ভঙ্গী [ २88 ] उष्क्रौ ইহাই সত্যযুগের কুর্সি ত্রেতা, দ্বাপর ও কলিযুগে ঐক্লপ সোণাস্থানে যথাক্রমে রূপা, তামা ও মৃত্তিকার উল্লেখ আছে। অনন্তর চিড়া, ঘুত, পান, লবঙ্গ ও দারুচিনি প্রভৃতি গন্ধদ্রব্য লইয়া লালবেগের পূজা করিতে হয়। শেখ-ভঙ্গাদিগের বিবাহ অনেকাংশেই মুসলমানদিগের সাধি বা নিকার অনুরূপ। হিন্দুশাখার মধ্যে প্রথমে ঘটক ( বিচেলিয়া ) দ্বারা সম্বন্ধ ও কন্যাপণ স্থির হইলে শুভলগ্ন ধার্য্য হয় । ঐ দিন একটা ভোজ হইয়া থাকে। তৎপরদিন বরের গৃহে ও তাহার একদিন পরে কন্যার গৃহেও একটা বিবাহমঞ্চ স্থাপিত হয়। ব্রাহ্মণগণ সাইট্র’ ( শুভদিন ) নির্দেশ করিলে, বরপক্ষীয়গণ বর লইয়া কন্যার গৃহে যায়। তথন কন্যাকৰ্ত্ত। তাহাদের বসিবার স্থান দিয়া একহাড়ি অর ধরের সন্মুখে মানিয়া দেয়, বরের বন্ধুরা উহার আস্বাদ গ্রহণ করিলে বরকর্ড তাহার মধ্যে ৫টা পয়সা দিয়া থাকেন। তৎপরে দুয়ারবাড়-প্রথা অর্থাৎ দ্বারদেশের একপাশ্বে বর ও কস্তা dাড়াইয়া পরস্পরকে অবলোকন করিবেন। উভয়ের মধ্যে চাদর ব্যবধান থাকে, অনস্তুর যথারীতি বরণ আরম্ভ হয় এবং তিলক দানের পর গীট-বন্ধন হইলেই বিবাহ কাৰ্য্য সমাধা হয়। ৰাবাদী-আখাধারী সাধুচেতা জনৈক ভঙ্গী অথবা বরের ভগিনীপতি এই বন্ধনের একমাত্র অধিকারী। পরদিন প্রাতঃকালেই বর-কন্যার ‘বিদায়’ । ঐ সময়ে বর কন্যা পক্ষীয় গুরুজনদিগকে নমস্কার করিলে অবস্থানুরূপ যৌতুকলাভ করিয়া থাকে । তংপরে তথাকার নাপিতনী, রঞ্জকিনী ও ধা ঐদিগকে কিছু পারিতোষিক দিয়া বর ফিরিয়া আইলে । পিতৃ গৃহে আসিবার পর ৪ দিন পর্যান্ত বরকন্যার অার সাক্ষাৎ হয় না । ৪র্থ দিনে বরপক্ষীয় সকল স্ত্রীলোকের একত্র ইষ্টয় একটী কম্বলের উপর বর ও কন্যাকে পরস্পরের সন্মুখীন করিয়া বাসাইয়া লজ্জা ভাঙ্গাইয়া দেয়। ইহাদের মধ্যে ও বিবাহ-বন্ধনচ্ছেদের ব্যবস্থা আছে । স্বামী ধৰম ভঙ্গ, কুষ্ঠ, বা উন্মাদরোগগ্ৰস্ত হইলে স্ত্রী বিচ্ছেদপ্রার্থনা করিতে পারে ; কিন্তু এই বিচ্ছেদের জন্য তাহাকে ৫ কিংবা ১৪ টাকা নগদ ও সামাজিক সভাকে ভোজ দিতে কষ্টবে। উক্ত সভাই বিবাহ বন্ধন চুক্তি করিতে একমাত্র মধিকারী । কিন্তু সকল স্থানের ভঙ্গীদিগের মধ্যে এরূপ প্রথা নাই । শরীরগত রোগে স্বামী-পরিত্যাগ বিহিত নছে । পীর চরিত্র ফুষ্ট হইলে তাছাকে ত্যাগ করা যায়। কখন কখন ঐ রমণীকে জাতি-বকিঙ্কত করিয়া দেওয়া হয়। বিধবা রমণীকে তাহার দেবর বিবাহ করিতে পারে। যদি কোন বিধবা রমণী অপর কাহাকে ৎ বিবাহ করে, তাহা হইলে