পর্তুগীজ । করিত। মৃত্যুকালে তাহাকেই সমস্ত সম্পত্তি দিয়া যাই ত । এইরূপ অংদর ও যত্নে বিদেশী মোহিত হইত, কখনও জন্মভূমি পরিত্যাগের কষ্ট অনুভব করিত না। তাহারাও অন্ত পক্ষে যথাসাধ্য স্ব স্ব জন্মভূমি ও অপরাপর জ্ঞাত স্থানের সন্ধান বলিয়া দিতে কুষ্ঠিত হইত না। এইরূপে তাহদের নিকট সন্ধান লইয়াই ডম হেনরিক নানা অজ্ঞাত প্রদেশ আবিষ্কার করিতে সমর্থ হইয়াছিলেন। যদিও হেন্রিক্ বহু চেষ্টা করিয়াও ভারত আবিষ্কার করিতে পারেন নাই ; কিন্তু তিনি যে বীজ রোপণ করিয়াছিলেন, তাহারই ফলে পরবর্তীকালে পর্তুগীজগণ ভারত আবিষ্কারে সমর্থ হইয়াছিলেন, তাহাতে সন্দেহ নাই । ডম্ জোয়াও সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হইবার অল্পকাল পরেই যে দেশে গরমমসল উৎপন্ন হয় ও প্রেষ্টর-জন বাস করে, সেই সেই দেশ খুজিয়া বাহির করিবার জন্য উপযুক্ত লোক প্রেরণ করেন। রাজাদেশে জোয়ণও পেরেস্-দা-কোবিলস্থাও নামে আরব্যভাষাবিং এক পর্তুগীজও ঐ কার্যে নিযুক্ত হন । ১৪৮৭ খৃষ্টাব্দে ৭ই মে, তাহারা যাত্রা করেন । প্রথমে বার্শিলোনা, পরে নেপলস্ ও রোডস্ হইয়া আলেকসান্দ্রিয়ায় সকলে উপনীত হইলেন। এখানে তাহারা কিছুদিন কম্পজর ভূগিয়া কতগুলি তার কিনিয়া বণিকরূপে কায়রে। নগরে অসিলেন । এখানে আদেনযাত্রী কতকগুলি আরব ( মুর ) আসিয়া মিলিত হইল। পরে পর্তুগীজগণ সিনাই পৰ্ব্বতের পাদদেশে আসিয়া এখানে বণিকগণের নিকট কালিকট ( কোলিকোছ ) সহরের বিস্তীর্ণ বাণিজ্যের সন্ধান পাইলেন। এবার তাহারা সুয়াকিমৃ হইয়া আদেনে গিয়া বিভক্ত হইয়। পড়িলেন। কোবিলস্থাও ভারতবর্ষাভিমুথে ও পৈব ইথিওপিয়া অভিমুখে অগ্রসর হইলেন । কোবিল-হঁtও এক আরবী জাহাজে চড়িয়া প্রথমে মলবার উপকূলবর্তী কন্নৰূরে উপস্থিত হন। তথায় কিছুদিন থাকিয়। কালিকটে অসিলেন। এখানে রাশি রাশি আদ ও গোলমরিচ উৎপন্ন হয় দেখিয়া চমৎকৃত হইলেন । আরও শুনিলেন, এখানে বিস্তর দারুচিনি ও লবঙ্গ আমদানী হইয়া থাকে । যাহার জন্য পর্তুগীজরাজ এতদিন ধরিয়া অমুসন্ধান করিতেছেন, সেই স্থানের সন্ধান পাইয়া কোবিল-হাও হাতে যেন স্বর্গ পাইলেন । তথা হইতে তিনি গোয়ানগরে গমন করেন । পরে হরমুজ (অর্মজ)দ্বীপ দর্শন করিয়া আফ্রিকার উপকূলে বাবেল মন্দব প্রণালীর ঠিক বাহিরে জৈলা নামক স্থানে এবং তথা হইতে কতকগুলি আরব বণিকের সহিত সোফালা বন্দরে আদিলেন। এখানে আসিয়া শুনিলেন, ইহারই অনতিদূরে [ R ] পর্তুগীজ ৯• • মাইল দৈর্ঘ্য একটী দ্বীপ আছে, কাফ্রিরা তাঁহাকে ‘চন্দ্র দ্বীপ বলে । ( এখন মাদাগাস্কর নামে খ্যাত ) কোবিল-হাও ভারতীয় বাণিজ্যের সংবাদ জানিয়া পৰ্বগtলরাজের নিকট সমস্ত লিখিয়া পাঠাইলেন । তৎপরে তিনি নানাস্থান পরিদর্শন করিয়াছিলেন, কিন্তু তাহার অদৃষ্টক্রমে আর তিনি জন্মভূমিতে ফিরিতে পারেন নাই। তিনি একজন হাবলী রমণীর প্রেমে মুগ্ধ হইয়া ৩৩ বর্ষকাল আবিসীনিয়ায় অতিবাহিত করেন এবং এখানেই কালগ্রাসে পতিত হন । কোবিল-স্থাও ষে সময়ে গরমমসলা’র দেশ আবিষ্কার করিতে বাহির হন, সেই সময় সুবিখ্যাত কলম্বস পর্তু, গালরাজের অনুমতিক্রমে ভারতাবিষ্কারে যাত্রা করেন, তিনি ভারতের সন্ধান না পাইয়া, সুবৃহৎ আমেরিকা মহাদ্বীপ আবিস্কার করিয়া বহুপরে কীৰ্ত্তি ও যশঃ অর্জন করিয়াছিলেন । [ আমেরিকা দেখ । ] অপর দিকে বার্থলোমেউ-দি-দিয়াজ (১৪৮৬ খৃষ্টাব্দে আগষ্টের শেষে) বাহির হইয়া উত্তমাশা অন্তরীপ ( Cape of Good hope ) আবিষ্কার করেন। তৎপূৰ্ব্বে কোন যুরোপীয় এখানে পদার্পণ করেন নাই। এখানে আসিতে দিয়াজ সদলে অনেক কষ্ট পাইয়াছিলেন, সেই জন্য প্রথমে ইহার নাম হয় 'ঝটিকাঅন্তরীপ’ (Cabo Formentos), পরে পর্তুগালে পৌঁছিয়া পর্তুগালরাজ ২য় জোয় ওর নিকট দিয়tজ সংবাদ দিবার সময় ভারতাবিষ্কারের বহুদিনের অাশা সফল হইবে ভাবিয়া উহার নাম রাথিলেন *উত্তমীশ’ । ১৪৯৫ খৃষ্টাব্দে মামুএল পর্তুগালের সিংহাসনে বসিয়াই রাজকুমার হেনরিকের ব্রতে ব্ৰতী হইলেন । তিনি বহুদূরদেশান্তর আবিষ্কার ও বাণিজ্যের উন্নতিকল্পে বিশেষ মনোযোগ দিলেন। তিনি ২য় জোয়াওর সময়ের কতকগুলি কাগজ পত্র হইতে জানিতে পারিলেন যে যুরোপের বাণিজ্যকেন্দ্র ভিনিসের ধন ও বাণিজ্যসমুদ্ধি, সমস্তই ভারতীয় দ্ৰব্যজাত হইতে । এ সংবাদ পাইয়াই পর্তুগীজরাজ অবিলম্বে তিনখানি বৃহৎ সমুদ্রপোত নিৰ্ম্মাণ করাইলেন এবং তাহার নিজ হিসাবরক্ষক এস্তেবাও-দা-গামার পুত্র ভাস্কো-দা-গামাকে সকলের অধ্যক্ষ করিয়া পাঠাইলেন ১ ভাস্কো-দা-গামা সাও-গত্রিএল (১) এই তিন জ{হজে দুইটা করিয়া মাস্তুল, দুই দফা করিয়া পোতচালনের উপকরণ, গোল, গুলি, কামান প্রভৃতি যুদ্ধোপকরণ, প্রভূত পরিমাণে সুপেয় ও স্ববাসিত জল, বহুদিন অবিকৃত থাকিতে পারে এরূপ খাদ্যসামগ্ৰী, রোগীদিগের চিকিৎসার জন্য একটা ঔষধভাণ্ডার, খৃষ্টধৰ্ম্মে দীক্ষিত করিবার জষ্ঠ পাদরী ও ধৰ্ম্মাধ্যক্ষ, পর্তুগাল রাজ্যমধ্যে ও তাহার নিকটবৰ্ত্ত অপরাপর দেশে যতপ্রকার বাণিজ্যদ্রব্য পাওয়া যায় সেই সকল
পাতা:বিশ্বকোষ একাদশ খণ্ড.djvu/৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।