छूछान [ 8వ8 ]
- .
ভূটান অবতরণ করিয়া দ্বারবাসী প্রজাবৃন্সের সর্বনাশ করিত। লুণ্ঠন, গ্রামদাহ, হত্য ও তাহাদিগকে ক্রীতদাসরূপে হরণ করিয়া তাছারা দ্বারৰিভাগ ছারখার করিয়াছিল। ইডেন সাহেব ভূটানরাজতন্ত্ৰ হইতে বিশেষরূপ লাঞ্ছিত হন, এমন কি, বিবাদী সম্পত্ত্বিগুলি ও অন্যান্ত অনেক বিষয় ভূটানকে ছাড়িয়া দিবার জন্ত তিনি ভূটান গবর্মেন্ট কর্তৃক একখানি সন্ধিপত্রে স্বাক্ষর করিতে বাধ্য হন। ইংরাজরাজের অনভিমতে বলপূৰ্ব্বক এরূপ অপমানকর স্বাক্ষর গ্রহণ করায় ভারতরাজপ্রতিনিধি বিরক্ত হইলেন এবং উক্ত সন্ধি সর্ত অগ্রাহ্য করিয়া রোঘবশে পূর্ণ সন্ধির সর্বায়ুসারে দ্বারপ্রদেশের কর বন্ধ করিয়া দিলেন। সেই সঙ্গে তিনি বিগত ৫ বৎসর মধ্যে যে সকল দ্বারবাসী প্রজা ভূটানে নীত হইয়াছিল,তাহাদের অনতিবিলম্বে প্রত্যপণের জন্য অনুজ্ঞ। প্রচার কারলেন। ভূটিয়ারাজ একবার কর্ণপাত করিলেন না দেখিয়া,ইংরাজ-প্রতিনিধি ১৮৬৪ খৃঃ অঃ ১২ই নবেম্বর ১১টি পশ্চিম দ্বার ইংরাজসাম্রাজ্যভুক্ত । করিতে আদেশ দিলেন। এ সময়ে ভূটিয়াগণ ইংরাজের কোন প্রতিদ্বন্দিতা করে নাই, কিন্তু পরবৎসর জানুয়ারা মাসে, সহস। ভূটিয়াগণ পৰ্ব্বতবক্ষ হইতে অবতরণ করিয়া দেওয়ান গিরিস্থ ইংরাজ-সেনাদল আক্রমণ করে। ইংরাজসেনাগণ এরূপ অত fর্কতভাবে আক্রান্ত ছহয়। বিপৰ্য্যস্ত হইয়া পড়ে। অতঃপর জেনা- ৷ রল টুম্বস নিজ বাহিনী লইয়া ভূটিয়াদিগকে পরাভূত করেন এবং উক্তবর্ষের নবেম্বরে পুনরায় সন্ধি স্থাপিত হয়। ইহাতে ভূটানবাজ বঙ্গ ও আসামের ১৮টা দ্বারবিভাগ ইংরাজের হৃত প্রজাদিগকে প্রত্যৰ্পণ করিতে বাধ্য হন । এই দ্বারবিভাগ হইতে ভূটানের অধিক রাজস্ব সংগৃহীত হুইত বলিয়া ইংরাজরাজও দেবরাজ ও ধৰ্ম্মরাজকে বার্ষিক ২৫ হাজার টাকা দিতে স্বীকৃত হন এবং যদি তাহার। ইংরাজরাজের সহিত সদ্ভাব-স্থাপন করিয়া চলেন, তাহা হইলে ভবিষ্যতে ৫০ হাজার টাকা দিবারও কথা থাকে। তদবধি ভুটানরাজ ইংরাজের সহিত বিশেষ স্বপ্রণয়ে কাল কাটাহতেছেন। অধুনা কতকগুলি ভুটিয়া গোয়ালপাড়ার সান্নিধ্যে বসতি করিয়াছে। এখানে হিমালয়বক্ষে নানা জাতীয় বৃক্ষ উৎপন্ন হইতে দেখা যায়। হস্তী,ব্যাঘ্ৰ,ছরিণ প্রভূতি পশু ও নানারূপ পক্ষী ব্যতীত, এখানকার টঙ্গাস্থান নামক ভূভাগকে টঙ্গান নামক এক প্রকার ক্ষুদ্র জাতীয় অশ্ব দেখিতে পাওয়া যায়। বল ও সৌন্দর্য্যে ইহার অনু অশ্বজাতির গর্কা খৰ্ব্ব করে । এই অসভ্য ও পাৰ্ব্বতীয় বস্তুদেশে শিল্পবিস্কার ৰিশেষ উন্নতি