পাতা:বিশ্বকোষ ঊনবিংশ খণ্ড.djvu/৬২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৰ্দ্ধমান ঐক্ষেত্রধামে গমন করিয়া প্রত্যাগমনকালে, বৰ্দ্ধমানের সন্নিকটে | রাইপুর গ্রামে ব্যবসা উপলক্ষে বাস করেন। এই স্থান হইতে । শপ্তাদি ক্রয় করিয়া, স্থানাস্তরে বিক্রয় করাই তাহার ব্যবসায় ছিল। ক্রমে তাহার ব্যবসায় বিলক্ষণ উন্নতি হইতে লাগিল। : সঙ্গম রায়ের মৃত্যুর পর, তদীয় পুত্র বন্ধুবিহারী রায়ও রাই | পুরে অবস্থিতি করিয়া পিতার স্তায় ব্যবসা করিতে লাগিলেন । এবং সৌভাগ্যবশতঃ ক্রমেই ব্যবসায়ের উন্নতি হইতে লাগিল। বন্ধুবিহার রায়ের মৃত্যুর পর তীয় পুত্র আবু রায় রাইপুর। হইতে আসিয়া বৰ্দ্ধমানে বাস করেন। তিনি এতদেশ মধ্যে : একজন বিখ্যাত ব্যবসায়ী ছিলেন। কোন সময়ে দিল্লীশ্বরের | কতকগুলি সৈন্ত এই স্থানে আসিলে আবু রায় তাহাদিগের জন্ত যাবতীয় আহারীয় সামগ্রী ও গোশকটাদি সংগ্ৰহ করিয়া দেওয়ায় | উক্ত সৈন্তাধ্যক্ষের অনুগ্রহে, ১০৬৪ হিজরি ইং ১৬৫৭ খৃঃ অব্দে বদ্ধমানের ফৌজদারের অধীনে, রেকবি বাজার, ইব্রাহিমপুর । ও মোগলটুলীর কোতোয়াল ও চৌধুরী পদ প্রাপ্ত হয়েন। । এতকালে উক্ত স্থানত্রয়ের বার্ষিক রাজস্ব ৫৩২ টাকা মাত্র ধাৰ্য্য ছিল। সুবিশাল সমৃদ্ধিশালী বদ্ধমান রাজ্যের ইহাই সূত্রপাত । আবু রায়ের মৃত্যুর পর তদীয় পুত্র বাবু রায় পৈতৃক পদ ও সম্পত্তির অধিকারী হয়েন। ক্রমে তিনিও বদ্ধমান পরগণার অন্তর্গত আরও কয়েকটি স্থান প্রাপ্ত হইয়াছিলেন। বাবু রায়ের মৃত্যুর পর তদীয় পুত্র ঘনাম রায় পৈতৃক পদ ও সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হয়েন । বৰ্দ্ধমানের সুপ্রসিদ্ধ শুমসাগর নামক সুবিশাল সরোবর ধনপ্তাম রায়েরই অতুল কীৰ্ত্তি। ঘনশুমে রায়ের মৃত্যুর পর তদীয় পুত্র কৃষ্ণরাম রায় পৈতৃক পদ ও সম্পত্তি লাভ করেন। ১৬৯৪ খৃঃ ( ১১০৭ হিজরি ) ২৪ রবিরল আয়ল তারিখে দিল্লীশ্বর অরঙ্গজেব বাদসাহের রাজত্বের ৩৮ বর্ষে ( জুলুস) তাহার নিকট হইতে চাকলে বদ্ধমানের জমিদার ও চৌধুরপদের সনদ প্রাপ্ত হয়েন । এই ফরমাণে তিনি অনেকগুলি জমিদারি প্রাপ্ত হইয়াছিলেন ; তন্মধ্যে সেনপাহাড়িগড় বিশেষ উল্লেখযোগ্য। এখনও উক্ত কৃষ্ণরাম রায়ের প্রপৌত্র মহারাজাধিরাজ তিলকচন্দ্র বাহাদুরের বাজত্বকালেও উক্ত দুর্গ পূর্ণাবয়বে বর্তমান ছিল। - কৃষ্ণরাম রায়ের জীবিতকালে, বরদা ও চিতুয়ার জমিদা শোভাসিংহ; বিষ্ণুপুরের জমিদার গোপালসিংহ এবং চন্দ্রকোণার बमिनात्र द्रषूनाष निश् बािजाशे रहेब यदग अठाप्* cनार्थगসম্রাটের বিরুদ্ধে অস্ত্ৰধারণ করিয়া মুর্শিদাবাদ, বীরভূম ও বদ্ধমান আক্রমণ করেন। শোভাসিংহ বদ্ধমান আক্রমণ করির কৃষ্ণরাম { لاو وان ] রায়ের সহিত যুদ্ধ করেন এবং সেই সমরে কৃষ্ণরাম রায় হত বৰ্দ্ধমান হন, শোভাসিংহ কৃষ্ণরাম রায়ের পুরী আক্রমণ করিলে, তদীয় পরিবারস্থ ১৩ জন স্ত্রীলোক জহরপানে প্রাণত্যাগ করেন। কৃষ্ণরাম রায়ের কন্যা শোভাসিংহের হস্তে ধৃত হইলে, শোভাসিংহ তাহাকে স্বীয় অঙ্কশায়িনী করিবার অভিপ্রায়ে, যখন বাহুদ্বর মধ্যে ধারণ করিতে যাইবে, সেই সময়ে বীরবালা তীয় অঙ্গবন্ত্র মধ্য হইতে শাণিত ছুরিক বাছির করিয়া পাপাচার শোভাসিংহের উদর মধ্যে সবেগে প্রবেশ করাইয়া দিয়া তাহার পাপময় জীবনের অবসান করিয়া দিলেন এবং সেই চুরিকাঘাতে তৎক্ষণাৎ স্বীয় জীবনও বিসর্জন করিলেন । কৃষ্ণরাম রায়ের শোচনীয় মৃত্যুর পর তদীয় পুত্র জগৎরাম রায়, পৈতৃক পদ ও সম্পত্তি লাভ করেন। ১১১১ হিজরি এই জমাদিয়ল আউয়ল ও দিল্লীশ্বরের ৪৩ বর্ষ রাজ্যকালে (জুলুস) জগৎরাম রায় দিল্লীশ্বর অরঙ্গজেব বাদশাহের নিকট হইতে ৫• মহল জমিদারী এবং জমিদার ও চৌধুরী উপাধি সম্বলিত এক খানি ফরমাণ প্রাপ্ত হন। তাহার স্ত্রীর নাম ব্রজকিশোরী, তদীয় গর্ভে কাৰ্ত্তিচন্দ্র ও মিত্ৰসেন নামে দুইটি পুত্র জন্ম গ্রহণ করেন। ১৭৯২ খৃঃ কৃষ্ণসাগর সরোবরে স্নান করিবার সময়ে জনৈক গুপ্তহত্যাকারীর ছুরিকাঘাতে তাহার প্রাণবিয়োগ হয়। তদবধি রাজপরিবারস্থ কেহই অপবিত্রবোধে কৃষ্ণসাগরের জল পান বা তাহাতে স্নান করেন না । বৰ্দ্ধমান-রাজবংশের যে সকল অতুল কীৰ্ত্তি চতুর্দিক সমুজ্জ্বল করিয়া আছে, তাহার অধিকাংশই কীৰ্ত্তিমতী ব্রজকিশোবীং স্থাপন করেন । বৰ্দ্ধমানের সাগরসম সুবিখ্যাত কৃষ্ণসাগরই কৃষ্ণরাম রায়ের অতুলকীৰ্ত্তি। জগৎরাম রায়ের শোচনীয় মৃত্যুর পর তদীয় জ্যেষ্ঠপুত্র কীৰ্ত্তিচন্দ্র পিতার পদ ও সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হইলেন, তদীয় ভ্রাতা মিত্ৰসেন মাসিক বৃত্তি প্রাপ্ত হইতেন। ১১১৫ হিজরি ২০এ সওয়াল ৪৮ জুলুস দিল্লীশ্বর অরঙ্গজেব বাদশাহের নিকট হতে কীৰ্ত্তিচন্দ্র পৈতৃকপদ ও সম্পত্তিপ্রাপ্তির ফরমাণ লাভ করেন । তিনি স্বীয় বাহুবলে, বরদা ও চিতুয়ার জমিদার শোভাসিংহের ভ্রাতা হিন্মত সিংহকে পরাজয় করিয়া তদীয় জমিদারী অধিকার করেন। চন্দ্রকোণার জমিদার রঘুনাথ সিংহ, শোভাসিংহের সহিত মিলিত হইয়া বদ্ধমান আক্রমণ করিয়াছিলেন বণিয়া কীৰ্ত্তিচন্দ্র রঘুনাথ সিংহকে পরাস্ত করিয়া তীয় জমিদারী চন্দ্রকোণা অধিকার করেন, পরে তিনি বিষ্ণুপুরের জমিদার গোপালসিংহকেও যুদ্ধে পরাস্ত করেন বটে, কিন্তু তিনি তাহার কোন সম্পত্তি লইতে পারেন নাই, কেবল তাহার তরবারিখানি লইয়াছিলেন। হুরস্কট, রাবদা ও বেলঘরের জমিদারদিগকে পরাস্ত করিয়া তাহাদিগের জমিদারী হস্তগত করিয়াছিলেন।