পর্তুগীজ পাইবার আশায় তিনি বিজয়নগরাধিপের ( নরসিংহরাজ ) নিকট দূত পাঠাইলেন। তিনিও কিছু লাভের আশায় স্থলপথে পর্তুগীজদিগকে সাহায্য করিতে সন্মত হইলেন। আলবুকার্ক অঞ্চদ্বীপে আসিলেন। এখানে আসিয়া তিমোজার মুখে শুনিলেন, রুমী তুর্কের গোয়ার প্রবল হইয়াছে। ইহারাই অলমিদার পুত্রকে বিনাশ করিয়াছিল। কায়রোর স্বলতান ইহাদের সাহায্যের জন্ত অনেক সৈন্ত পাঠাইতেছেন । রুমীদিগের মধ্যে উত্তম কারিকর অাছে। তাহারা গোরাতে থাকিয়া পর্তুগীজদিগের মত উৎকৃষ্ট জাহাজ প্রস্তুত করিতেছে। গোয়ার স্ববাদার প্রাণত্যাগ করিয়াছে। এখন গোয়া আক্রমণের বিশেষ সুবিধা আছে। তিমোজার মুখে গোয়ার অবস্থা শুনিয়া আলবুকার্ক ২৪এ ফেব্রুয়ারী গোয়ায় আসিলেন। তাহার ভ্রাতুপুত্র ডম আন্টোনিও কুলে নামিয়া পঞ্জিম্ দুর্গ আক্রমণ করিলেন ও এখানে অস্ত্রশস্থাদি লুটিয়া লইয়া দুর্গে অগ্নিপ্রদান করিয়া জাহাজে চলিয়া আসিলেন। পরদিন নাগরিক প্রজাগণ দুইজন সন্ত্রান্ত লোক পঠাইয়া পর্তুগালরাজের আনুগত্য স্বীকার করিল।
- ৪ঠা মার্চ, আল্বুকার্ক সম্পূর্ণরূপে গোয়া অধিকার করিলেন । এখানকার দুর্গে যথেষ্ট যুদ্ধসজ্জা, কামান, গোড়, গুলি, ৪• খানি জাহাজ বোঝাই বাণিজ্যদ্রব্য, অশ্বশালায় ১৬০ট উৎকৃষ্ট সাপ্লবীয় অশ্ব এবং তুর্ক ও রুমীদিগের রমণী ও শিশুপুত্রাদি ছিল। এ সমস্তই পর্তুগীজ শাসনকৰ্ত্তার হস্তগত হইল। পরে তিনি বান্দা ও গোনাল দুর্গ হইতে তুর্কদিগকে তাড়াইয়া দিয়া ঐ দুর্গ তাহার বশবৰ্ত্তী প্রাচীন হিন্দুরাজবংশকে প্রদান করিলেন ।
তিসোজা মনে করিয়াছিলেন, গোয়া অধিকার করিয়া পর্ত,গীজের তাহার নিকট কর লইয়। তাহাকেই প্রদান করিবেন, কারণ এসম্বন্ধে অপরাপর কাপ্তেনগণও সন্মত ছিলেন, কিন্তু আল্বুকার্ক গোয়ার অবস্থা পরিদর্শন করিয়া এখানেই পর্তুগীজভারতের প্রধান শাসনকেন্দ্র স্থাপন করিতে অভিলাষী হইলেন। তিমোজা যথেষ্ট সম্পত্তি ও পর্তুগীজদিগের নিকট উচ্চসম্মান লাভ করিয়াও তৃপ্ত হইলেন না । তাহার অসন্তোসের পরিচয় পাইয়। তালুকার্ক তাহাকে পর্তুগীজ-সভায় আহবান করিয়া মুক্ত তরবারি, প্রধান মগুলেশ্বর ( Aquazil ) উপাধি ও গোয়ার সমুদয় ভূমি ( কর ধাৰ্য্য করিয়া ) প্রদান করিলেন । মুসলমান সুব গোয়ায় আসিয়াই দ্বিগুণ করবৃদ্ধি করিয়াছিলেন । এখন হিন্দুপ্রজাগণ আলবুকার্কের নিকট জমা হ্রাস [ ১২ ]
- -*.
