পর্তুগীজ - পদোচিতৃ মৰ্যাদা ভুলিয়া অল্পায় কাৰ্য্য করিতে পরায়ুখ হন না। মাটিমের মনেও এই ধারণা ছিল । এমন কি তিনি গোয়। আসিবার সময় দিওগো-সোয়ারেস নামে এক জলদস্থাকে বল্পী করেন । এই ব্যক্তির প্রাণদণ্ডের আদেশ হইয়াছিল, কিন্তু লে কোনরূপে পলাইয়া আসিয়া ভারতসমুদ্রে দমাবৃত্তি স্বারা জীবিক নিৰ্ব্বাহ করি ত । ডম্ এস্তেবাওর বিরুদ্ধে অনেক দোষের কথা তাহার জানা আছে, নব গবর্ণরকে সমস্ত বলিয়া দিবেন, এইরূপ আশা দেওয়ায় সে মার্টিমের হাতে রক্ষা পাইল । এই স্থৰ্বত্তের মিথ্যা কথায় ভুলির মাটিমৃ গোয়ায় পদার্পণ করিয়াই ডম্-এস্তেবাওর সহিত মন্দ ব্যবহার করিতে লাগিলেন । উচ্চহৃদয় এস্তেবাও তাহীতে নিতান্ত বিরক্ত হইয়া অবিলম্বে গৰণরের পদ পরিত্যাগপূর্বক মার্টিমের মুখ দর্শন না করিয়া অতি দীনভাবে পর্তুগাল যাত্রা করিলেন। পর্তুগালরাজ ও রাজ্যের প্রধান ব্যক্তি অতি সমাদরে ও সম্মানের সহিত তাছার অভ্যর্থনা করিলেন। সকলে ভাবিয়াছিল এস্তেবাও মহাধনী হইয়। দেশে ফিরিয়াছেন, কিন্তু শীঘ্রই সকলে জানিতে পারিল, ডম্ এস্তের্যাও তাহার উপার্জনের অধিকাংশই দীনঘুর্থীকে বিতরণ করিয়াছেন ; এখন তিনি সামান্ত গৃহস্থমাত্র । মার্টিমু আফন্সো-দা-হ্রসার শাসন। সার্টিমৃ আফন্সে শাসনভার গ্রহণ করিয়াই ভারতের বন্দর সমূহে যত জাহাজ আছে, তাহ পূর্ণসজ্জায় প্রস্তুত রাখিতে আদেশ করিলেন এবং পর্তুগীজ সৈনিকদিগের বেতন কমাইয়া দিলেন । ইহাতে সকলেই অসন্তুষ্ট হইল। অনেকেই সৈনিকবৃত্তি পরিত্যাগ করিয়া তখন ব্যবসায়ে মন দিল । গবর্ণর সৈনিকদিগের অভিপ্রায় অবগত হইয়া, তাহাদিগকে দমন করিবার উদ্দেশে আদেশ করিলেন, “মলাকার শুষ্কগুহে বৈদেশিক বণিকদিগের নিকট যে হারে মাশুল হাওয়া হইত, তাহাদিগকে উৎসাহ দিবার জন্ত তাহ হ্রাস করা হউক এবং পর্তুগীজবণিকদিগের নিকট হইতে তাহার চতুগুণ অধিক যেন মাশুল আদায় করা হয়।” বিদেশীয় বণিকদিগের সুবিধা হওয়ায় রাজকোঁধেও যথেষ্ট শুষ্ক আদায় হইতে লাগিল, কিন্তু পর্তু, গীজ-বণিকদিগের নিকট সেরূপ শুল্ক আদায় হইল না, তাহার। নানাপ্রকার কূট উপায়ে শুন্ধের দায় হইতে রক্ষা পাইতে লাগিলেন। মাটিম পর্তুগীজদিগের এই হুরভিসন্ধি জানিতে পারিয়া নিতান্ত মৰ্ম্মপীড়িত হইয়াছিলেন । এই সময়ে গোয়ার নিকটবর্তী স্থানের শাসনকৰ্ত্ত আসদ খ৷ আদিল শাহকে রাজ্যচু্যত করিয়া তাহার ভ্রাতা মালু আদিল শাহকে সিংহাসনে বসাইবার চেষ্টা করেন এবং পর্তুগীজদিগের সাহায্য করিবার জন্য পর্তুগালরাজকে কোঙ্কণ প্রদেশ [ ২৬ ] পর্তুগীজ ছাড়িয়া দিতে সন্মত হন। পর্তুগীজ-গবর্ণর তাহাতে মালু আম্বিলের পক্ষ অবলম্বন করেন । এই সময় আদিল শাহও বলিয়া পাঠাইলেন যে, যদি পর্তুগীজের তাহার পক্ষ অবলম্বন করেন s মালুকে ধরিয়া দেন, তাছা হইলে তিনি পর্তুগালরাজকে সালসেট ও বারদেশ প্রদান করিবেন। পর্তুগীজদিগের কুপরামর্শে গবর্ণর আদিল শাহের প্রস্তাবে সন্মত হইলেন। সন্ধিপত্র লেখাপড়া হইয় গেল। আদিল শাহ উক্ত ছুইটী স্থান, এ ছাড়া গবর্ণরকে প্রভূত ধনরত্ন ( প্রায় ১• কোট মুদ্রা) প্রদান করিলেন বটে ; কিন্তু পর্তুগীজশাসনকর্তী অর্থ লইয়াও সন্ধি অনুসারে কার্য্য করিলেন না । সৰ্ব্বসমক্ষে মালুকে গোয়ায় আনিলেন। তাহাতে আদিল শাহ সমস্ত টাকা ফিরাইয়া দিবার জন্ত গবৰ্ণরকে বলিয়া পাঠাইলেন। তিনিও বৃথা ওজর করিয়া বিলম্ব করিতে লাগিলেন । গবর্ণয় মার্টিস্ এরূপ দুই পক্ষ লইবার লোক ছিলেন না । তিনি র্যাহীদের পরামর্শে এই দুষ্কৰ্ম্ম করিয়াছিলেন, সৰ্ব্বদাই তাহাদিগকে গালাগালি দিতেন । এদিকে তিনি আপনার মহত্ত্ব ও সততা রক্ষা করিবার জন্ত বিব্রত হইয়া পড়িলেন । একদিন বলিয়া ফেলিলেন, ‘আমার দ্বারা আর শাসনকাৰ্য্য চলিবে না । যদি শীঘ্রই আর একজন গবর্ণর না আসেন, তাহা হইলে আমি যে কোন ব্যক্তিকে পদ ছাড়িয়া দিয়! চলিয়া যাইব ।” ডম্ জেtয় ও-ডি-ক্ষীষ্টীর শাসন। ১৫৪৫ খৃষ্টাব্দে ১লা সেপ্টেম্বর, ডমৃ জোয়ণ ও-ডি-কাষ্ট্রে। পর্তুগাল হইতে শাসনভার লইয়। গোয়ায় উপস্থিত হইলেন । মাটিম আফন্সে যেন নিষ্কৃতিলাভ করির স্বদেশ যাত্রা করিলেন। ডম্ জোরাও গবর্ণর হইয়াই নানাদিকে নূতন নূতন পোতাধ্যক্ষ, দুর্গাধ্যক্ষ ও রাজকৰ্ম্মচারী পাঠাইতে লাগিলেন । এই সময় কাম্বের অধিপতি হুলতান মাহ্মদ অপরাপর মুসলমান রাজগণের সহিত একত্র হইয়া দীউ হইতে পর্তুগীজ । প্রভাব লোপ করিবার জন্ত বহু সৈন্যসামন্ত লইয়া অগ্রসর হইলেন। তাহার সেনাপতি কাজি জাক্ষর ভীমবিক্রমে পর্তুগীজদুর্গ আক্রমণ করিল। উভয়পক্ষেই শত শত ব্যক্তি প্রাণ বিসর্জন করিয়াছিল । এই যুদ্ধে জাফরও প্রাণ দিয়াছিলেন। তাহার পর রুমী খান, জাঙ্গর র্য। প্রভৃতি সেনানায়কগণ বহুসংখ্যক কামান ও ষোদ্ধ লইয়া প্রাণপণে ৮ মাসকাল দীউ অবরোধ করিল। এক্ষেত্রে পর্তুগীজের যেরূপ ক্ষতিগ্রস্ত ও বিপদগ্ৰস্ত হইয়াছিল, এরূপ ফুর্ঘটনা আর কখন ঘটে নাই। এই সময়ে দুর্গস্থ পৰ্বগীজ-রমণীগণ পৰ্য্যন্ত শত্রুদমনার্থ অস্ত্র ধারণ করিয়াছিল।
পাতা:বিশ্বকোষ একাদশ খণ্ড.djvu/২৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।