পাতা:বিশ্বকোষ দশম খণ্ড.djvu/২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

- নায়কবংশ মঙ্গন্মাল তিন মাসের সময় পৌত্রকে রাজ্যাভিষিক্ত করিয়া নাবালকের অছি স্বরূপ রাজকাৰ্য্য নিৰ্ব্বাহ করিতে লাগিলেন। এই বুদ্ধিমতী রমণীর মুশাসনগুণে প্রজাগণ অতি সুখস্বচ্ছনো অতিবাহিত করিয়াছিল। এই সময় ত্ৰিচিনপল্লী হইতে মছর পর্যস্ত উভয় পীশ্বে তরুমালা-শোভিত মুপ্রিশস্ত রথা ও পথের • মাঝে মাঝে সত্ৰ নিৰ্ম্মিত হইয়াছিল । এখনও সেই সকল প্রাচীন ছত্রের নিদর্শন রহিয়াছে। মঙ্গম্মালের একটী বিশেষ গুণ ছিল, তিনি সকল ধৰ্ম্মাবলীকেই সমভাবে দেখিতেন, হিন্দু বা খৃষ্টান কেহ উপেক্ষিত হইতেন না। ১৬৯৩ খৃষ্টাব্দে রামনাদের সেতুপতি, অতি কষ্ট দিয়া জেমুটপুঙ্গব ডি-ব্রিটোর প্রাণসংহার করেন । তাহাতে মঙ্গম্মাল সেতুপতির উপর চটিয়া যান। ১৬৯৮ খৃষ্টাব্দে তাহার সৈন্যগণ তিরুবাঙ্কোড় হইতে কর আদয় করিতে গিয়া পরাজিত হয় । তজ্জন্ত মঙ্গম্মাল তিরুবাঙ্কোড়ের বিরুদ্ধে সমর ঘোষণা করেন। কেহ বলেন, সেই যুদ্ধে মন্থরার জয় হয়। আবার কেহ বলেন, ত্রিরুবাস্কোড়রাজই জয়শ্ৰী অর্জন করিয়াছিলেন। ১৭: খৃষ্টাব্দে, তুতকুড়ির ওলন্দাজেরা নায়করাজের নিকট মুক্তোত্তোলন-বাবদ একচেটিয়া করিয়া লইয়াছিলেন । এই সময় তঞ্জোরের সহিতও দুই একবার সংঘর্ষ উপস্থিত হইয়াছিল, তৎকালে মদুরা-রাজসভায় খৃষ্টীয় ধৰ্ম্মযাজক বুকেট ( Bouchet ) অতি সমাদরে গৃহীত হন। মজুরা-সেনাপতি দলবায় নরপ্পয়া তঞ্জোররাজ্য বিলুষ্ঠিত করিল। তঞ্জোরের প্রধানমন্ত্রী অর্থদ্বারা মহুরার সৈন্তবর্গকে বশীভূত করেন। ১৭০১ খৃষ্টাব্দে মদুরা ও তঞ্জেীর একত্র হইয়৷ মহিমুরকে আক্রমণ করেন, কিন্তু কোন পক্ষে সুবিধা হয় নাই । পরবর্ষে দলবায় নরপ্ল্য সেতুপতির সহিত যুদ্ধ করিতে গিয়া পরাজিত ও নিহত হন। ১৭০৪-৫ খৃষ্টাবো নায়করাজকুমার বিজয়রঙ্গ চোকনাথ বয়োপ্রাপ্ত হইয়া রাজ্যভার গ্রহণ করেন। সুযোগ বুঝিয়া ধূৰ্ত্ত মন্ত্রিগণ মঙ্গম্মালের নামে অনেক মিথ্যা অপবাদ রটনা করিল। উষ্ণপ্রকৃতি নায়করাজ তাহদের কুটাভিসন্ধি বুঝিতে না পারিয়া মাতৃস্থানীয়া পিতামহীকে কারারুদ্ধ করেন, তথায় মঙ্গম্মাল অনীহারে প্রাণত্যাগ করেন । দুষ্ট্রের সেই বিচক্ষণ রমণীর চরিত্রে মিথ্যা দোষ আরোপ করিলেও এখনও ময়ূরার প্রজাগণ [ २s ] প্তাহাকে মাতার স্বরূপ জ্ঞান করে ও প্রাণভরিয়া তাহার । সুখ্যাতি গান করিয়া থাকে । বিজয়রঙ্গের রাজত্বকালে মহাজলপ্লাবনে (১৭০৯ খৃঃ অব্দে ) ও তৎপরবর্ষে ভীষণ দুর্ভিক্ষে । প্ৰজাগণের কষ্টের একশেষ হইল। সেই দুর্ভিক্ষ পরে দশ । বর্ষব্যাপী হইয়াছিল । ১৭২০ খৃষ্টাবো পহুকোটার তোগুমান সেতুপতির অধীনতা