পুরাণ লাম না। সম্প্রতি মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী মহাশয় । নেপাল হইতে খৃষ্টীয় ৭ম শতাব্দীর লেখা স্কনপুরাণীয় নন্দিকেশ্বরমাহীষ্মের একখানি পুথি পাইয়াছেন। বিশ্বকোষকাৰ্য্যালয়েও ৯৩৩ শকের লেখা স্কনাপুরাণীয় কাশীখণ্ডের একখানি পুথি রহিয়াছে। এই সকল প্রমাণে এখনকার প্রচলিত মূল স্বনাপুরাণকে নিতান্ত আধুনিক বলিয়। গ্রহণ করা যায় না । স্কনাপুরাণ যে খৃষ্টীয় ৭ম শতাব্দীরও পূৰ্ব্বে প্রচলিত হইয়াছিল, তাহাতে সন্দেহ নাই । * এতদ্ভিন্ন শঙ্করাচাৰ্য্য মার্কণ্ডেরপুরাণ১ হইতে বচন, খৃষ্টায় সপ্তম শতাব্দীতে বাণ-কর্তৃক মার্কণ্ডেয়পুরাণের দেবীমাহাত্ম্য হইতে বিষয়সংগ্রহ ও পবনপ্রোক্তপুরাণের উল্লেখ,২ বাণের সমসাময়িক ময়ূরভট্টকর্তৃক সৌরপুরাণ হইতে স্বৰ্য্যশতকের বিবরণসংগ্ৰহ, ঐ সময়ে ব্রহ্মগুপ্ত কর্তৃক বিষ্ণুধৰ্ম্মোত্তরপুরাণ অবলম্বনে ব্রহ্মসিদ্ধান্তরচনা, খৃষ্টীয় একাদশ শতাব্দীতে আলবেরুণী কর্তৃক আদিত্য, বায়ু, মৎস্ত, বিষ্ণু ও বিষ্ণুধৰ্ম্মোত্তরপুরাণ হইতে প্রমাণ উদ্ধার, খৃষ্টীয় ১২শ শতাব্দীতে গোঁড়াধিপ বল্লালসেন কর্তৃক তদীয় দানসাগরে ব্রহ্ম, মৎস্ত, মার্কণ্ডেয়, অগ্নি, ভবিষ্য, বরাহ, কুৰ্ম্ম ও বিষ্ণুধৰ্ম্মোত্তরপুরাণ এবং অাদ্য, কালিকা, নন্দি, নরসিংহ ও শাম্ব উপপুরাণ হইতে নানা বচনপ্রমাণাদি দ্বারা অবগুই স্বীকার করিতে হইবে, অধ্যাপক উইলসন ও y অক্ষয়কুমারপ্রমুখ পণ্ডিতগণের মত গ্রাহ্য নহে। অষ্টাদশপুরাণ যে শঙ্করাচাৰ্য্য, বাণভট্ট প্রভৃতির ও পূৰ্ব্বে সঙ্কলিত হইয়াছিল, তাছাতে সন্দেহ নাই। বিষ্ণুপুরাণোক্ত অষ্টাদশপুরাণের উৎপত্তি-পরম্পর্য যদি প্রকৃত হয়, তাহ হইলে অন্ততঃ আপস্তম্বধৰ্ম্মস্বত্র রচিত হইবার পূর্বেই মূল ৯ খানি । পুরাণ সঙ্কলিত হইয়াছিল, তাহী স্বীকার করা ধাইতে পারে । , তাহা হইলে প্রধান প্রধান পুরাণের প্রথম সঙ্কলনকাল বৈদিক । যুগের অব্যবহিত পরেই পড়িতেছে। এখন কথা হইতেছে, তবে কি, যে অষ্টাদশ মহাপুরাণ এখন প্রচলিত দেখা যাইতেছে, এই সকলগুলিই বর্তমানরূপযুক্ত আদ্যোপান্ত সেই পূৰ্ব্বতন কালেও প্রচলিত ছিল ? বর্তমান পুরাণগুলি আলোচনা করিলে, তাহা কখনই স্বীকার করিতে পারা যায় না । প্রকৃত পঞ্চলক্ষণাক্রান্ত ব্ৰহ্মাণ্ড, বিষ্ণু ও মৎস্তপুরাণে ভবিষ্য রাজবংশপ্রসঙ্গে যে সকল ঐতিহাসিক কথা বিবৃত
- পরে স্কন্দপুরাণের বিবরণ দ্রষ্টপা। (2) Prof. Densen's Das System DesVedanta, p (২) বাণভট্টের শ্ৰীহৰ্ষচরিত (নির্ণয়সাগরপ্রেসে মুদ্রিত ) ৯৭ পৃষ্ঠ।