করিবার জন্ত আবেদন করিলেন । হিন্দুরাজাদিগের সময়ে পর্তুগীজ বে হারে কর আদায় হইত, এখন আলবুকাক সেই হারে কর আদায় করিতে আদেশ করিলেন । এই সংবাদ পাইয়। হিন্দুপ্রজাগণ দলে দলে আসিয়া গোয়ায় বাস করিতে লাগিলেন । গোয়া-প্রদেশ শাসন ও কর আদায় করিবার জন্ত পর্তুগীজশাসনকৰ্ত্তার অধীনে এক এক জেলায় এক একজন দেশীয় থানাদার নিযুক্ত হুইলেন । প্রজা ও বপিকদিগের সুবিধার জষ্ঠ টাকশাল স্থাপিত হইল এবং সুবর্ণ, রৌপ্য ও তাম্রের ক্রুজাদে, দিনার, বিস্তেম ও এস্পারে। প্রচলিত হইল ৯ । আলবুকণক শুনিলেন, আদিল শী ওঁাহাকে আক্রমণ করিবার বিশেষ আয়োজন করিতেছেন । তিনি গোন্দালের মাগুলিকের নিকট হইতে সংবাদ পাইলেন, শঙ্কেশ্বরের রাজা বালোজী, স্ববার সেনাপতি রোশল খ ও করপত্তনরাজ মালিক রব্বাণ এই তিন জনে আদিল শার সহিত ষড়যন্ত্র করিতেছেন ; শীঘ্রই গোয়া আক্রমণ করিবেন। এদিকে আদিল শা আপনার দলপুষ্টি করিবার জষ্ঠ নরসিংহরাজের সাহায্য চাহিলেন । নরসিংহরাজ মুসলমানবিদ্বেষী ছিলেন। তিনি আবার বলিয়া পাঠাইলেন, মুসলমানের অন্তায়পূৰ্ব্বক ৪০ বৎসর হইল, র্তাহার অধিকৃত গোয়া প্রদেশ দখল করিয়াছে, সেই জন্ত তিনি বরং পর্তুগীজ দিগকেই সাহায্য করিবেন । গারসোপার রাজা বীরচোল পর্তুগীজদিগের সহিত যোগদান করিলেন। আল্বুকার্ক গোয়াপ্রবেশের সমুদয় পথ ঘাট বিশেষরূপে সুরক্ষিত রাখিলেন। ১লা মে তারিখে, আদিল শার নিকট হইতে দুইজন দুত পর্তুগীজসভায় উপস্থিত হইল। র্তাহীদের মধ্যে একজন পর্তু,গীজ ছিল । এই ব্যক্তি পর্তুগাল হইতে অবমানিত হইয়। ভারতে আগমনপুৰ্ব্বক আদিল শার অধীনে কৰ্ম্ম স্বীকার করে। এই দূতেরা জানাইল আদিল শী তাহার পিতৃঅধিকৃত এই গোয়াপ্রদেশ চাহিয়াছেন এবং ইহার পরিবর্তে তিনি পৰ্ত্তগৗজদিগের সুবিধাজনক অপর কোন বন্দর প্রদান করিতে সম্মত আছেন। আলবুকার্ক আদিল শার প্রস্তাবে সন্মত হইলেন না। দূতদ্বয় বিদায় হইল। ১৭ই মে, গভীর নিশিথে, মুসলমানেরা তিন চারি দলে বিভক্ত হইয়া অগাসিম নামক পথ,দিয়া গোয়ায় প্রবেশের চেষ্টা করে। প্রথম দল পর্তুগীজের চক্ষে ধূলি দিতে গিয়া প্রার সকলেই বিনষ্ট হইল ; কিন্তু অপর দল নৌকাযোগে তীব্রবেগে অগাসিমে প্রবেশ করিয়া তিমোজার রক্ষিবৃন্দকে পরাজিত
- ক্রুজাদের পরিমাণ—১ly•, দীনার—এক টাকার কিছু কম, বিপ্তেম প্রায় /o এবং এম্পারে প্রায় yo। এই সকল মুদ্রর একদিকে থষ্টয় জুশ ও অপরদিকে পর্তুগালরাজ ডম মামুএলের নাম ধাৰিত।