পাতা:বিশ্বকোষ ঊনবিংশ খণ্ড.djvu/৬৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৰ্দ্ধমান { ৬৩২ ] বৰ্দ্ধমান কীৰ্ত্তিচন্দ্র দিল্লীশ্বর আবুল ফতে নসরুদ্দীন মহম্মদ শাহের নিকট হইতে ১৫ রমজান ১৭ জুলুস তারিখে একখানি ফরমাণ প্রাপ্ত হন। তাহাতে উক্ত বিজিত সম্পত্তি ও ফতাহপুর পরগণার অধিকার প্রদত্ত হইয়াছিল । কীৰ্ত্তিচন্দ্র অত্যন্ত সমরকুশল ছিলেন, তিনি বঙ্গের নবাব বাহাইরের অমুমতানুসারে বিষ্ণুপুরের রাজার সহিত মিলিত হইয়া কাটােয়ার নিকট হইতে দুৰ্দ্দান্ত মরাঠাদিগকে বিতাড়িত করিয়াছিলেন। কীৰ্ত্তিচন্দ্র বাদশাহের নিকট হইতে রাজা উপাধি প্রাপ্ত না হইলেও দেশমধ্যে তিনি মহারাজ বলিয়া থ্যাত ছিলেন, শ্ৰীধৰ্ম্মমঙ্গল কাব্যে কবির ঘনরাম তাহাকে মহারাজ বলিয়াই উল্লেখ করিয়াছেন— “ অখিলে যাহার কীৰ্ত্তি, মহারাজ চক্রবর্তী, কীৰ্ত্তিচন্দ্র নরেন্দ্র-প্রধান । চিন্তি তার রাজোল্পতি, কৃষ্ণপুর নিবসতি, দ্বিজ ঘনরাম রস গান ৷” বঙ্গের নবাব বাহাদুরের নিকট কীৰ্ত্তিচন্দ্রের অত্যন্ত প্রতিপত্তি ছিল, একদা তাহার মাতা ঐক্ষেত্রে গমনকালে, বঙ্গেশ্বর উড়িষ্যাপ্রদেশস্থ ফৌজদার ও যাবতীয় ফাড়িদারদিগকে র্তাহার বিশেষ রূপে তত্ত্বাবধারণ করিবার জন্য আদেশ প্রদান করেন । বৰ্দ্ধমানের সন্নিকটস্থ কাঞ্চননগর নামক যে মহা সমুদ্ধিশালী জনপদের ধংসাবশেষ বর্তমান আছে, কীৰ্ত্তিমান কীৰ্ত্তিচন্দ্রই তাহ স্থাপন করেন। ১৭৪০ খৃঃ অঃ কীৰ্ত্তিচন্দ্র পবলোক গমন করেন । তাহার হস্তস্থিত অনুপম তরবারিখানি অস্থাপি রাজধনাগারে পরমস্বত্বে রক্ষিত আছে, উহাকে ‘কীৰ্ত্তিচন্দ্রের তেগ বলিয়া থাকে। কীৰ্ত্তিচন্দের অনেকগুলি কীৰ্ত্তি অস্থাপি বদ্ধমান রাজবংশের মুখোজ্জল করিয়া আছে। কীৰ্ত্তিচন্দ্রের মৃত্যুর পর তদীয় পুত্র চিত্ৰসেন রায় বদ্ধমানের স্বামদারী প্রাপ্ত হয়েন। তিনি বাদশাহের নিকট হইতে পরগণা মণ্ডল ঘাট, আরসা, ব্রাহ্মণভূমি প্রভৃতি কতকগুলি জমিদারী প্রাপ্ত হইয়াছিলেন। দিল্লীশ্বর আবুল ফতে নসরুদ্দীন মহম্মদশাহ বাদশাহের নিকট হইতে ১৫ সওয়াল ১২ জুলুস রাজ উপাধিযুক্ত ফরমাণ ৪ পারচা খেলাত এবং এক জোড়া মুক্ত প্রাপ্ত হয়েন । ঐ সময়ে কীৰ্ত্তিচন্দ্র জীবিত ছিলেন । উক্ত বাদশাহের ২১শ বর্ষ রাজত্বকালে ২• রমজান তারিখে ১৭৪০ খৃঃ চিত্ৰসেন রাজা উপাধিসহ চাকলে বর্ধমানের জমিদাৰী সনন্দ প্রাপ্ত হন। ১৭৪২ খৃঃ পুনরায় দিল্লীশ্বরের নিকট হইতে ছত্র, আসফি, নাকার ও আড়ানি খেলাত সহ, একখানি সনদ প্রাপ্ত হয়েন। এ সময়েও কীৰ্ত্তিচন্দ্র জীবিত ছিলেন । এইরূপে রাজা চিত্ৰসেন সৰ্ব্বসমেত ১২ খামি ফরমাণ [ ও সনদ প্রাপ্ত হইয়াছিলেন। তিনি বার্ষিক ২২৭•৭৭২ টাকা রাজস্ব প্রদান করিতেন । তাহার দুই পত্নী, উভয়েই ৰন্ধ্যা ছিলেন। ১৭৪৪ খৃঃ চিত্রসেনের মৃত্যু হয়। তাহার প্রতিষ্ঠিত দেবালয় কালনায় বর্তমান আছে । ইহার রাজত্বকালের অনেকগুলি কামান অদ্যাবধি রাজবাটীতে বিদ্ধমান, তাহাতে পারসী অক্ষরে তাহার নাম খোদিত দৃষ্ট হয় । রাজা চিত্ৰসেন রায়ের মৃত্যুর পর তদীয় খুল্লতাত মিত্রসেনের পুত্র তিলকচন্দ্ৰ বৰ্দ্ধমান রাজ্যপ্রাপ্ত হন। সন ১১৪০ সালেব ১২ই অগ্রহায়ণ তারিখে মহারাজ তিলোকচন্দ্র জন্মগ্রহণ করেন । তিনি ১৭৪৪ খৃঃ ২৪ জুলু ৯ জমাদিয়াল আউঅল তারিখে দিল্লীশ্বর আবুল ফতে নসরুদ্দীন মহম্মদ শাহ বাদশাহের নিকট হইতে বৰ্দ্ধমান প্রভৃতি জমিদারীর রাজা উপাধিসহ প্রথম সনন্দ পান । পরে আবুল নসর মুজা উদ্দীন আহম্মদ শ বাদশাহ গাজীর নিকট হইতে ৭ জুলুস ৭ রজব তারিখে পুনরায় একখানি ফরমাণ প্রাপ্ত হন । দিল্লীশ্বর আলমগীর বাদশাহের নিকট হইতে তিনি ১ জুলুস ২৬ মহরম তারিখে একটি হস্তী উপহার পাইয়াছিলেন । দিল্লীশ্বর শাহ আলম বাদশাহ ফিদবী থাস’ উল্লেখে তাহাকে একখানি পত্র এবং তদীয় প্রধান সেনাপতি তাহাকে ( ৪ হাজার জাত ও ২ হাজার সওয়ার ) চারিহাজারি জাত ও রাজা বাহাদুব খেতাবযুক্ত একখানি ফরমাণ দিয়াছিলেন। ফিদবী খাস অর্থে বাদশাহের খাসের কৰ্ম্মচারী, এরূপ সম্মান রাজ্যের প্রধান কৰ্ম্মচারী ভিন্ন অপর কেহই প্রাপ্ত হইতেন না, এবং বঙ্গদেশে অপর কোন ভূপতিই উক্ত উপাধি প্রাপ্ত হয়েন নাই। ইঃ ইণ্ডিয়া কোম্পানীর তদানীন্তন গবর্ণর জেনারেল বাহাদুর “ফিদৰী খাস’ শৰ ব্যবহার করিতেন । ঐ সঙ্গে তিলকচন্দ্র নহবত ও ঝালরদা’র পালকীও প্রাপ্ত হইয়াছিলেন । পুনরায় দিল্লীশ্বরের নিকট ( ১৭৬৮ খু: ) ৯ জুলুস ৪ঠা রমজান ৫ হাজার জাত ৩ হাজার সওয়ার ( পঞ্চহাজারি জাত ), মহারাজাধিরাজ খেতাব, তোপ, নাকার ও পতাকা প্রাপ্তির ফরমাণ লাভ করেন । ১৭৫৫ খৃঃ ইষ্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানির তদানীন্তন গবর্ণর মি: হেনরি রিসবেট দিল্লী সম্রাটের আদেশানুসারে মহারাজ তিলক চন্দ্রকে একট খেলাত ও একটা হস্তী প্রেরণ করেন। পলাশীর যুদ্ধ কালে তিলকচন্দ্র অশ্ব দিয়া ইংরাজদিগকে যথেষ্ট সাহায্য করিয়াছিলেন । ১৭৬০ খৃঃ ইষ্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানি মহারাজ তিলকচন্দ্র ও তীয় দেওয়ান এৰং অন্যান্ত প্রধান কৰ্ম্মচারিগণকে ৭৫২৫২ টাক মূল্যের খেলাত পাঠাইরা ছিলেন। ইষ্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানীকে তিলকচন সাহায্য করিলেও অল্প