পশুপতি [ ৯৪ ] পশুপতি পশুধৰ্ম্ম (পুং ) পশুনামিব যথেষ্টমৈথুনাদিরূপে ধৰ্ম্মঃ । যথেষ্ট মৈথুনাদি সম্পাদক পশুতুল্যধৰ্ম্ম। “অল্পং দ্বিজৈন্থি বিশ্বপ্তিঃ পশুধৰ্ম্মে বিগতিঃ । মছুষ্যাণামপি প্রোক্তো বেণে রাজ্যং প্রশাসতি ॥” (মমু ৯৬৬) পশুধৰ্ম্ম দ্বিজ ও পণ্ডিতদিগের নিন্দনীয় । রাজা বেশের শাসন সময়ে ইহা মানব-সমাজে প্রবর্তিত হয় । শাস্ত্রে পশুধৰ্ম্ম বিরুদ্ধধৰ্ম্ম বলিয়। উক্ত হইয়াছে। দ্বিজাতিগণ কর্তৃক বিধব, কি নিঃসস্তান নারী পুত্রীর্থে স্বামী ভিন্ন অঙ্গপুরুষগমনে নিযোজিত হইতে পারে না, কারণ যাহারা তাহাদিগকে এরূপ ধৰ্ম্মে নিযুক্ত করেন, তাহারা নিঃসন্দেহে আৰ্যাধৰ্ম্মের উল্লঙ্ঘন করেন। বিবাহের মন্ত্রাদিতে এমন প্রকাশ নাই যে, “একের স্ত্রীতে অন্যের নিয়োগ হইতে পারে’ এবং বিবাহ-সম্বন্ধীয় শাস্ত্রে এমন বিধি নাই যে, বিধবাগণের পুনর্বিবাহ হইতে পারে। ইহাই ভগবান মছু কর্তৃক পশুধৰ্ম্ম বলিয়া অভিহিত হইয়াছে। ( મન્ન જાછ8-છહ ) পশুনাথ (পুং ) পশুনাং নাথঃ তৎ। ১ শিব। ( হেমচ” ) ২ পশুস্বামী । ৩ সিংহ । পশুপ (ত্রি ) পশু পাতি-পা-ক। ১ পশুপালক। ২ পশু দিগের পতি । পশুপতি (পুং ) পশুনাং স্থাবরজঙ্গমানাং পতিঃ । ১ শিব। মহাদেব । পশুপতি নামনিরুক্তি হইবার কারণ এইরূপ লিখিত আছে। “ব্রহ্মাদ্যাঃ স্থাবরাস্তাশ্চ পশবঃ পরিকীর্তিতাঃ । তেষাং পতিৰ্মহাদেবঃ স্কৃতঃ পশুপতিঃ শ্রীতে ॥” (চিন্তামণিধুতবচন) ব্ৰহ্মা আদি করিয়া স্থাবর পর্যন্ত সকলই পশু নামে অভি হিত হয়। মহাদেব এই সকলের পতি, এই জন্ত তিনি পশুপতি নামে অভিহিত হন । বরাহ পুরাণে লিখিত আছে,—
- অহঞ্চ সৰ্ব্ববিদ্যানাং পতিরাদ্যঃ সনাতনঃ । অহং বৈ পতিভাবেন পশুমধ্যে ব্যবস্থিতঃ ॥ অতঃ পশুপতিনাম তং লোকে থ্যাতিমেষাতি ॥” ( বরাহ পু” ) আমিই সকল বিদ্যার আদি ও পতি এবং পশু মধ্যে পতিভাবে বাবদ্ধত, এই জন্ত লোকে আমাকে "পশুপতি" কহে ৷ নকুলীশপাশুপত দর্শনের মতে, পশুপতি মহাদেবই পরমেশ্বর। সৰ্ব্বদর্শন সংগ্রহে লিখিত আছে, জীবমাত্রেই পশুপদ বাচ্য । জীবের অধিপতি বলিয়া পশুপতিই পরমেশ্বর পদবাচ্য । এই দর্শনের মত এই যে, “কোন বিষয় সম্পাদন করিতে হইলে, আমাদিগকে যেমন হস্তপদাদির সহায়তা অবলম্বন করিতে হয়, সেইরূপ পশুপতি পরমেশ্বর অঙ্ক কোন বস্তুর সহায়তা অবলম্বন না করিয়াই জগজ্জাত পদার্থসমূহ
