বরুণ [ ¢७७ ] বরুণর্তীর্থ নবমী তিথিতে সৰ্ব্বলোক একত্র হইয়া সপ্তদিনব্যাপী রামের মহোৎসব করিতে ছিলেন। এই সময় এক মহাদৈত্য তথায় উপস্থিত হইয়া রামমহোৎসবকারী লোকসমূহকে অতিশয় পীড়িত করিতে লাগিল। বরুণালয়বাসী লোকসমূহ দৈত্য কর্তৃক পীড়িত হইলে পরশুরাম তাহদের স্তবে তুষ্ট হইয়া তথায় উপস্থিত হইলেন এবং তাহাদিগকে সম্বোধন করিয়া কহিলেন, হে ব্ৰাহ্মণগণ ! তোমরা আমার মুখাবহ বাক্য শ্রবণ কর, তাহা হইলে তোমাদের দৈত্যপীড়া বিদূরিত হইবে। আমি দৈত্যদানব লাশের জন্ত বরুণ নিৰ্ম্মিত পুরীতে মহামায়াকে স্থাপন করিয়াছি, তোমরা সকলে তাহার শরণাগত হও, তাহ হইলে এই ভয় নষ্ট হইবে । তখন বরুণালয়বাসী বিপ্রগণ পবশুরামের আদেশানুসারে মহালসা নামে মহামায়ার শরণাগত হইয়া তাহার স্তব ও পুজাদি করিতে লাগিলেন । মহামায় ব্রাহ্মণদিগের স্তবে সস্তুষ্ট হইয়া তাহাদিগকে বলিলেন,হে বিপ্রগণ! তোমাদের ভয় নাই, আমি এই দৈত্যকে বিনাশ করিতেছি। এইরূপে তাহাদিগকে অভয় দিয়া তিনি ঐ দৈত্যের সহিত যুদ্ধে প্রবৃত্ত হইলেন । মহামায়া দৈত্যের সহিত ঘোরতর যুদ্ধ করিয়া তাহাব মস্তক কৰ্ত্তন এবং বামহস্তে গ্রহণ করিয়া নিজালয়ে গমন করিলেন । তখন দৈত্যভয় বিদূরিত হইল, দেবগণ আকাশে পুষ্পবৃষ্টি ও গন্ধৰ্ব্ব সকল গান করিতে লাগিল। নিৰ্ব্বিঘ্নে রামমহোৎসব শেষ হইল। সেই অবধি মাঘ মাসের শুক্ল ষষ্ঠী তিথিতে কামনা করিয়া ও ভক্তিপরায়ণ হইয়া যে সকল ব্যক্তি ত্ৰিভূবনেশ্বরী দেবী মহামায়াকে পূজা করে, দেবী তাহাদিগের 'অভিলাষ পুর্ণ করিয়া থাকেন। ( স্কন্দপু০ সহাদ্রিখ” বরুণাপুরীমাহাত্ম্য ১.২ অ: ) যে অন্তরীক্ষ দেখিয়া বৈদিকযুগের আর্য্যদিগের অস্তরে ঈশ্বরের অভিব্যক্তি প্রতিভাত হইয়াছিল, বেদে তিনিই বরুণদেব বলিয়া বর্ণিত। সেই অন্তরীক্ষপ্রখ্যাত দেবতাদিগের রাজ বরুণের সহিত গ্ৰীকপুরাণোক্ত উরেনাসের অনেক সোসাদৃপ্ত দেখা যায়। বৈদিক উপাখ্যানে দৌস কর্তৃক যেমন বরুণের পদচ্যুতি ও জলপতিরূপে নিয়োগের কথা আছে ; সেইরূপ গ্রীসের পুরাতবে জিউস কর্তৃক উরেনাসের পদচ্যুতি বিবৃত হইয়াছে। বরুণ বৃষ্টিদাতা এবং জলপৃহবিহারী, উরেনাসও সেই সেই কাৰ্য্যের অধিপতি । কিন্তু বস্তুতঃই মেনা ও অশ্বিনী এবং অল্প ও বরণের সহিত অন্তান্ত বিষয়ে অনেক প্রভেদ দেখা যায়। বরং জলাধিকারিত্বে নেপচুনের সহিত বরুণের বিশেষ মিল আছে । [ নেপচুন দেথ। ] ৩ স্বনামখ্যাত