বৌদ্ধধৰ্ম্ম মন্দিবের মধ্যে একটা ছত্রের নিম্নে এই ধৰ্ম্মচক্র সুন্দরবস্ত্রে সুসঙ্গিত করিয়া রাখা হইয়াছে। দুই পাশ্বে দুইটি পুরুষমূৰ্ত্তি দণ্ডায়মান। নিম্নে অশ্ব চতুষ্টয়-সংযোজিত রথের উপরে এক ৰাজা অসীম । পোদিত লিপিপাঠে জানা যায় এই রাজার নাম প্রসেনজিৎ, ইনি কৌশলের অধিপতি । অন্য একখানি ফলকে চক্রের যে প্রতিকৃতি দেখা যায়, তাহাতে ইহা এক অতি উচ্চ স্তস্তুের উপরে সংস্থাপিত । সাঞ্চি, গয়া এবং শ্রাবস্তীতে এইরূপ ধরণের ধৰ্ম্মচক্রের প্রতিকৃতি পাওয়া গিয়াছে। ধৰ্ম্মচর্চার জন্ত নির্দিষ্ট দিনের নাম 'উপোসথ' । প্রত্যেক পক্ষের অষ্টমী, চতুর্দশী, পুর্ণিমা ও অমাবস্তার দিন পৰ্ব্বমধ্যে গণ্য ছিল । বৌদ্ধগণ এই প্রথা অন্তান্ত ধৰ্ম্মসম্প্রদায় হইতে অমুকরণ করিয়াছেন বলিয়া মনে হয় । কিন্তু এজন্ত সত্তব দায়ী নহে । সাধারণের মতের প্রতি লক্ষ্য ও সম্মান রাথিয়া তথাগত বোধ হয় এই রূপ বিধান করিয়া থাকিবেন । সাপ্তাহিক উপোসথ গৃহী ও ভিক্ষু উভয় সম্প্রদায়েই পালন কবিতেন । প্রতিমাসে চারিদিনের মধ্যে দুইদিন, ভিক্ষুগণ প্রাতিমোগ আবৃত্তি করিতেন। যদি শ্রমণগণের মধ্যে কাহার সঙ্গে কাহার বিরোধ হইত,-সেই বিরোধ ভঞ্জন ও পুনরায় মৈত্রী সংস্থাপনের দিনকে ও তীtহার পবিত্র দিন বলিয়া মনে কবিতেন । ইহার পালি নাম, সামগী উপোসথ। সিংহল, ব্রহ্মদেশ এবং নেপালে প্রতিমাসে ধৰ্ম্মচর্চার জন্য এই চারিদিন নির্দিষ্ট আছে, যথা-অমাবস্তা, পূর্ণিমা এবং প্রতিপক্ষের অষ্টমী তিথি । তিব্বতে ১৪ই, ১৫ই এং ২৯শে ও ৩০শে এই চারিদিন ধৰ্ম্মচৰ্য্যায় অবধারিত আছে । ধৰ্ম্মস্থহে যে বিধি আছে, তাহা বিভিন্ন প্রদেশে বিভিন্ন অর্থে গৃহীত হইয়াছে বলিয়া এই পার্থক্য লক্ষিত হয় । সিংহলে নির্দিষ্ট বিশ্রামদিনের সঙ্গে মমুর বিধানের সামঞ্জস্ত আছে । আপস্তম্বেব বিধান মতে অমাবস্তার সময়ে দুইদিন বিশ্রাম দেওয়াই বিধি। " উপোসথ বিশ্রামের দিন । এদিনে বাণিজ্য বা অষ্ঠ কোন কাৰ্য্য করা নিষিদ্ধ। এদিনে বিদ্যালয় কিম্বা বিচারালয়ের কার্য্যও বন্ধ থাকে । মৎস্তধরা কি মৃগয়া প্রভৃতি কাৰ্য্যও এদিনে করিতে নাই। প্রাচীনকাল হইতে এই দিনে উপবাসের প্রথা প্রচলিত আছে । গৃহস্থগণ এই দিনে পরিষ্কৃত বসন পরিধান করিবে এবং পাব এ মনে থাকবে। পূৰ্ব্ব কথিত অষ্ট্র প্রকার উপদেশ প্রতিপালন করা তাহাধের পক্ষে পুণ্য কাৰ্য্য। প্রত্যেক বিশ্রাম দিনে ধৰ্ম্মপ্রচার এবং উপদেশ প্রদান কর। সাধারণ রীতি। ধৰ্ম্ম গ্রন্থ হইত্তে কিয়দংশ পাঠ করারও নিয়ম • नृदफ्रेिन [ ૧૭8 ו বৌদ্ধধৰ্ম্ম