মন্ত্র [ ১৩৭ ] 酸 মন্ত্র ৩ গুপ্তিবাদ,গোপনে কর্তবাবধারণ, চলিত মন্ত্রণ,পরামর্শ। বিকৃতাঙ্গ প্রভৃতি ব্যক্তির নিকট মন্ত্রণ গ্রহণ করিতে নাই। “ব্যঙ্গাঙ্গহীন বধিরাঃ কুযোনিষু রতাশ্চ যে। তেষাং মস্ত্রো ন সুখদঃ প্রোক্ত: কবিভিরেব চ। কামুকানাং জড়ানাঞ্চ স্ত্রীজিতানাং তথৈব চ। খগুরস্ত গুহে নিত্যং জামাতা কৰ্ম্মকারকঃ । তস্তাপি ন ভবেন্মন্ত্র; কাৰ্য্যসিদ্ধে কদাচন ॥” (জৈমিনিভারত অশ্বমেধপর্ক ২ অধ্যায় ) বিকৃতাঙ্গ, অঙ্গহীন, বধির, কুযোনিতে রত, কামুক, জড়, স্ত্রৈণ ও শ্বশুরগুহে কৰ্ম্মকারক জামাত এই সকল ব্যক্তির মন্ত্রণায় কোন কার্য্য সিদ্ধ হয় না । [ বিশেষ বিবরণ মন্ত্রণ। শব্দে দেখ । ] ৪ দেবাদির সাধন। মন্ত্র দ্বারাই দেবাদির জারাধনা করা হইয়া থাকে । মীমাংসাদৰ্শন-প্রতিপাদিত মন্ত্রাত্মকই দেবতা। দেবতাই মন্ত্রস্বরূপ । মীমাংসায় লিখিত আছে, দেবগণ শরীরী বা সচেতন নহেন। যে দেবতার যে মন্ত্র বেদে নিদিষ্ট হইয়াছে, সেই দেবতা সেই মন্ত্রস্বরূপ। মন্ত্রাতিরিক্ত দেবতার সত্তা সম্বন্ধে কোন প্রমাণ নাই । বরং তদ্বিরোধী প্রমাণই বহুতর অাছে। যদি মন্ত্র ভিন্ন একজন শরীরী দেবতা থাকেন, এবং সেই দেবতার পুজা সময়ে তিনি আবাহনাদি দ্বারা করুণাপুৰ্ব্বক ঘটে কিংবা প্রতিমাদিতে অধিষ্ঠিত হইয়া পুজাদি গ্রহণ করেন, তাহা হইলে সে ঘটে বা সে মৃন্ময় প্রতিমাদিতে তাহার সমাবেশ সম্ভবে না। কারণ, ইন্দ্রের পুজায় তাহাকে ঘটে বা মুগ্ময় প্রতিমায় আবাহন করিলে ঐরাবতের সহিত তিনি যদি তাহাতে প্রবেশ করেন, তবে ঐ ঘট বা মৃৎপ্রতিম ঐরাবতের সহিত ইন্দ্রদেবের ভারবহনে অশক্ত হহয়া নিঃসন্দেহে চূর্ণ হইয়া যায়। আর কি প্রকারেই বা অল্প পরিমিত ঘটে তাদৃশ বৃহদাকার ঐরাবতের সহিত ইন্দ্রদেবের অধিষ্ঠান সম্ভবে ? এই সকল দোষ পরিহারের জন্য দেবতাকে মন্ত্রাত্মক ৰলিলে আর কোন গোল থাকে না । এইজন্ত মীমাংসা-দর্শনে প্রতিপাদিত হইয়াছে,মন্ত্রই দেবতা, বে দেবতার পূজাদি করিতে হয়, মন্ত্র পাঠ করিয়া করিলেই তাহা সিদ্ধ হইয়া থাকে। মন্ত্র ভিন্ন পূজাদি হইবে না। দেবতাদিগের স্তুতিবাচক শব্দ প্রয়োগ করিলেই যে মন্ত্র হইবে, তাহ। নহে । কারণ বেদে প্রত্যেক দেবতার বিভিন্ন মন্ত্র নির্দিষ্ট হইয়াছে। সেই সেই মন্ত্রই তত্ত্ব দেবতার স্বরূপবোধক । ঐ সকল নির্দিষ্ট মন্ত্রে পুজাদি করিতে হইবে । ( মীমাংসাদর্শন) মন্ত্রশস্কোর ব্যুৎপত্তি— “মননাং ত্রায়তে ধম্মাৎ তন্মান্মস্থঃ প্রকীৰ্ত্তিতঃ ” (আহিকতৰ) XIV vt মনন হইতে ত্রাণ করে, এইজন্ত মন্ত্র নামে অভিহিত হয় । যাহারা মন্ত্রদীক্ষিত নহে, শাস্ত্রে তাছাদের নিন্দ জাঁছে । “অদীক্ষিতানাং মর্ত্যানাং দোষং শৃণু বরাননে। অন্নং বিষ্ঠাসমং তস্ত জলং মূত্রসমং স্থতম্। তৎকৃতং তস্ত বা শ্ৰাদ্ধং সৰ্ব্বং যাতি হধোগতিম্।”