বর্ণলিপি শব্দশাস্ত্রের যেরূপ অপূৰ্ব্ব উৎকর্ষ সাধন করিয়া গিয়াছেন এবং | স্বর-তানের যেরূপ সুক্ষ্ম পার্থক্য জানিতে পারিয়াছিলেন, । তাহাতে অক্ষরের উদ্ভাবন একান্ত আবশ্বক হইয়াছিল। এ | } { ছাড়া তাহারা অঙ্কশাস্ত্রের চিহ্নগঠনে যে অসাধারণ প্রতিভা ; দেপাইয়া গিয়াছেন, তাহা ও অনন্তসাধারণ। প্রত্নতত্ত্ববিৎ কানিংহাম বলেন যে, ভারতবাসীর অক্ষর মিশর দেশের চিত্রলিপির স্থায় একই উপায়ে স্বাধীনভাবে গঠিত হইয়ছে। যেমন খননযন্ত্র হইতে অশোকলিপির খ, যব হইতে অস্তঃস্থ ষ, দস্তু হইতে দ, পাপিতল হইতে প, বীণা হইতে ব, লাঙ্গল হইতে ল, হস্ত হইতে হ, শ্রবণেন্ধিয় হইতে শ। ইত্যাদি । ইহার পর কেনেডি সাহেব প্রকাশ করেন যে, ৭ • • খৃঃ পূঃ হইতে ৩.০ খৃঃ পূৰ্ব্বাঙ্গ পর্যন্ত বাবিলনের সহিত দক্ষিণভারতের বাণিজ্য চলিয়াছিল । ফিনিক জাতিই সৰ্ব্বপ্রথম ভারতের সহিত বাণিজ্যকর্য্যে লিপ্ত হন। সেই সময়েই ভারতীয় লিপির উৎপত্তি ঘটে । উভয় পক্ষেব মতামত আলোচনা করিয়া প্রসিদ্ধ সংস্কৃতশাস্ত্ৰবিং ডাক্তার বুচ লর, ১৮৯৮ খৃষ্টাব্দে এইরূপ প্রকাশ কবেন— কানিংহাম যে ভারতীয় চিত্রলিপির উৎপত্ত্বি স্বীকার করিয়াছেন, তাহা অসমীচীন। দক্ষিণাতো টিপোলু হইতে যে লিপি বাহির হইয়াছে, তাহার পর্যবেক্ষণ করিলে কখনই চিত্রলিপির সহিত সামঞ্জস্ত করা যাইতে পাবে না । বুহ লব নিজমত সমর্থন করিবার জন্ত প্রকাশ করেন,— খৃষ্টপূৰ্ব্ব ৮৯০ অব্দে উৎকীর্ণ মেসার পাহাড়ে যে প্রাচীনতম সেমিটক অক্ষরেব ধ্বস্তাত্মক ( Phonetic ) লিপি দৃষ্ট হয়, তাহার সহিত ব্রাহ্মীলিপির বহু অক্ষরের অনেকটা সামঞ্জস্ত রহিয়াছে, তন্মধ্যে হ এবং ত এই ছুইটী আবার দক্ষিণ মেসোপেটেমিয়ার খৃষ্টপূর্ব ৮ম শতাব্দীর মধ্যভাগের হে এবং তউ এই দুই ফিনিক অক্ষর হইতে বাহির হইয়াছে। এইরূপে শ এবং য এই অক্ষরও খুষ্টপূৰ্ব্ব ৬ষ্ঠ শতাব্দীর অরনীয় অক্ষর হইতে পাওয়া যায়। অবশ্ব ইহাও স্বীকার করিতে হইবে যে, সাহিত্যিক ও লিপিশাস্ত্রীর প্রমাণে ৬০০ ও ৫ • • খৃষ্টপূৰ্ব্বাদের মধ্যে যে সকল অরমীয় লিপি আবিষ্কৃত হইয়াছে, তাহা হইতে ব্রাহ্মীলিপির উৎপত্তি হইতে পারে না, এরূপ অনেকেই মত প্রকাশ করিয়াছেন বটে, কিন্তু ভারতক্ষেত্রে প্রাচীন মরমীয় লিপির অনুরূপে আধুনিক স, ষ শ অক্ষর গঠিত হইয়াছে, তাহ বেশ বুঝা যায়। [ ઉન્મ: ৮৯. ও ৭৫০ খৃষ্টপূৰ্ব্বাদের মধ্যেই ভারতে সেমিটক বর্ণমালা প্রবেশ লাভ করিয়া থাকিবে। বৌদ্ধদিগের বাবেকজাতক পাঠে ছানা যায় যে, বাবেরু ( Babylon ) হইতে ভারতে বাণিজ্য চলিয়ছিল। খৃষ্টীয় প্রথম শতাব্দ পর্যন্ত পশ্চিমভারতে ভরুকচ্ছ XVII ›ፀቁ } বর্ণলিপি ( ভরোচ) ও সুপারক ( স্থপারা ) নামক স্থান সমুদ্র-বাণিজ্যের কেন্দ্র বলিয়া পরিগণিত ছিল। বৌধায়ন ও গেীতমধৰ্ম্মস্থত্রেও যাত্রীর উপর শুষ্ক আদায়ের ব্যবস্থা দেখা যায়। ঋগ্বেদেও সমুদ্রযাত্রার উল্লেখ আছে । সিরীয় বণিকৃগণ বহু পূৰ্ব্বকাল হইতেই পারস্তোপসাগর দিয়া ভারতে বাণিজ্য করিতে আসিত । এই . রূপে খৃষ্টজন্মের প্রায় ৮• • বর্ষ পূৰ্ব্বে অর্থাৎ প্রায় ২৭: বর্ষ ੋਲ চলিল ফিনিকীয় ( Phoenician ) বণিকৃদিগের যত্বেই ভারতে সেমিটক লিপি আসিয়াছে এবং ক্রমশঃ তাহাই যুক্তস্বরবর্ণ সহ পরিপুষ্ট লাভ করিয়া খৃষ্টীয় ৫ম শতাব্দে সৰ্ব্বাঙ্গসুন্দর ভারতীয় লিপিতে পরিণত হইয়াছে। ডাক্তার বুহ লয় যে মত প্রকাশ করিয়াছেন, তাহাই এক্ষণে পাশ্চাত্য প্রত্নতত্ত্ববিদ ও ঐতিহাসিকগণ সমীচীন বলিয়া গ্রহণ করিয়া থাকেন। কিন্তু আমরা যতদূর আলোচনা করিয়াছি তাহাতে বুধিয়াছি, যে যে প্রমাণ ও যুক্তিবলে প্রসিদ্ধ জৰ্ম্মণপণ্ডিত ফিনিকলিপি হইতে ভারতীয় বর্ণমালার সৃষ্টি স্বীকার করিয়াছেন, তাহা সমীচীন বলিয়া গৃহীত হইতে পারে না। কারণ ফিনিক বর্ণমালা এত অসম্পূর্ণ ও এত অল্প সংখ্যক যে, তদ্বারা ভারতীয় শাস্ত্রসমূহের উচ্চারণপ্রক্রিয়া বা লিখনপ্রণালী কিছুতেই সিদ্ধ হইতে পারে না। তিনি যে যে লিপির সহিত ব্রাহ্মী লিপির তুলনা দেখাইয়াছেন, তাহাও আমাদের বিবেচনায় ঠিক নহে। উভয় প্রকার লিপি পাশা পাশি রাখিলে আকাশ পাতাল প্রভেদ লক্ষিত হয়। বিশেষতঃ ভারতবর্ষীয় ৪৮টা বর্ণমালার মধ্যে দুষ্ট একটর সামঞ্জস্ত দেখিয়া সকল গুলিকে ফিনিক-বর্ণমালার সন্ততি বলিয়া কোনক্রমে গ্রহণ কবা যায় না । এ সম্বন্ধে আমাদের যুক্তি ও প্রমাণ পরে লিপিবদ্ধ হইতেছে। বৈদিক বর্ণমালার উৎপত্তিকাল । অতীত ইতিহাস ঘোষণা করিতেছে যে বহু সহস্র বর্ষ, এমন কি হিমপ্রলয়ের পূৰ্ব্ব হইতেই আৰ্যসভ্যতাব মুবীজ অঙ্কুরিত হয়। যখন হিমালয় ভূগর্ত হইতে মস্তকোত্তোলন করে নাই, যখন সমুচ্চ আলপশৈল একটা নতু্যচ্চ পৰ্ব্বতরূপে উঠতেছিল, যখন বর্তমান এসিয়া ও আফ্রিকা মহাদেশ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দ্বীপসমষ্টির আধার ছিল, ভূতত্ত্ববিদ্যা আমাদিগকে জানাইয়া দিতেছে, সেই সুদূৰ অতীত যুগে পশ্চিমে উত্তর স্বনানাভ হইতে পূৰ্ব্বে উত্তর আমেরিকা পৰ্য্যন্ত আৰ্য্যঞ্জাতির প্রত্নেীক বা আদি জন্মভূমি সুবিস্তৃত ছিল। আজ যে স্থান চির তুষারময় বলিয়া মুৰী মানবের কষ্টদায়ক ও অসহ এবং উপাদেয় ফলমূলতৃক্ষাদি উৎপাদনের সম্পূর্ণ অনুপযুক্ত বলিয়া গণ্য হইতেছে, সেই উত্তরমহাদেশই এক সময় আৰ্য্যদেবগণের নন্দনকানন বলিয়া গণ্য ছিল। যতদিন হিমগ্ৰলয় ঘটে নাই, যতদিন তুষারসম্পাতে আর্য
পাতা:বিশ্বকোষ ঊনবিংশ খণ্ড.djvu/৫৮৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।