X I Ꮍ 8 % 36 [ అt ] | i পুরাণ হছা, তৎপাঠ্যক্ষ মূল তিনখানি পুরাণকেই কোনক্রমেই খৃষ্টীয় ষষ্ঠ শতাব্দীর পূর্ববর্তী বলিয়া মনে হয় না। ঐ তিন খানি পুরাণেই গুপ্তসম্রাটগণ ও তীtহাদের সমসাময়িক রাজগণের স্পষ্ট প্রসঙ্গ আছে। খৃষ্টীয় ষষ্ঠশতাব্দীর মধ্যভাগে গুপ্তসম্রাট্রগণের গৌরবরবি অস্তমিত হুইয়াছিল। সম্ভবতঃ এই সময়ে পুরাণীয় ভবিষ্য-রাজবংশাখ্যান লিখিত হইয়াছিল । বিশেষতঃ তৎপরবর্তী কালের রাজবংশের প্রসঙ্গ না থাকায়, ঐ সময়ে (৬ষ্ঠ শতাব্দীতে ) ঐ অংশ রচিত হইয়াছিল, তাহীতে অীর সন্দেহ থাকিতেছেন। এখন কথ। এই, ষষ্ঠ শতাব্দীর কথা যখন ঐ তিনখানি পুরাণে পাওয়া যাইতেছে, তখন কি করিয়া বলিব, উক্ত পুরাণগুলি আপস্তম্বধৰ্ম্মপুত্র-রচিত হইবার পূৰ্ব্বে বৈদিকযুগের নিকটবর্তী সময়ে সঙ্কলিত হইয়াছিল ? ইহার উত্তর এই— বালিদ্বীপ হইতে যে ব্রহ্মণগুপুরাণ পাওয়া গিয়াছে, তাহাতে ভবিষ্যরাজবংশপ্রসঙ্গ নাই। ঐ ব্ৰহ্মাওপুরাণে পাণ্ডুবংশীয় জনমেজয়ের প্রপৌত্র অধিলীমকৃষ্ণের নাম পর্যন্ত পাওয়া যায় । পূৰ্ব্বে লিখিয়াছি যে, খৃষ্টীয় ৫ম শতাব্দীতে ভারত হইতে ব্ৰহ্মাওপুরাণ যবদ্বীপে গিয়াছিল। অতএব খৃষ্টীয় পঞ্চম শতাঘীতে যে ব্ৰহ্মাও পুরাণ প্রচলিত ছিল, তাহাতে ভবিষ্যরাজংশবিষয়ক অংশ ছিল না । আমরা ব্ৰহ্মাও পুরাণের যে সকল প্রাচীন পুথি পাইয়াছি, তন্মধ্যে ভবিষ্যরাজবংশ-বর্ণনার পূর্কে এইরূপ শ্লোকাবলী দৃষ্ট হয়— “তস্ত পুত্রঃ শতানীকে বলবান সত্যবিক্রমঃ । ততঃ সুতং শতানীকং বিপ্রাস্তমভ্যtযচয়ৎ ॥ পুত্রোইশ্বমেধদত্তোহভূৎ শতানী কস্য বীর্যবান। পুত্রোইশ্বমেধদত্তান্ধুৈ জাতঃ পরপুরঞ্জয়ঃ ॥ অধিসীমকৃষ্ণে ধৰ্ম্মাত্মা সাম্প্রতোহয়ং মহাযশাঃ । যস্মিন প্রশাসতি মহীং যুয়াভিরিদমাহতম্ ॥ ঢুরাপং দীর্ঘসূত্রং বৈ ঐণি বর্ষাণি পুষ্করম্। বর্ষদ্বয়ং কুরুক্ষেত্রে দৃষদ্বতাং দ্বিজোত্তমঃ ॥" ( ব্রহ্মগু-উপসংহরিপদ ) তাহার ( জনমেজয়ের ) পুত্র বলবান ও সত্যবিক্রম শতানীক । অনস্তর ব্রাহ্মণের সেই শতানীক পুত্রকে রাজ্যে অভিধিক্ত করিয়াছিলেন। শতানীকের অশ্বমেধদত্ত নামে এক বীর্যবান পুত্র জন্মগ্রহণ করেন । এই অশ্বমেধদত্তের পুত্র পরপুরঞ্জয়কারী ধৰ্ম্মাত্মা অধিসীমকৃষ্ণ । এই মহাযশাই এখন পৃথিবী শাসন করিতেছেন। আপনার ইহারই শাসন সময়ে ত্রিবর্ষব্যাপী পুষ্করে এবং এই দুই বর্ষকাল দৃষদ্বতীর তীরে কুরুক্ষেত্রে দীর্ঘযজ্ঞের অনুষ্ঠান করিয়াছেন।