মাইকেল মধুসূদন দত্ত সময়কার প্রচলিত কতকগুলি ৰাঙ্গালী পুস্তক ও সংস্কৃত নাটক সংগ্ৰহ করিয়া আনিয়া বিশেষ মনোযোগের সহিত পাঠ আরম্ভ করিলেন । ইহার কএকদিন পরেই তিনি শৰ্ম্মিষ্ঠ নাটকের পাণ্ডুলিপির কিয়দংশ গেীরদাস বাবুকে দেখান। যে মধুসূদন হুগলী নৰ্ম্মাল স্কুলের শিক্ষকতার জন্য প্রতিযোগী পরীক্ষায় পৃথিবীস্থলে প্রথিবী’ লিখিয়া ছিলেন, আজ সেই ইংরাজী-নবিশ মাজাজী সাহেবকে বাঙ্গালা ভাষায় গ্রন্থরচনা করিতে দেখিয়া প্রতাপচন্দ্র ও যতীন্দ্রমোহন বিস্মিত হইলেন । ইহঁাদিগের উৎসাছে কএক সপ্তাহ মধ্যে শৰ্ম্মিষ্ঠার অবশিষ্টাংশ সম্পূর্ণ হইল। শৰ্ম্মিষ্ঠায় মধুসূদন প্রাচীন সংস্কৃত নাট্য ও অলঙ্কার শাস্ত্রের ব্যত্যয় ঘটাইয়া কিয়ুৎ পরিমাণে হংরাজী-রীতি প্রবর্তন করিয়া যান। শৰ্ম্মিষ্ঠার পর তাহার পদ্মাবতী গ্রীক পুরাণের ছায়াবলস্বনে রচিত হয় । প্রথম রচনা শৰ্ম্মিষ্ঠ হইতে তাহার পদ্মাবতার ভাষা নাটক রচনার অধিক উপযোগী হয়। ইহাতে তিনি গদ্য ও পদ্য উভয়ই ব্যবহার করিয়াছেন । ঐ পদ্যগুলি অমিত্রাক্ষর ছন্দে লিথিত । ১৮৫৭ খৃষ্টাব্দের প্রারম্ভে শৰ্ম্মিষ্ঠানাটক প্রকাশিত হয় । ঐ সময়ে বাঙ্গাল কবিতায় অমিত্রাক্ষরছন্দ-ব্যবহার লইয়া মধুস্বদদের সহিত মহারাজ যতীন্দ্রমোহনের বাদামুবাদ হয়। মধুসূদন বাঙ্গালায় অমিত্রাক্ষরচ্ছন্দে পদ্মাবতীর কলিদেবের অংশমাত্র রচনা করিয়াছিলেন। শৰ্ম্মিষ্ঠার পর তিনি ১৮৫৯-৬০ খৃষ্টাব্দের মধ্যে যথাক্রমে “একেই কি বলে সভ্যতা,” “বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোয়া” নামক প্রহসন স্বয়, ‘পদ্মাবতী’ নাটক এবং ‘তিলোত্তমাসম্ভবকাব্য’ প্রণয়ন করেন । এ সকল গ্রন্থেও তিনি প্রাচীন রীতির পক্ষপাতী না হইয়। বরং পাশ্চাত্য গ্রন্থকারদিগের প্রবৰ্ত্তিত রীতিরই অনুসরণ করিয়াছিলেন । ১৮৬১ খৃষ্টাব্দে তিনি বঙ্গ সাহিত্যে স্ব প্রসিদ্ধ মেঘনাদবধ কাব্য রচনা করেন। ভাষার লালিত্য, ভাবের উৎকর্ষ ও গাম্ভীৰ্য্য এবং চরিত্রসমূহের পূর্ণতা গুণে এই গ্রন্থ খানি সৰ্ব্বোৎ কৃষ্ট হইয়াছে। এই সময়ে একদিকে যেমন র্তাহার প্রতিভার পুর্ণবিকাশ হইয়াছিল, অপরদিকে তেমনই তাহার পাশ্চাত্য ভাবপ্রবণতাও সম্পূর্ণরূপে পুর্ণতা লাভ করিয়াছিল। মেঘনাদবধে রামচন্দ্রের যমালয় দর্শন, প্রমিলার বিক্রম প্রভৃতি বর্ণনা যুরোপীয় সাহিত্য হইতে গৃহী হইয়াছে । সমালোচনাভাগে তাছার কতকাংশ উদাহরণস্বরূপ বিবৃত করা গিয়াছে । পাশ্চাত্য মহাকবিগণের কাব্যের আদর্শ, স্বদেশীয়দিগের সম্মুখে উপস্থিত করা ভিন্ন, বিদেশীয় ভাবের অনুকরণ বা [ ৫১১ ] মাইকেল মধুসূদন দত্ত সাম্যতাসম্পাদন তাহার অভিপ্রেত ছিল,তাহার এই দক্ষতাসম্বন্ধে রাজনারায়ণ বসু ও মহারাজ যতীন্দ্রমোহন বলিয়াছিলেন, “Whatever passes through the crucible of the author's mind receive an original shape” wroforio মধুসূদন মেঘনাদ রচনা করিয়া বঙ্গ সাহিত্যে এক নুতন আলোক প্রদান করিয়াছেন। মুপ্রিসিদ্ধ রমেশচন্দ্র দত্ত মহাশয়ও মেঘনাদবধ সম্বন্ধে লিখিয়াছেন,—'Will candidly proudunce the bold author to be indeed a genius of a very high order, second only to the highest and the greatest that have ever lived like Vya8, Walmiki or Kalida8, Shakespeare.” মধুমক্ষিকার স্থায় নানাদেশীয় কাব্যকুসুম হইতে উপাদান ংগ্ৰহ করিয়া তিনি যে অপূৰ্ব্ব মধুচক্ৰ নিৰ্ম্মাণ করিয়া গিয়াছেন, যতদিন বাঙ্গালা ভাষা থাকিবে, ততদিন বঙ্গবাসী সত্য সত্যই তাহ!— “আনন্দে করিবে পান স্বধী নিরবধি ।” মেধনাদবধের পর তাহার প্রফুটিত কাব্যকুমুম ‘ব্ৰঞ্জাत्रना’ क८% शॉन ७थांशुं श्हेग्नांझिग । थुठेथईोंदणत्रौ रुहेग्रां७ মধুসূদন যে বৈষ্ণব মহাজনোচিত উচ্চভাবের অবতারণা করিয়া গিয়াছেন, ইহা তাহারই অসামান্য প্রতিভার পরিচয়স্থল বলিতে হইবে । তদনস্তর তিনি টডের রাজস্থান হইতে বিয়োগাস্ত কৃষ্ণকুমারী নাটক প্রণয়ন করেন । রাজকাৰ্য্য, পুস্তক বিক্রয়ের আয় এবং পৈতৃক সম্পত্তির আয় হইতে পত্নী পুত্র ও কস্ত। লইয়। তাহার সংসারযাত্র। কণ্ঠে নিৰ্ব্বাহ হইলেও তিনি হৃদয়ের বিষম যন্ত্রণায় দগ্ধ হইতেন । এই সময়ের ( ১৮৬১ খৃঃ অঃ আশ্বিন মাসের ) তত্ত্ববোধিনী পত্রিকায় তিনি সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের অনুরোধে ‘আত্মবিলাপ’ লিখিয়া সে ভাব ব্যক্ত করিয়া গিয়াছেন । অতঃপর ১৮৬২ খৃষ্টাব্দে তিনি স্বপ্রসিদ্ধ রোমক কবি ওভি দের ধীরপত্রাবলী ( Heroic Epistles) অবলম্বনে বীরাঙ্গন৷ কাব্য প্রণয়ন করেন। বীরাঙ্গন কাব্য মধুসূদনের প্রতিভার পূর্ণ বিকাশের দৃষ্টান্তস্থল। ইহার পর হইতে তাহার প্রতিভার অধোগতি আয়ন্ধ হয়। মধুসূদনের পত্রপাঠে জানা যায় যে, তিনি যতীন্দ্রমোহনের অনুরোধে মহাভারতীয় এবং রাজনারায়ণ বাবুর অনুরোধে সিংহল-বিজয় বৃত্তাস্ত অবলম্বনে দুই খানি কাব্য রচনা করিতে মনস্থ করেন। ঐ দুইখানি গ্রন্থঃ অসম্পূর্ণ রহিয়া যায়। গ্রন্থদ্বয়ের প্রারম্ভক কবিতার কএক চরণ মাত্র নিয়ে উদ্ধৃত করা গেল,— Homer, Dante or
পাতা:বিশ্বকোষ চতুর্দশ খণ্ড.djvu/৫১১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।