পর্তুগীজ [ ৩ ] - -- পর্তুগীজ নামক জাহাজে যাত্রা করিলেন, সঙ্গে আর দুইখানি বৃহৎ জাহাজ ও দুই শতাধিক সাহসী লোক রহিল । ১৪৯৮ খৃষ্টাস্কে মাৰ্চমাসে তিনি মোজাম্বিক সহরে পৌছিলেন । এখানে বোম্বাই হইতে আগত দবানে ( নামান্তর তেবে ) নামে এক আরবী দালালের সহিত র্তাহার সাক্ষাৎ হয়, তাহার নিকট অনেক সন্ধান জানিতে পারেন। র্তাহারই যত্নে তিনি মোজাম্বিকের শেখের ষড়যন্ত্র হইতে রক্ষা পান । মোজাম্বিক হইতে কুইলোয় হইয় ভাস্কো-দা-গাম! মোস্বাসায় অসিলেন । এখানকার অধিপতিও ভাস্কো-দাগামার জাহাজধ্বংসের চেষ্টায় ছিলেন, কিন্তু পৰ্ব গীল্পদিগের কৌশলে কিছু করিতে পারেন নাই। দা-গামা উপকূল বাহিয়া এপ্রেল মাসে মেলিনা সহরে পৌছিলেন । মেলিন্দের রাজা দা-গামার সহিত সাঙ্গণত করিয়া তাহাকে যথেষ্ট অভ্যখনা করিয়াছিলেন, দা-গামাও পর্তুগালরাজপ্রদত্ত সুবর্ণখচিত তরবারি, স্বর্ণসুত্ৰবেষ্টিত লাল সাটিনের বর্ণ ও সোণারপাতে বঁtধান বর্ষ উপহার দিয়া মেলিন্দরাজের সম্মান রক্ষা করিলেন। দবানে দা-গামাকে খন্তাৎ ( কাম্বে ) যাইতে পরামর্শ দিয়াছিলেন, কিন্তু মেলিন্দপতি তাহকে যুক্তি দেন যে, “তিনি যে উদ্দেশ্রে ভারতে যাইতেছেন, তাহ সমস্তই কলিকটে গেলে পাইতে পারেন।” অমুকুল বায়ুর আশায় দা-গামা তিনমাসকাল তথtয় রছিলেন । যাত্রীকালে মেলিনাপতি দ।গামাকে পথ দেখাইয়া দিবার জন্ত, দুইজন বিচক্ষণ কাণ্ডারী সঙ্গে দিলেন, তন্মধ্যে একজন গুজরাতবাসী নাম মালিম্ খ। ২ ২০ দিন যাত্রার পর সমুদ্রবক্ষ হইতে কল্পনূরের পাহাড় তাহাদের দৃষ্টিগোচর হইল। কলিকটের ৩ ক্রোশ দূরে দা-গামা জাহাজ নঙ্গর করিলেন । এই সময়ে কালিকট ভারতের সর্বপ্রধান বাণিজ্যস্থান বলিয়া খ্যাত ছিল । প্রায় ৬০০ বর্ষ হইতে আরবীবণিকগণ এখানে বাণিজ্য করিতেছেন। মিসর তুরস্ক প্রভৃতি নানাস্থানের শত শত বাণিজ্য-পোত এই কালিকট বন্দরে সর্বদাই উপস্থিত থাকিত । মিসরের বণিকগণ মক্কা হইতে নানাদ্রব্য অনিয়া তৎপরিবর্তে এখীন হইতে গোলমরিচ ও ভৈষজ্য দ্রব্য লইয়া যাইত। পরে আবার সেই সকল দ্রব্যই যুরোপের নানাস্থানে রপ্তানী হইত। দ্রব্য, যুরোপে খৃষ্ঠান সমাজে ও মুসলমানদিগের মধ্যে যতপ্রকার স্বর্ণ ও রৌপ্য মুত্র প্রচলিত, ঐ সমস্ত মুদ্র, নানাবর্ণের ও নানাপ্রকার সোণ, রেশম ও পশমের বস্ত্র, নানা মণিমাণিক্যাদির অলঙ্কার, মণিমাণিক্য খচিত স্ববর্ণের তরবারি ও খড়গ প্রভৃতি নানা অস্ত্র ছিল। পৰ্তুগালরাজ ঐ সমস্ত সংগ্ৰহ করিয়া দিয়াছিলেন । (*) té sta sity Reta Hfn Malemo Cana. এই