মন্ত্র ● বর্ষদ্বয়েন রাজস্তে বৈগুস্তু বৎসরৈস্ত্রিভি; ॥ • চতুভিবৎসরৈঃ শূদ্র: কথিত শিষ্যযোগ্যতা ॥” (তন্ত্রসার ) ইহার মধ্যে একটু বিশেষ এই যে, স্বপ্নলব্ধ মন্ত্রে কোন নিয়ম নাই। অর্থাৎ গুরু যদি শিষ্যকে স্বপ্নলব্ধ মন্ত্র প্রদান করেন, তাহ হইলে পূৰ্ব্বোক্ত নিয়মানুসারে শিষ্যকে পরীক্ষা করিবার আবখ্যক নাই । “স্বপ্নে তু ন কালনিয়মঃ, স্বপ্নে তু নিয়মে ন হি ।” (তন্ত্রসার ) মন্ত্র, দেবতা ও গুরু এই তিনের ভেদজ্ঞান করিতে নাই। ক্ষলি কালে তন্ত্রোক্ত বিধানক্রমে দেবতার আরাধনা করিবে, কারণ সত্যযুগে বেদোক্ত, ত্রেতাযুগে স্মৃত্যুক্ত, দ্বাপরে পুরাণোক্ত ও কলিকালে তন্ত্রোক্ত কাৰ্য্যই বিহিত হইয়াছে । কলিযুগের ব্রাহ্মণগণ অপবিত্র ও শূদ্রাচারতৎপর, সুতরাং তন্ত্র ভিন্ন বেদাদি কার্য্যে তাহাদের সিদ্ধি নাই। এইজন্ত গুরু তন্ত্রোক্ত মন্ত্র শিষ্যকে প্রদান করিবেন । “আগমোক্তবিধানেন কলেী দেবান যজেং সুধী । ন হি দেবাঃ প্ৰসীদন্তি কলে চান্তবিধানতঃ ॥ কৃতে শ্রাতু্যক্ত মাৰ্গ: স্ত্যাৎ ত্রেতায়াং স্মৃতিসম্ভবঃ । দ্বাপরে তু পুরাণোক্ত; কলাবাগমসম্মতঃ ॥ অশুদ্ধাঃ শূদ্র কৰ্ম্মাণ: ব্রাহ্মণা: কলিসস্তবাঃ । তেষামাগমমার্গেণ সিদ্ধিন শ্রেীতবস্তু ন ॥ মন্ত্রার্থ দেবতা জ্ঞেয় দেবতা গুরুরূপিণী । তেষাং ভিদ ন কৰ্ত্তব্য যাচ্ছেচ্ছ,ভমাত্মন: ॥” (তন্ত্রসার) মন্ত্রগ্রহণে একটু বিশেষত্ব এই, উদাসীন ব্যক্তি উদাসীনের নিকট, বনস্থ বনবাসীর নিকট, যতি যতির নিকট, গৃহস্থ গৃহস্থের নিকট ও বৈষ্ণব বৈষ্ণবের নিকট মন্ত্রগ্রহণ করিবে। গৃহস্থ কখন উদাসীন ও সন্ন্যাসী প্রভৃতির নিকট মন্ত্রগ্রহণ করবেন না। আজকাল কেহ কেহ সন্ন্যাসীর নিকট মন্ত্রগ্রহণ কল্পিয় থাকেন। কিন্তু ইহার মধ্যে আরও একটু বিশেষত্ব এই যে, শাক্তের নিকট শাক্ত, বৈষ্ণব ও শৈব এই তিন জনই মন্ত্রগ্রহণ করিতে পারিবেন। “উদাসিনোইপুদাগিনাং বনস্থো বনবাসিনঃ। যতীনাঞ্চ যতিঃ প্রোক্তা গৃহস্থানাং গুরুগৃধ ॥ বৈষ্ণবে বৈষ্ণবে গ্রাহ: শৈবে শৈবস্তথা পুনঃ । শক্তিকে ত্রিতয়ং বিদ্যান্ধীক্ষণস্বামী ন সংশয়ঃ ॥ গুরুরপি গৃহস্থ এব কুলার্ণবে— সৰ্ব্বশাস্ত্রার্থবেত্ত চ গৃহস্থে। গুরুরুচ্যতে । কলত্রপুত্রবান বিপ্রো দয়ালুঃ সৰ্ব্বসম্মতঃ । দৈবে পিত্রেইরিমিত্রে চ গৃহস্থো দেশিকে। ভবেৎ ॥”