পরিত্যাগ করিয়া বিদ্রোহী হন। সেতুপতি । Х ○ নায়কোট উাহাকে দমন করিতে গিয়া নিহত হইলেন। এখন রামনাদের সিংহাসন লইয়া মহাগোলযোগ বাধিল । রামনাদের অধীন শিবগঞ্জ প্রদেশ তঙ্কোর গ্রহণ করিলেন। বাকী অংশ পরবর্তী সেতুপতির রহিল। ১৭৩১ খৃষ্টাকে বিজয়রঙ্গ নিঃসন্তান অবস্থায় ইহলোক পরিত্যাগ করিলেন। তাহার বিধবা মহিষী মীনাক্ষীদেবী মজুরার শাসনভার গ্রহণ করিলেন । তিনি বঙ্গারু-তিরমলের পুত্রকে দত্তক লয়েন। সুযোগ বুঝিয়া বঙ্গারুতিরুমল মক্কুর গ্রহণ করিবার চেষ্টা করেন । তিনি ক্রিচিনপল্লীতে রাণীর প্রাণসংহার করিবার জন্ত ষড়যন্ত্র করিয়াছিলেন, কিন্তু তাহার আশা সফল হয় নাই। ১৭৩৪ খৃষ্টাব্দে সফদরআলীর্থীর অধীনে মুসলমানগণ মজুর, তথ্রোর, তিরুবাঙ্কোড় প্রভৃতি রাজ্য আক্রমণ করেন । এই সময় বঙ্গারুতিরুমূল সঙ্কুরআলীকে উৎকোচ দিয়া বশীভূত করিয়া তাছাস্বায়া রাজা বলিয়া ঘোষিত হইলেন । তখন রাণী অতিশয় ভীত হইয়া প্রভূত অর্থদ্বার চাদসাহেবকে হস্তগত করিলেন। এখন বঙ্গার তিরুমল ত্ৰিচিনপল্লী পরিত্যাগ করিয়া মঞ্জুরাভিমুখে পৃষ্ঠ প্রদর্শন করিলেন। চাদসাহেব ও চলিয়া গেলেন। কিন্তু ১৭৩৬ খৃষ্টাব্দে তিনি আৰাঁর আসিয়া চাপিয়া বসিলেন। রাণী মীনাক্ষী সম্পূর্ণরূপে চাদসাহেবের অধীন হইয়া পড়িলেন । চাদসাহেব বঙ্গারু-তিরমলের বিরুদ্ধে সৈন্ত পাঠাইলেন। বঙ্গার যুদ্ধে পরাস্ত হইয়া শিবগঙ্গপ্রদেশে পলায়ন করিলেন, এখন চাদসাহেবই মঙ্গুরার সিংহাসন অধিকার করিয়া বসিলেন । রাণী মীনাক্ষী হতাশে আত্মহত্যা করিলেন । এইরূপে নায়কবংশের শেষ হইল । নায়কাধিপ (পুং) নায়কস্ত অধিপঃ ৬তৎ । নৃপ, রাজা । (শব্দচ") নায়কোট, নেপালের অন্তর্গত একটা জেলা ও নগর। এই জেলা কাট্‌মাণ্ডুর ১৭ মাইল পশ্চিম-উত্তর-পশ্চিমে বিস্তৃত । নগরট উক্ত জেলার উত্তরপ্রাস্তে অবস্থিত। ইংরাজদিগের সহিত যুদ্ধ হইবার অব্যবহিতপূৰ্ব্ব পর্যস্ত বর্তমান নেপাল-রাজবংশ শীতকালে এই নায়কোটে বাস করিতেন। গিরির উপর অবস্থিত হওয়ায় চতুঃপার্শ্বস্থ স্থান অপেক্ষ এই স্থান অত্যন্ত উচ্চ । নায়কোটের সমতল ক্ষেত্র সমবাহু ত্রিভুজাকৃতি, ইহার দুই দিকে নদী ও অপর দিকে উচ্চ পাহাড়। নায়কোট চৈত্র হইতে কাৰ্ত্তিক পর্য্যস্ত অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর। ঐ সময় ম্যালেরিয়া জর সৰ্ব্বত্র বিস্তৃত হইয় পড়ে। এখানকার নিম্ন ভূমিসমুহ বাসের অযোগ্য। এই স্থানে বেহার ও পাহাড়তলীর শাল প্রভৃতি প্রায় সকল প্রকার বৃক্ষ জন্মে। তদ্ভিন্ন এখানে যেরূপ উৎকৃষ্ট কমলানেবু জন্মে, সেরূপ উত্তম নেবু প্রায় আর কোথাও দেখা যায় না। আম, নারিকেল, মুপারি প্রভৃতিও প্রচুর পরিমাণে দেখা যায় । -