ব্যবসায় জলাঞ্জলি দিয়াছে, তাহারাও বৃণা পরিশ্রম ও কষ্ট স্বীকার করিয়া স্বদেশবিরাণী বিদেশভক্ত বাঙ্গালীগণের অনুগ্রহলাভের প্রত্যাশা ৷ রাখে না, তাই দেশে এতকাল পরে বস্ত্রবয়নশিল্পের এরূপ অধঃপতন ঘটয়াছে। প্রকৃতই বলিতে কি, পূৰ্ব্বে যে শিল্পের জষ্ঠ সমগ্র ভারত, এমন কি, সমগ্র সভ্যজগৎ বাঙ্গালার চির আকাঙ্কিত যে বস্ত্রের জন্ত লালারিত হইত, সে বস্ত্র আজ বাঙ্গাল হইতে লুপ্ত হইয়াছে। তাহার পরিবর্বে এবং তাহারই অমুকরণে ইংরাজ-বণিকূ-সমিতির অনুগ্রহে আঙ্গ সাদা ও ডোরাদার ডুরিয়া, মলমল, অথবানি, সুইস, মান্ধি প্রভৃতি সেখীন জনমনোলোভ সুক্ষ্মবন্ত্ররাজি বাঙ্গালার প্রেরিত হইয়া বঙ্গবাসীর মুখোজ্জল করিতেছে। ঢাকার সেই সুবিখ্যাত মসলিন বস্ত্রের কথা মনে হইলে— বাঙ্গালার সেই গৌরবকীৰ্ত্তির ইতিহাস পাঠ করিলে মনে হয়, একদিন বাঙ্গালার তাতিকুল বস্ত্রবয়নশিল্পের শীর্ষস্থানে সমান্ধঢ় হইয়াছিল। খৃষ্টীয় ষোড়শ শতাদের মধ্যভাগে ইংরাজ-পর্য্যাটক রালফ ফিচ, সুবর্ণগ্রামে আসিয়া এখানকার কাপাস-বস্ত্র-বাণিজ্যের প্রভূত মুখ্যাতি করিয়া গিয়াছেন। তখনকার বঙ্গরাজধানী ঢাকা সহরে যে স্বল্প কাপাস বস্ত্র প্রস্তুত হইত তাহা “ঢাকাট মসলিন্” নামে পরিচিত। উহ। প্রকৃত মোগল নগরজাত মসলিন বস্ত্র হইতেও উৎকৃষ্ট। এখনও যুরোপের বিভিন্ন রাজ্যে তাহার অনু-, কৃত বস্ত্র প্রস্তুত হইয়া ভারতে প্রেরিত হইতেছে। প্রকৃত ঢাকাই মসলিন মহার্য ছিল, ধনী ব্যক্তি ভিন্ন কেহ উহা ক্রয় করিতে" পাইত না । শুনা যায় তুরস্কের সুলতান ঢাকাই মসলিনের শিরস্ত্রাণ ব্যবহার করিতেন । ঢাকার সূক্ষ্ম মসলিনের সুতা পর্যবেক্ষণ করিয়া পাশ্চাত্য পণ্ডিতম গুলী মানমিত প্রকাশ করিয়াছেন । সেই গুলি আলোচনা করিলে, আমরা সহজেই প্রাচীন বস্ত্রের ক্ষেতা ও তদানীন্তন কারিগরগণের কার্য্যনিপুণতার পরিচয় পাইতে পারি। মিঃ টেলর লিখিয়াছেন যে, ঢাকার কারিগরগণ বিশেষ যত্নে চরকা কাটিয়া যে সুষ্মতম স্থতা প্রস্তুত করিত, তাহাতে ৭॥০ছটাক ওজনের একফোঁট স্বত লম্বীভাবে ছড়াইয়া গেলে ১৫০ মাইল ছাড়াইয়া যাইতে পারে। স্বাভাবিক শৈত্য ও জলীয় বাষ্পপ্রধান স্থানে স্থত কাটলে কার্পাসের আঁশ নরম হওয়ায় শীঘ্র বাড়িয়া পড়ে বলিয়া ঢাকাই তাতির প্রাতে স্বৰ্য্যোদয়ের পূৰ্ব্বে তাহা সারিরা লয়। যখন বায়ু অপেক্ষাকৃত শুষ্ক হয়, তখন তাহারা চরকার নীচে জল রাখিয়া কাৰ্য্য করে। তাহাতে বায়ু জলসিক্ত হইয়া তুলার অংশকে নরম করিয়া দেয়। তৎপরে
পাতা:বিশ্বকোষ ঊনবিংশ খণ্ড.djvu/৫৩৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।