পুরাণ ংস্কৃতবিদ মুইর সাহেব আলোচনা করিয়া বলিয়াছেন,— “ইতিহাস ও পুরাণ গুলিকে প্রাচীনতম সংস্কৃত পুস্তক বলিয়া কখনই গণ্য করা যায় না। কারণ যখন ঐ সকল গ্রন্থ সঙ্কলিত হইয়াছিল, তৎপূৰ্ব্বে বহুতর প্রাচীন গ্রন্থ ও গাথা প্রচলিত ছিল, তাহ ঐ সকল গ্রন্থ পাঠেই জানা যায়।” ”ইতিহাস ও পুরাণসংহিতা হইতে বৈদিক মন্ত্রসমূহ অতি প্রাচীন। বেদ হইতে ভারতের অতিপ্রাচীন ইতিবৃত্তের প্রকৃত জ্ঞানলাভ ছয়, কিন্তু ইতিহাস ও পুরাণসংগ্রহে বহুতর প্রকৃত প্রাচীন প্রবাদমালা ও ঐতিহাসিক তত্ত্ব নিহিত থাকিলেও আধুনিক লেখকদিগের ইচ্ছাক্রমে অনেক কল্পিত কথা প্রক্ষিপ্ত হইয়াছে । কিন্তু বেদে এরূপ ঘটে নাই, অতি প্রাচীনতমকাল হইতে বেদ এ পর্য্যন্ত অপরিবর্তিত রহিয়াছে।”* উপরোক্ত প্রমাণ দেখিলে পুরাণগুলিকে আর প্রামাণিক গ্রন্থ বলিয়া গণ্য করা যায় না ? প্রকৃত কি পুরাণ উপদেশমুলক গ্ৰন্থ নছে ? প্রাচীনতম পুরাণগুলি কি প্রকৃত ধৰ্ম্মগ্রন্থ হিসাবে রচিত হয় নাই ? তৰে বৃহদারণ্যক, ছন্দোগ্য প্রভৃতি উপনিষদে পুরাণ পঞ্চমবেদ বলিয়া গণ্য হইল কিরূপে ? মনুসংহিতায় স্পষ্ট দেখা যাইতেছে যে শ্ৰাদ্ধকালে ব্রাহ্মণদিগকে পুরাণ শুনাইতে হইবে । পুরাণ ধৰ্ম্ম বা উপদেশমূলক গ্রন্থমধ্যে গণ্য ন হইলে এরূপ প্রসঙ্গ থাকিবে কেন ? পুরাণগুলি হুতমুখনিৰ্গলিত হইলেও প্রামাণিক ও অষ্টাদশবিদ্যার অন্তর্গত। ভট্টকুমারিল পুরাণসমূহের প্রামাণিকতা স্বীকার করিয়াছেন। ভগবান শঙ্করাচার্য এ সম্বন্ধে এইরূপ আলোচনা করিয়াছেন— ‘ইতিহাসপুরাণমপি ব্যাখ্য'তেন মার্গেণ সম্ভবনু মন্ত্রার্থবাদমুগত্বtৎ প্রভবতি দেবতাবিগ্ৰহাদি প্রপঞ্চয়িতুম। প্রত্যক্ষমূলমপি সম্ভবতি । ভবতি হি অস্মীকমপ্রত্যক্ষমপি চিরন্তনানাং প্রত্যক্ষম। তথা চ ব্যাসাদয়ে দেবতাভিঃ প্রত্যক্ষং ব্যবহরস্তীতি স্মর্যাতে । যস্ত ক্রয়াদিদানীন্তনানামিব পূৰ্ব্বেষামপি নাস্তি দেবাদিভিৰ্বাবহ সামর্থ্যমিতি স জগদ্বৈচিত্র্যং প্রতিষেধেৎ। ইদানীমিব চ নানাদাইপি সাৰ্ব্বভৌমঃ ক্ষত্রিয়োহস্তীতি ক্ৰয়াৎ। ততশ্চ রাজস্বয়াদিচোদনা উপরন্ধ্যাৎ । ইদানীমিৰ চ কালাস্তরেইপ্যব্যবস্থিতপ্রায়ান বর্ণাশ্ৰমধৰ্ম্মান প্রতিজানীত ততশ্চ ব্যবস্থাবিধায়িশাস্ত্ৰমনৰ্থকং কুর্থাৎ । , তন্মাদ্ধৰ্ম্মোৎকর্ষবশাচ্চিরন্তন দেবাদিভিঃ প্রত্যক্ষং ব্যবজহুরিতি শ্লিষ্যতে । অপি চ স্মরস্তি স্বাধ্যায়াদিষ্টদেবতাসংপ্রয়োগ ইত্যাদি । যোগোপণিমাদ্যৈশ্বৰ্ষাপ্রাপ্তিফলকঃ স্মৰ্য্যমাণে ন শক্যতে সাহসমাত্রেণ প্রত্যাখ্যাতুম। শ্রতিশ্চ যোগমাহাত্মাং প্রত্যাখ্যাপয়তি ।