(তন্ত্রসার) করশাস্ত্রে লিখিত হইয়াছে, স্ত্রীপুত্রবানু, দয়ালু, ও সৰ্ব্ব [ ১৪০ J মন্ত্র প্রিয়, জ্ঞানবান ব্রাহ্মণকে গুরু করিয়া তাহার নিকটই মন্ত্র গ্রহণ করিবে । পিত্রাদির নিকট মন্ত্রগ্রহণ করিতে নাই । যোগিনীতন্ত্রে লিখিত আছে,-পিতা, মাতামহ, কনিষ্ঠ সহোদর ও শত্রুপক্ষাশ্রিত এই সকল ব্যক্তির নিকট মন্ত্র গ্রহণ করিবে না, কারণ গণেশবিমৰিণীতন্ত্রের বচনানুসারে যতি পিতা, বনবাসী ও উদাসীন ইহাদিগের নিকট মন্ত্রগ্রহণ করিলে তাহদের আকল্যাণ হয়। রুদ্রযামলে কথিত আছে,—পতি স্বীয় ভাৰ্য্যাকে ; পিতা পুত্র ও কন্যাকে এবং ভ্রাতা সহোদরকে মন্ত্র দিবেন না । পতি যদি সিদ্ধমন্ত্র হন, তবেই তিনি পত্নীকে মন্ত্র দিবেন। পিত্রাদির নিকট যে মন্ত্রগ্রহণ নিষিদ্ধ হইয়াছে, তাহ সিদ্ধমন্ত্র ভিন্ন অন্য স্থলে বুঝিতে হইবে। পিত্রাদি যদি সিদ্ধমন্ত্র হন, তাহা হইলে তাহাদের নিকট মন্ত্রগ্রহণ করা যাইতে পারে। যতি প্রভৃতির নিকট যদি সিদ্ধমন্ত্র পাওয়া যায়, তাহা হইলে অনায়াসেই তাহাদিগের নিকট মন্ত্র লওয়া যাইতে পারে। -“পিতুম মুং ন গৃষ্ট্ৰীয়াৎ তথা মাতামহন্ত চ। সোদরস্ত কনিষ্ঠস্ত বৈরিপক্ষাশ্রিতস্ত চ | তথাচ গণেশবিমৰ্ষিণাং— যতেদীক্ষা পিতুর্দীক্ষা দীক্ষা চ বনবাসিনঃ ॥ বিবিত্তাশ্রমিণে দীক্ষা ন স কল্যাণদায়িকা ৷ রুদ্রযামলে— ন পত্নীং দীক্ষয়েস্তুর্তা ন পিতা দীক্ষয়েৎ সুতাম্। ন পুত্রঞ্চ তথা ভ্রাতা ভ্রাতরং ন চ দীক্ষয়েৎ ॥ সিদ্ধমস্ত্রে। যদি পতিস্তদা পত্নীং স দীক্ষয়েৎ। ইত্যাদি নিষেধবচনাদেভ্যো মন্ত্ৰং ন গৃষ্ট্ৰীয়াৎ, ইদস্তু সিদ্ধেতরবিষয়ং, সিদ্ধমন্ত্রে ন দুষ্যতীতি বচনাৎ, যতেরপি দীক্ষোক্ত শক্তিজামলে— “তীর্থাচারযুতো মন্ত্রী জ্ঞানবান মুসমাহিতঃ। . নিত্যনিষ্ঠে যতিঃ খ্যাতে গুরুঃ স্তান্ত্রেীতিকোহপি চ । যদি ভাগ্যবশেনৈব সিদ্ধবিদ্যাং লভেৎ প্রিয়ে । তদৈব তাস্তু দীক্ষেত ত্যক্ত গুরুবিচারণম্।।” (তন্ত্রসার ) সিদ্ধমন্ত্রাতিরিক্ত মন্ত্র যদি পিত্রাদির নিকট লওয়া হয়, তাহা হইলে প্রায়শ্চিত্ত করিয়া পুনরায় মন্ত্র গ্রহণ করিতে হইবে। দশ হাজার গায়ত্রী জপ করিলে উহার প্রায়শ্চিত্ত হইবে । মৎস্তস্থক্তে লিখিত আছে,—পিতার মন্ত্র নিবীৰ্য্য, অর্থাৎ তাহার নিকট মন্ত্রগ্রহণ করিয়া ঐ মন্ত্র জপাদি করিলে কোন ফল হয় না। আর একটু বিশেষ আছে যে, শৈব ও শাক্ত
পাতা:বিশ্বকোষ চতুর্দশ খণ্ড.djvu/১৪০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।