বৃক্ষবিশেষ। পৰ্য্যায়—বরুণ, সেতু, তিক্তশাক, কুমারক, অশ্বরীয়, সেতুক, বরাণ, শিথিমগুন, শ্বেতবৃক্ষ, খেতক্রম, সাধুবৃক্ষ, তমাল, মারুতাপহ। ইহার গুণ-কটু, উষ্ণ, রক্তদোষ ও শীতীবাতহর, স্নিগ্ধ, দীপন, এবং বিদ্রধিরোগয় । ( রাজনি• ) ভাবপ্রকাশ মতে— “বরুণঃ পিত্তলো ভেদী শ্লেষ্মকৃচ্ছশ্বিমাবৃতান। নিহস্তি গুল্মবাতাশ্র-কৃমাংশ্চোষ্ণোহগ্নিদীপন: । ক্যায়ে মধুস্তিক্তঃ কটুকে রূক্ষকে গুরু ॥" (ভাবপ্র ) রাজবল্লভমতে ইহার গুণ,—বায়ু ও শুলহর, ভেদক, উষ্ণ, ও অশ্মীনাশক । বরুণের পুষ্পগুণ-পিত্তন্ত্র ও আমবাতহর । ( রাজবল্লভ ) ৩ জল ( মেদিনী )। ৪ স্বৰ্য্য। ( বিশ্ব ) “ধাতামিত্ৰোহৰ্ষ্যমা শক্রো বরুণস্বংশ এব চ | ভগোবিবস্বান পু্যা চ সবিতা দশমস্তথা ॥” (মহাভা”১৬৫/১৫) ৫ মুনিগর্ভজাত কগুপপুত্র-বিশেষ । ( ভারত ১৬৫৪৩) zosa (*i; ) of (Cataeva Roxburghii) বরুণগুড়, ঔষধবিশেষ। (চিকিৎসাসার ১০৬ ) বরুণগৃহীত (ত্রি) ১ বরণ কর্তৃক আক্রান্ত। ২ উদী প্রভৃতি রোগগ্ৰস্ত । বরুণগ্রস্ত (ত্রি ) বরুণপ্রাপ্ত । জলনিমগ্ন । বরুণগ্রহ (পুং ) অশ্বের তন্নামক ইষ্ট গ্রহ বিশেষ। অশ্ব এই গ্রহাবিষ্ট হইলে তালু, জিহবা, নেত্র, বৃষণ ও মেঢ়, কৃষ্ণবর্ণ গাত্রের গুরুতা ও স্বেদ নির্গম হইয়া থাকে। ইহার লক্ষণ “তালুজিছো চ নেত্রে চ বৃষণে মেঢ় মেব চ। গু্যাবং রূপঞ্চ যন্ত স্তাদগাত্ৰগৌরবমেব চ। তন্ত স্বেদপরীতস্ত বুদ্ধিমান বরুণগ্রহৈঃ। কৃতং দোষং মহাঘোরং স্তব্ধাঙ্গস্ত বিনির্দিশেৎ ॥” (জয়দত্ত ৫৭ অধ্যায় ) বরুণগ্রাম, একট প্রাচীন গ্রাম। ( ভবিষ্যত্রহ্মখ ৫৭২৫৯ ) বরুণগ্রাহ (পুং ) বরুণ কর্তৃক আক্রমণ বা বন্ধন । ( তেত্তিরীয়স ৬৬৷৫৪ ) বরুণদ্ভূতম, অশ্বরীর একটা ঔষধ। স্বত ৪ সেব, কথার্থ কুটিত বরুণছাল ১২০ সের, জল ৬৪ সের শেষ ১৬ সের। কন্ধাৰ্থ বরুণমূলের ছাল, কদলীমূল, নিম্ব মূলের ছাল, কুশাদি পঞ্চতৃণের মূল, গুলঞ্চ, শিলাজতু, কাকড় বীজ, দূৰ্ব্বা, তিলনালের ক্ষার, পলাশ ক্ষার, যুইমূল প্রত্যেক ২ তোলা । স্থল বিবেচনা করিয়া মাত্রা স্থির করিবে। জীর্ণ হইলে প্রথমতঃ পুরাতন সংযুক্ত দধির মাত সেবনীয়। ইহাতে অশ্বরী, শর্করা ও মূত্ৰকৃচ্ছ নিবারিত হয়। বরুণতীর্থ ( ক্লী) তীর্থভেদ। কালিকাপুরাণে এই তীর্থপ্রসঙ্গে লিখিত আছে যে, দর্পটনদের পূর্বদিকে অগ্নিমান পৰ্ব্বত। তাহার সন্মুখভাগে কংসকর পর্বততটে বরুণকুও নামক পবিত্র সরোবর। এখানে জলাধিপ বরুণ নিত্য বাস করেন। কংসকর
পাতা:বিশ্বকোষ ঊনবিংশ খণ্ড.djvu/৫৬৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।