- Muir's Sanskrit Texts,
[ &७१ ] - পুরাণ পৃথিবীপৃতেজোছনিল-খেলমুখিতে পঞ্চাষ্মকে যোগগুণে প্রবৃত্তে । न उष्ट cनां न अङ्गां न शृङ्ाः etथ्ट ८षांश्iभिभम्। শরীরমিতি । খুবীণামপি মন্ত্রব্রাহ্মণদর্ণিনাং সামর্থ্যং নাম্মীরেন সামর্থেনোপমাতুং যুক্তং তস্মাৎ সমূলমিতিহাসপুরাণং।" ( শারীরকভাষ্য ১।৩।৩৩ ) ইতিহাস ও পুরাণগুলিও যেরূপ ভাবে ব্যাখ্যাত হইয়াছে, মন্ত্রও অর্থবাদমূলক বলিয়া দেবতাবিগ্ৰহাদির প্রপঞ্চনির্ণয়ে সমর্থ। ইহাও সম্ভবপর যে ঐ গুলি প্রত্যক্ষমূলক । আমাদের পক্ষে অপ্রত্যক্ষ হইলেও প্রাচীনদিগের প্রত্যক্ষ হইয়াছিল । এই কারণেই স্মৃতিতে উক্ত হইয়াছে, ব্যাস প্রভৃতি দেবতাদিগের সহিত প্রত্যক্ষরূপে ব্যবহার করিয়াছিলেন। যিনি বলেন, এখানকার লোকদিগের স্থায় প্রাচীনদিগেরও দেবতাদিগের সহিত ব্যবহারে সামর্থ্য ছিল না, তিনি জগৎবৈচিত্র্য প্রতিষেধ করিবেন এবং বলিবেন যে, এখন যেমন কোন ক্ষত্রিয়ই সাৰ্ব্বভৌম নহেন, এইরূপ অন্ত সময়েও এরূপ কোন সাৰ্ব্বভৌম রাজা ছিল না । তাই বলিয়। কেহ রাজস্থয়-যজ্ঞাদির শাস্ত্রবাক্য স্বীকার করিবেন না এবং এখন যেমন বর্ণাশ্রমের অব্যবস্থা, পূৰ্ব্বেও এইরূপই অব্যবস্থা ছিল এইরূপ বুঝিয়া তিনি হয়ত ব্যবস্থাবিধায়ী শাস্ত্রকেও অমর্থক মনে করিতে পারেন । বাস্তবিক ধৰ্ম্মোৎকর্ষবশে পূৰ্ব্বতনের দেবতাদিগের সহিত প্রত্যক্ষ ব্যবহার করিতেন এবং এই জন্তই স্মৃতিতে নির্দিষ্ট হইয়াছে যে, ‘স্বtধ্যায়াদি স্বারাই দেবতার সহিত সম্প্রয়োগ ঘটে ইত্যাদি । এইরূপে যখন স্মৃতিতে যোগই অণিমাদি ঐশ্বৰ্য্যপ্রাপ্তিফলক বলিয়া কথিত রছিয়াছে, তখন এ উক্তি সাহসমাত্র বলিয়া প্রত্যাখ্যানযোগ্য নহে । শ্রীতিও যখন যোগমাহাত্ম্য নির্দেশ করিতেছে—‘পৃথিবী, জল, তেজ, বায়ু ও আকাশসমুথিত পঞ্চাত্মক যোগগুণ প্রবৃত্ত আছে এবং যোগ প্রাপ্ত ব্যক্তির নিমিষ শরীর, তাহার রোগ, জরা বা মৃত্যু নাই।’ এইরূপ আমাদের সামর্থ দেখিয়৷ মন্ত্রব্রাহ্মণদশী ঋষিদিগের সামর্থ্য আমাদিগের সামর্থ্যের সহিত উপমা করাই যুক্তিযুক্ত নহে । তজ্জন্তই ইতিহাস ও পুরাণ সমুলক অর্থাৎ প্রামাণিক । সাম্প্রদায়িক अइ । আদি পুরাণসংহিতা সাৰ্ব্বজনিক গ্রন্থ হইলেও বর্তমান পুরাণগুলি পাঠ করিলে আর সেরূপ বোধ হয় না। প্রত্যেক পুরাণই যেন কোন বিশেষ উদ্দেশসাধনের জন্য রচিত হইয়াছে, নছিলে যখন আমরা দেখি, এক পুরাণের মূলবিষয় সকল পুরাণেই রছিয়াছে, যখন প্রত্যেক মূল পুরাণেরই উদ্দেশু পঞ্চপ্রকার বিষয় বর্ণনা, তখন এতগুলি পুরাণ রচিত হইবার কারণ কি ?