আছে। পূৰ্ব্বে ভিক্ষুগণ এই কার্যের অধিকারী ছিলেন। অধুনা সিংহলে প্রতি গৃহে গমন করিয়া অন্যান্ত ব্যক্তিরাও দেশীয় ভাষায় ধৰ্ম্মগ্রন্থ পাঠ করিয়া থাকেন। . . বর্ষাকাল-ই ধৰ্ম্ম-প্রচারের প্রশস্ত সময় । বৌদ্ধধৰ্ম্মের প্রবর্তন সময় হইতেই এই প্রথা চলিয়া আসিতেছে। প্রাচীন কালে ভারতবর্ষে ধৰ্ম্ম কার্য্যের জন্ত বৎসর তিন ভাগে বিভক্ত ছিল। প্রত্যেক ফাল্গুনী, আষাঢ়ী এবং কাৰ্ত্তিকী পূর্ণিমায় বলি প্রভৃতি দ্বারা চাতুৰ্ম্মান্ত আরম্ভ হইত। বৌদ্ধগণও এই প্রথা বজায় রাখিয়াছেন, পশুবলি প্রভৃতি প্রচলিত নাই। বর্ষাকালের নির্জনবাস আষাঢ় মাসের পূর্ণিমা কি তাহার একমাস পব হইতে আরম্ভ হয়। সিংহল প্রদেশে তিনমাস কাল নিৰ্জ্জনবাস করিতে হয়। যে দিনে এই নিৰ্জ্জন বাসের শেষ হয়, তাহার নাম প্রবারণা। এই দিনে পাচ কি ততোহধিক শ্রমণ একত্র হইয়া সঙ্ঘের বিধানাবলীর আবৃত্ত্বি করিয়া থাকেন । মাসের চতুৰ্দশী এবং পূর্ণিমায় এই পারায়ণ উৎসব সম্পন্ন হইত। এই দুই দিনে শ্রমণগণকে উপহার প্রদান, ভোজন কবীন এবং তাহঁদের এক রথযাত্রা বা মিছিল বাহির হইত । সিংহল ও ব্রহ্মে এখন ও বাহির হয় । ইহার পর বেীন্ধভক্তগণ শ্রমণ অর্থাৎ ভিক্ষুদিগকে বস্ত্রদান করিতেন । অনু্যন পাচজন ভিক্ষু একত্র হইয়া নিদ্ধারণ করিয়া দিতেন কোন কোন ভ্রাতার বস্ত্র আবশ্বক । ইহা স্থিব হইলে ভিক্ষু এবং গৃহীগণ একত্র হইয়া ভিক্ষুগণের পরিধেয় পরিচ্ছদ প্রস্তুত এবং পীতবর্ণে উহ রঞ্জিত করিয়া দিতেন। চব্বিশ ঘণ্টা সময়ের মধ্যেই এই সমুদয় কাৰ্য্য সম্পন্ন হুইত । সিংহলের বৌদ্ধগণ বসন্তকালের প্রারস্তে এক উৎসব করিয়া থাকেন। মারের বিনাশ করা উপলক্ষে এই উৎসব হইয়। থাকে। শ্রাম দেশে এই উৎসবের নাম সংক্রান অর্থাৎ ংক্রাস্তি । ইহার যে বিবরণ আছে, তাহ পাঠ করিত্বে স্পষ্টই প্রতীতি হয় যে, ইহা হিন্দুদিগের বসন্ত উৎসবের অমুকরণ মাত্র । * বৈশাখী পূর্ণিমায় এক ৰৌদ্ধ উৎসব হইয়া থাকে তাহাব নাম বৈশাখপুজা । এই দিনে বুদ্ধদেব জন্মগ্রহণ কবেন এবং এই তিথিতেই তাহার বুদ্ধত্ব ও নিৰ্ব্বাণ লাভ হয়। এই উৎসব খামদেশেই সমধিক প্রচলিত। পূৰ্ব্বে সিংহলেও ইহার বিশেষ প্রচলন ছিল। এই উৎসবের স্মৃতিস্বরূপ অদ্যাপি বঙ্গের নানাস্থানে ও ময়ূরভঞ্জে বৈশাখী পূর্ণিমায ধৰ্ম্মের গাজন বা উড়া পৰ্ব্ব হইয়া থাকে । বৌদ্ধ ধৰ্ম্মের যখন বিশেষ প্রভাব ছিল, তখন প্রতি পীচ বৎসর অন্তে একটী পাঞ্চবার্ষিক উৎসব হইত। ইহার অন্ততব
পাতা:বিশ্বকোষ ঊনবিংশ খণ্ড.djvu/৭৩২
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।