(মৎস্তস্থ•) যে সকল ব্যক্তি মন্ত্রদীক্ষিত নহে, তাহাদের অল্প বিষ্ঠার স্যায়, জল মুত্রতুল্য এবং তাহাদের কৃত সমুদয় কাৰ্য্যই নিষ্ফল । জীব জন্ম পরিগ্রহ করিয়া নিয়ত সংসারদুঃখ ভোগ করিতেছে, জন্মের পর মৃত্যু, মৃত্যুর পর জন্ম, ইহা জীবের অবশুম্ভাবী, ইহার হাত হইতে নিষ্কৃতিলাভের উপায় নাই। স্বপ্নদর্শী ঋষিগণ জাবের এই ভবদুঃখমোচনের জন্য ভগবন্ধুপাসনার প্রণালী উদ্ভাবন করিয়াছেন। একমাত্র ভগবদারাধন দ্বারাই জীবের সকল দুঃখ নিবৃত্তি হয়। বেদাস্তাদি নান। শাস্ত্রে এই সকল উপাসনাপ্রণালী প্রকটিত হইয়াছে। এই উপাসনা শ্রবণ, মনন ও নিদিধ্যাসনরূপ। কিন্তু শ্রবণ-মননাদি দুৰ্ব্বল ব্যক্তির পক্ষে অতীব দুঃসাধ্য, এই জন্তু তাহাদিগের পক্ষে সগুণোপাসনাহ একান্ত বিধেয় । দুৰ্ব্বলাধিকারীর পক্ষে সগুণোপাসনা ব্যতীত আর কিছু মাত্র দুঃখনিবৃত্তির উপায় নাই ! এইজন্ত সগুণোপাসনা শাস্ত্রে প্রশংসিত হইয়াছে। এই সগুণোপাসন মন্ত্রসাধ্য অর্থাৎ মন্ত্র দ্বারাই এই উপাসনা হইয় থাকে, এইজন্য শ্ৰুতি, স্মৃতি, পুরাণ ও তন্ত্রাদিতে মন্ত্র সকল নিদিষ্ট হইয়াছে। ঐ সকল মন্ত্রে দেবতাদিগের পুজ জপ প্রভৃতির অনুষ্ঠান করিলে জীবের চিত্তশুদ্ধি হয় । চিত্তশুদ্ধি হইলে অনায়াসেই জীব সংসারসাগর পার হইতে সমর্থ হইয়৷ থাকে। অতএব মন্ত্রই সাধারণ মানবের উদ্ধারের উপায় । বৈদিকোপাসনা এক্ষণ বিলুপ্তপ্রায় । কাজেই বৈদিক মস্ত্রের দুৰ্দ্দশাও তদনুরূপ। অনেক বৈদিক মন্ত্র যথাযথ উচ্চারিতই হয় না, তাহার অর্থবোধ ত দূরের কথা। এক্ষণে তান্ত্রিক ও পৌরাণিক উপাসনাপ্রণালী অনুষ্ঠিত হইয়া থাকে। এইজন্তু তন্ত্রোক্ত মন্ত্রাদির বিষয় একটু বিশেষভাবে আলোচনা করা হইল । “মথ যদ্যপি প্রতিস্থতিপুরাণোপপুরাণসংহিতাদাবধওপ্রকাণ্ডে বিহিতানেকবিতণ্ডে। যিবিধোপাসনাকাণ্ডে বিস্ততে তথাপি কলাকাগুফলদায়কত্বাং সুগমোপায়ত্বাচ্চ মাগমোক্ত বিধিন উপাসনং নিরূপতে । মহানিৰ্ব্বাণতন্ত্রে দ্বির্তীয়োল্লাসে– ‘বিন হাগমমার্গেণ কলে নাস্তি গতিঃ প্রিয়ে ।
পাতা:বিশ্বকোষ চতুর্দশ খণ্ড.djvu/১৩৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।