সে তাহার পূর্ধ্বস্বামীর সম্পত্তিরও অধিকারিণী হইয় থাকে ; কিন্তু শেখ ও গাজীপুরি-রাবতদিগের মধ্যে অপরে বিবাহিত বিধবা রমণীর এরূপ সম্পত্তি ভোগের অধিকার নাই। গর্ভাবস্থায় রমণীগণ গলায় একটা টাকা বাধিয়া রাখে। তাহাদের বিশ্বাস, ইহাতে উপদেবতাগণ ঐ গভিণীর উপর কোনও অত্যাচার করিতে পারে না। পাচ বা সাতমাসে তাহারা সতীপূজা দেয়। প্রসবের সময় চামার রমণীগণই তাহীদের ধাত্রী কাৰ্য্য করে। জাতবালকের নাতিমূল ছেদনের পর স্থতিকাগৃহে পুতিয়া ফেলে এবং তদুপরে অগ্নি জালাইয়। রাখে। ৬ষ্ঠ দিনে প্রস্থতি স্নানাস্তে পবিত্র হয়। হেলা দিগের মধ্যে দ্বাদশ দিনে পবিত্র হওয়াই নিয়ম। তৎপরে ব্রাহ্মণ ডাকিয় তাহারা বালকের নামকরণ করে, ও মাথার চুল মুড়াইয় দেয় । বালক ৫ বা ৬ বৎসরের হইলে তাহারা কালিকা মাই বা বিন্ধ্যবালিনীর নিকট লইয়া যায় এবং কর্ণবেধ ও চুড়াকরণাদি সমাপনস্তে পুজা দিয়া থাকে। মীর্জাপুরের হেলাগণ স্থতিকাগৃহ পরিত্যাগ কালে হোম ও গঙ্গা মায়ার পূজা করে। ইহাদের মধ্যে শবদেহ দাহ বা প্রোথিত করিবার কোন বিশেষ নিয়ম নাই। কেহ কেহ শবদেহ পুতিয়া রাখে, কেহ কেহ মুখাগ্নি বা হাত পা পোড়াইয় শবদেহ সমাহিত করে। তৎপরে কবরস্থ শবদেহের তৃপ্তির জন্য তদুপরে খাদ্যাদি দেয়। অপেক্ষাকৃত উন্নত হিন্দু-কাড় দারগণ নিম্নশ্রেণীর ব্রাহ্মণের দ্বারা মুখাগ্নি-মস্থ পাঠ করাইয়া আপনাপন শৰ দাহ করে এবং অবস্থানুরূপ শ্ৰাদ্ধাদিও করিয়া থাকে । শেখদিগের বালকগণ প্রেতাত্মার তৃপ্তির জন্য কলিমা পাঠ এবং তীজ ও বধি উৎসব করিয়া থাকে। লালবেগী ও গাজীপুররাবতগণ পিতৃপক্ষে শ্ৰাদ্ধ ও পিও দেয়। দাক্ষিণাত্যের আহ্মদ নগর, সাতারা, বেলগাম ও ধারবাড় প্রভৃতি জেলায়ও এই ভঙ্গীজাতির বাস আছে। ইহাদের আচারব্যবহার ও কুলপ্রথা পরস্পরে বিভিন্ন হইলেও ইহাদিগকে উত্তর-ভারতীয় ভঙ্গীশ্রেণীভুক্ত করিতে পারা যায়। বেলগামের হালালখোর ভঙ্গীগণ মস্ক ও মাংসসেবী। অম্বা-ভবানী বেল্লম ও ব্রহ্মদেব ইহাদের উপাস্য দেবতা। ইহার হিন্দুপর্কে উপবাসাদি না করিলেও, তৎসমুদায় পালন পক্ষে কোনও ক্রট করে না। ইহাদের মধ্যে বিধবা-বিবাহ প্রচলিত আছে। জাত বালকের ৫ দিনে পাচ-ভাই পূজা ও ১২ দিনে নামকরণ হইয়া থাকে। তিন দিনে ইহারা মৃতের কবরের উপর পিও দেয়। ১• দিনে অশৌচাস্ত ও জ্ঞাতি কুটুম্বের ভোজ হয়। সকল ব্রাহ্মণেই ইহাদের পৌরহিত্য করিতে পারে।
পাতা:বিশ্বকোষ ত্রয়োদশ খণ্ড.djvu/২৪৬
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।