নিৰ্ম্মাণ করিয়াছেন। অন্মদাদির দ্বারা যে সকল কাৰ্য্য হইতেছে, তাহারও কারণ সেই পশুপতি । এইজগু তাহাকে সৰ্ব্বকার্যোর মূল কারণ বলা যাইতে পারে । ( বিশেষ বিবরণ পাশুপত শষে দেখ । ] শৈবদর্শন মতেও পশুপতি-শিবই পরমেশ্বর এবং জীবগণ পশু পদবাচ্য ; কিন্তু নকুলীশ পাশুপত-দর্শনের মতানুসারে মহাদেবের কৰ্ম্মাদি নিরপেক্ষ-কর্তৃত্ব-সম্পন্ন বলিয়া নির্দেশ করিয়াছেন । শৈবদর্শনে এই মত স্বীকৃত হয় নাই। এই মতে যে ব্যক্তি যেরূপ কৰ্ম্ম করিয়াছে, পরমেশ্বর শিব তাহীকে সেইরূপ ফল প্রদান করিবেন, ইহা যুক্তিসিদ্ধ। এই দর্শন-মতে পশু, পতি ও পাশ ভেদে পদার্থ তিনপ্রকার স্থিরীকৃত হইয়াছে । পতি পদার্থ ভগবান শিব এবং র্যাহারা শিবত্বপদ প্রাপ্ত হইয়াছেন। পশু শব্দে জীবাত্ম । এই জীবাত্মা মহৎ, ক্ষেত্রজ্ঞাদি পদবাচ্য, দেহাদিভিন্ন সৰ্ব্বব্যাপক, নিত্য, অপরিচ্ছিন্ন, ফুঙ্কের ও কর্তাস্বরূপ। এই পগুপদার্থ৪ জাবার তিন প্রকার বিজ্ঞানকল, প্রলয়াকল এবং স-কল। একমাত্র মলস্বরূপ পাশযুক্ত জীবকে বিজ্ঞানকল কহে এবং মল ও কৰ্ম্মরূপ পাশদ্বয়যুক্তকে প্রলয়াকল এবং মল, কৰ্ম্ম এবং মায়। এই পাশত্রর বন্ধকে স-কল কহে । ইহার মধ্যে সমাপ্তকলুষ ও অসমাপ্তকলুষ ভেদে বিজ্ঞানাকল জীবও দুই প্রকার। তন্মধ্যে সমাপ্তকলুষ বিজ্ঞানকল জীবকে পরমেশ্বর অনুগ্রহ করিয়া অনন্ত, স্বক্ষ, শিবোত্তম, একনেত্র, একরুদ্র, ত্রিমূৰ্ত্তিক, শ্রীকণ্ঠ এবং শিখণ্ডী, এই সকল বিদ্যেশ্বর পদে নিযুক্ত করেন। আর অসমাপ্তকলুষদিগকে মন্ত্রস্বরূপ করেন। ঐ মন্ত্র সাতকোটি । প্রলয়াকল জীব ও দুই প্রকার । পঙ্কপাশদ্বয় ও অপকপাশদ্বয় । পকপাশদ্বয়ের মুক্তিপদ প্রাপ্তি হয় এবং অপকপীশদ্ধয়কে পূৰ্য্যটকদেহ ধারণ করিয়া স্বকৰ্ম্মানুসারে তির্যক্ৰমনুষ্যাদি বিভিন্ন যোনিতে জন্মগ্রহণ করিতে হয় । ( সৰ্ব্বদর্শন স” ) এই দর্শনের অস্তান্ত বিবরণ পাশুপত ও শৈবদর্শন শব্দে দেখ। ] ২ হুতাশন, অগ্নি । “পিনাকিনি হুতাশনে" (হেম) ৩ ওষধি। “তমব্ৰবীৎ পশুপতিরসীতি। তদযদস্য তন্নামাকরোদোষধয়স্তদ্ৰুপমভবশ্লেtষধয়ো বৈ পশুপতিস্তন্মাদ্যদাশপব শুষধীলভস্তেইথ পতীয়স্তি ।” (শত• ব্রা ৬১।৩।১২ ) ৪ নেপালদেশস্থিত শিবলিঙ্গ ভেদ, এই পীঠস্থান পশুপতি নামে বিখ্যাত । “নেপালে চ পশুপতিঃ কেদারে পরমেশ্বরঃ ।” (মহলিঙ্গ তন্ত্র শিবের শত নাম স্তোত্র ) পশুপতি, একজন গ্রন্থকার। ইনি বঙ্গেশ্বর লক্ষ্মগুসেনের গুরু হলায়ুধের জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা ও বাৎস্ত গোত্রীয় ধনঞ্জয়ের পুত্র। তিনি শ্ৰাতৰ ও পশুপতি-পদ্ধতি এই দুইখানি গ্রন্থ রচনা করেন।