পান [ ২১৮ ] --- -- প্রস্তরোপরি আঘাত করিলেও তাহার বিঘাত হুইবে না। কদলীমূলের ক্ষার ও তক্র একত্র করিয়া একদিন রাখিবে। ইহাতে শস্ত্রপান দিলে পরে তাহ শাণিত করিলে আতিশয় দৃঢ় হয়, এমন কি এই শস্ত্র পাষাণোপরি আঘাত করিলে ভগ্ন হইবে না, অথবা লেীহে আঘাত করিলে তাহা কুণ্ঠ ( থেতে ) হইবে না।* (বৃহৎসং ৫০ অঃ ) ইহ ভিন্ন অtয়ও কয়েক প্রকার পানবিধি আছে, কিন্তু সেই সকল পান তীরের ফলার জন্ত ব্যবহৃত হয়। বিষ কিংবা বিষবৎ দ্রব্য পান করাইলে অস্ত্র অতি ভীষণক্ষমতা ধারণ করে । বিষ পায়িত অস্ত্রাঘাতে অত্যন্ত্র পরিমাণে রক্তপাত হইলেই তাহা প্রাণসংহারক হইয়া উঠে । অস্ত্রে পান দিবীর সময় বিভিন্ন প্রকারের গন্ধ নির্গত হয় । সেই গন্ধদ্বারা অস্ত্রের ভবিষ্যৎ শুভাশুভ জানা যায় এবং পানের সময় অস্ত্রকে যে দগ্ধ করিতে হয়, তৎকালের যে বর্ণ বা রং হয়, তাহাতেও ভবিষ্যৎ শুভাশুভ অসুমিত হয়। যথা–করবীর, উৎপল, হস্তিমদ, স্থত, কুঙ্কুম, কুদফুল ও চাপার হয়ে গন্ধ নির্গত হইলে সেই অস্ত্র শুভদায়ক হয়। যদি গোমূত্র কিংবা পঙ্ক, মেদ, কুৰ্ম্ম, বসা, "রক্ত, বা ক্ষীর তুল্য কোন গন্ধ হয়, তাহা হইলে সে অস্ত্র অশুভ। দাহকালে যদি বৈদুর্য, কনক বা বিদ্যুতের দ্যায় বাহির হয়, তাহ হইলেও শুভ নচেৎ অশুভ। সুশ্রীতে লিখিত আছে,—রোগীর ত্রণাদি ছেদ বা ভেদ করিতে শস্ত্র ব্যবহার অবিশ্বক, এইজন্ত সৰ্ব্বাগ্রে যাহাতে এই সকল শস্ত্র তীক্ষুধার হয়, তাহ করা কৰ্ত্তব্য । এই ধারের জন্য শস্ত্রসমূহকে পায়ন অর্থাৎ পান দিতে হয়, এই পান তিন প্রকার, যথা—ক্ষার, জল এবং তৈল। পান দিতে হইলে শস্ত্রকে অগ্নিতে দগ্ধ করিয়া প্রয়োজনানুসারে ক্ষীরজলে, বিশুদ্ধজলে অথবা তৈলে মগ্ন করিতে হয়। শল্য অথবা অস্থিচ্ছেদন করিতে হইলে শস্ত্রে ক্ষীরপান, মাংসের ছেদন, ভেদন বা পাটন করিতে হইলে শস্ত্রে বিশুদ্ধ জল এবং শিরা বিদ্ধ অথবা স্নায়ুচ্ছেদন করিতে হইলে তৈল পান দিতে হইবে । ( সুশ্রুত স্বত্রস্থান ৮ অঃ ) { শস্ত্র দেখ । ] পান, উড়িষ্যার উত্তর এবং ছোটনাগপুরের দক্ষিণ ও পশ্চিম
- “ইদমেশনসঞ্চ শস্ত্রপানং রুধিরেণ শ্রিয়ামচ্ছতঃ প্রদীপ্তাং ।