ছয় নাই। স্থানীয় লোকের ব্যবহারোপযোগী মোট কম্বল, কার্পাল বস্ত্র, বরফাবৃত স্থানে ভ্রমগোপযোগী মহিষ চশ্বের জুতা, কান্তপাত্র কাগজ, তরবার, তার, বর্ষ ও তাম্রকটাহ এখানকার প্রধান বাণিজ্য । এতদ্ভিন্ন এখানে পশম, স্বর্ণচূর্ণ, প্রস্তর, লবণ, জলপাই, কমলালেবু, মৃগনাভি, পণীঘোড়া ও রেশম পাওয়া যায়। ভুটানরাজ্যরক্ষার জন্ত অধিক সৈন্যের প্রয়োজন হয় না। কেবলমাত্র সীমান্তপ্রদেশ রক্ষার জন্য বিভিন্ন ছর্গে স্বল্পসংখ্যক সৈন্ত নিযুক্ত আছে। উহাদের সংখ্যা মোট ৭ হাজার ও হইবে না। কিন্তু যখন আক্রমণকারী শত্রুদিগের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণ করিতে হয়, তখন সমগ্র ভূটিয়া জাতি অন্ত্র ধরিয়া বহির্গত হইয়া থাকে । ইহার রাজকোষের বেতনভোগী নহে । পুনখা বা তোজেন নগর ভূটানে রাজধানী। দাৰ্জিলিঙ্গ ছহতে ৪৮ মাইল পূৰ্ব্বোত্তরে বুী নদীর বামকুলে অবস্থিত। আসাম হইতে তিব্বতরাজধানী লাসা নগরী যাইবার পথে তাসিপেজোঙ্গ, পারে, অঙ্গদ পোরঙ্গ, তেীঙ্গসে নগর এবং অন্যত্র বন্দিপুর, ঘাস ও মুরিচোম নগর বিদ্যমান আছে। পুনথার স্বাস্থ্য অতি উৎকৃষ্ট এবং এখানকার অধিবাসিগণও সমাধক বলশালী । পাৰ্ব্বত্য বিভাগের উচ্চতার তারতম্যানুসারে এখানকার জলবায়ুরও বিভিন্নতা লক্ষিত হয়, কোথাও সাহবিরিয়ার কঠোর শীত, কোথাও আফ্রিকার দারুণ গ্রীষ্ম, কোথাও বা ইতালীর সুখকর বাসস্তিক সমীরণ প্রবাহিত রহিয়াছে। এক দিনের পথ পরিভ্রমণ করিলে ভ্রমণকারী পথিক উক্ত বিষয় সবিস্তার অনুভব করিতে পারিবেন। রাজপুঙ্গবগণের শৈত্যাবাস পুনখার অধিবাসিৰ্বন যখন প্রখর স্বৰ্য্যকিরণের উত্তাপে সত্তপ্ত তখন তাহারই অদূরবর্তী ঘাসা নগরবাসিগণ হিমানীর তুষারপাত ও কঠোর শীতকষ্টে দান যাপন করিয়া থাকে। এখানে অহরহই বৃষ্টিপাত হয় এবং সময় বিশেষে পৰ্ব্বতগম্বরাদিতে ঝটিকা সমুখিত হইয়া পৰ্ব্বতখলনরূপ ভয়াবহ দৃশুসমূহ সমুপস্থিত করে। এখানকার অধিবাসিগণ ভূটীয়া নামে খ্যাত। ভোট-দেশ হইতে আসিয়া তাহার এই ভূটান প্রদেশে বাস করিয়াছে। অধিবাসিবৃন্দ সাধারণতঃ তিনভাগে বিভক্ত—১ম পুরোহিত বা ধৰ্ম্মযাজক, ২য় পেনলো বা সর্দারগণ, ইহারাই শাসনকার্য্যে বিনিযুক্ত আছেন এবং ৩য় নিম্নশ্রেণীর কৃষিজীবিগণ। প্রজাবৰ্গ সাধারণতঃই পরিশ্রমী। কৃষিকার্য্যে তাছাদের বিশেষ মন আছে। কিন্তু স্থানীয় ভূভাগের প্রাকৃতিক অবস্থান ও রাজপুরুষগণের দেীরাস্থ্যে সৰ্ব্বস্ব অপহরণের ভয়ে, তাহার
- এই জগন্ন পুনখী হইতে দেখিতে পাওয়া যায় ।