বাণিজ্য ব্যাপারে আরবগণ মহাধনী হইয়া পড়িমাছিল । দা-গামা কালিকটে আসিয়া ঘোষণা করিলেন যে, তাহার সঙ্গে বহু জাহাজ ছিল, সেই সকল জুহাজের অন্বেষণে তিনি এদেশে আসিয়া পড়িয়াছেন এবং আপনার লোকদিগকে বলিয়া দিলেন যে, কেহ কোন জিনিস বিক্রয় করিতে আসিলে, সে যে মূল চাহিবে, তাঁহাই যেন তাহাকে দেওয়া হয়। মৎস্ত, পক্ষী, ফল প্রভৃতি লইয়া কতক গুলি নৌকা জাহাজের নিকট আপিল । পর্তুগীজগণ যে যাহা চাহিল, সেই মূল্য দিয়া মৎস্তাদি গ্ৰহণ করিল। বিক্রেতার এইরূপে আশাতিরিক্ত মূল্য পাইয়া নগরে গিয়া পর্তুগীজগণের অশেষ দয়ার কথা রাষ্ট্র করিয়া দিল । ক্রমে সেই কথা সামরীরাজের কর্ণগোচর হইল। তিনি একজন সন্ত্রাস্ত নায়রকে পর্তুগীজদিগের অভিঃ প্রায় জানিবার জন্ত পাঠাইয়া দিলেন। দা-গামার পক্ষ হইতে দবানে আসিয়া রাজসমীপে জাহাজ অন্বেষণের কথা এবং গরম মসলা ও ভৈষজ্য দ্রব্যাদির বাণিজ্যপ্রসঙ্গ উপস্থিত করিল। সামরীরাজ দবানকে বহু পক্ষী ও ফল মূলাদি উপহার দিয়া বিদায় করিলেন ও দা-গামার ইচ্ছামত গোলমরিচ ও ভৈষজ্যাদি সরবরাহু করিতে সম্মত হইলেন । o আরবীয় বণিকগণ এই সংবাদ পাইয়া সকলেই বিচলিত হইল । যাহাতে পর্তুগীজের ভারতের উপকূলে কোনরূপে বাণিজ্য করিতে না পারে, তাহার জন্য তাহার রাজার প্রধান দেওয়ান ও প্রধান গোমস্তার সহিত মন্ত্রণা করিতে লাগিল । বণিকের রাজপুরুষদিগকে এই বলিয়া বুঝাইল যে পর্তুগীজের বহু দূরদেশ হইতে কেবল বাণিজ্যের অভিপ্রায়ে এখানে আসে নাই ; দেশের অবস্থা বুঝিয়। সেই দেশ অধিকার বা লুট করিবার অভিপ্রায়ে আসিয়াছে। এখন রাজার বিশেষ সতর্ক হওয়া উচিত। ঐ সকল বণিকেরা যথেষ্ট উৎকোচ দিয়া রাজপুরুষদিগকে হাত করিল। রাজপুরুষদিগের প্ররোচনায় রাজার মন ফিরিয়া গেল । দবানে রাজার নিকট সংবাদ দিতে গেলে, রাজা কোন উত্তর না দিয়া তাহাকে ফিরাইয়া দিলেন। এ দিকে আরবেরা দা-গামার ধ্বংসের জন্ত ষড়যন্ত্র করিতে লাগিল। এই সময় অলঞ্জোপেরেজ নামে সেভিল-নিবাসী এক ব্যক্তি কালিকটে থাকিত, সে মুসলমান ধৰ্ম্ম গ্রহণ করিয়া আরবগণের বিশেষ প্রতিভাজন ছিল । এই ব্যক্তিই স্বদেশবাণী দা-গামাকে রক্ষা করিয়াছিল । ইহার নিকট ভিতরের খবর জানিতে না পরিলে, দা-গামাকে আর দেশে ফিরিতে হইত না । অনেক চেষ্টার পর দা-গামা বাণিজ্য দ্রব্য ক্রয়ের অধিকার পাইলেন বটে, কিন্তু তাহার ব্যবসাতেও বিপরীত ফল ফলিল। তিনি নির্দিষ্ট হার অপেক্ষ
পাতা:বিশ্বকোষ একাদশ খণ্ড.djvu/৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।