ছবিধ গুণবৎ সুতাভিলিঙ্গোঃ সলিলেনাক্ষরমিচ্ছতশ্চ স্বিত্তং । , বড়বেটুকরেণুগ্ধপানং যদি পানেন সমীহতেইখসিদ্ধিং । ঋসপিত্তমুগাশ্চ বস্তমুগ্ধৈঃ করিন্থগুfচ্ছদয়ে সত্তালগর্ডৈ; ॥ আর্কং পয়োহুড় বিবাশমণীসমেতং পারাবভাখুশকৃত চ যুতং প্রলেপ । শহস্য তৈলমখিতস্য ততে(হস্য পানং পশ্চাচ্ছিতস্যন শিলাস্ক ভবেদ্বিঘাতঃ ॥ ( इद९न९ sol२७-२५) পানক প্রদেশবাসী নীচজাতিবিশেষ। স্থানভেদে ইহাদিগের পাও, পাড়, পাব, পানিক, চিক, চিক-বারাইক, বারাইক, গগু, মহতো, সবাণী, তাতি প্রভৃতি নাম হইয়াছে। মানভূমে ইহার বারাইক, লোহারডাগা ও সরগুজাতে நன.বা চিক-বারাইক এবং সিংহুমে সাবালী বা তাতি নামে খ্যাত। উড়িষ্যায় ইহাদিগের পাঁচটী বিভাগ আছে,-ওড় পান বা উড়িয়া পান, বুনো পান, বেত্র-পান বা রাজপান, পান-বৈষ্ণব এবং পত্রদিয়া । সাধারণতঃ পূৰ্ণবয়স্ক না হইলে পানবালিকার বিবাহ হয় না। ওড় পানশ্রেণীর সমৃদ্ধিশালী ব্যক্তিগণের মধ্যে কেবল বাল্যবিবাহ প্রচলিত অাছে। ইহাদের কন্যাপণ-দুইটী নগদ টাকা, দেড় মণ চাউল, একটা ছাগল এবং দুইখানি সাড়ী। উড়িষ্যার পান-বৈষ্ণবগণই পানগণের পৌরোহিত্য করিয়া থাকে। ছোটনাগপুরের নাগেশ্বর-পানগণও এই কাৰ্য্য সম্পন্ন করে । বর কর্তৃক কন্যার মস্তকে সিন্দুরদান এবং বর ও কন্যার হস্তবন্ধনই ইহুদিগের বিবাহের প্রধান অঙ্গ । ইহাদিগের মধ্যে বিধবা-বিবাহ প্রচলিত আছে। মুতস্বামীর ছোটভ্রাতাকে বিবাহ করাই যুক্তিযুক্ত স্ব স্ব পঞ্চায়তের অনুমতি লইয়া যে কোন কারণেই ইহার বিবাহ বন্ধন ছিন্ন করিতে পারে। কিন্তু স্বামীকে তাহার পরিত্যক্ত স্ত্রীর ছয়মাসের গ্রাসাচ্ছাদন প্রদান করিতে হয়। পরিত্যক্ত রমণী পুনরায় বিবাহ করিতে পারে । স্থানভেদে ইহাদের মধ্যে নানাবিধ নিকৃষ্ট হিন্দুধৰ্ম্ম প্রচলিত আছে। উড়িষা ও সিংডুমে পানের বৈষ্ণব ধৰ্ম্ম পালন করে ও মৃতদেহ প্রোপিত করিয়া থাকে। লোহারডাগায় দাহ ও সমাধি উভয়ই প্রচলিত । সামাজিক বিষয়ে পানের অতি নিকৃষ্ট । ইহার গেt, শূকর ও খারাপ মাংস ভক্ষণ করে এবং মদ্যপান করিয়া থাকে । উড়িষ্যায় বুনোপানের প্রসিদ্ধ চোর । ২ বঙ্গের পর্ণব্যবসায়ী জাতিভেদ । [ বারুই বা বারজীবী দেখ। ] পানক (ক্লী) পানায় কায়তীতি কৈ-ক। পানদ্রব্যবিশেষ, চলিত পান। পাকরাজেশ্বরে লিখিত আছে পরিমিত শর্কর ও নি, রসযুক্ত, অথবা অন্ন অম্লযুক্ত পঙ্করস, ইহারই নাম পানক । “পানীয়ং পানকং মদ্যং মৃণায়েমু প্রদাপয়েৎ ” ( মুখত ১৩৯ ) পানীয়, পানক এবং মদ্য ইহা মাটির পাত্র করিয়া দিতে হয়। পানক শব্দ পুংলিঙ্গেও ব্যবহার দেখিতে পাওয়া যায়। “এভিপোন্ কায়াংশ্চ তৈলংগ সপীর্ষি পানকান্ ” ( সুশ্রাত ১৩৯ ) পানক ও প্ৰপাণক একপর্য্যায় শব্দ। ইহা পানী বা সরবত নামে প্রসিদ্ধ, যথা—চিনির পান, মিছরির পান ইত্যাদি ।