तांब्रांरॉांकि [ १¢७ ] ব্রাহ্মণ্যধর্মের পুনরভু্যদয়ে বৌদ্ধগণ এস্থান হইতে বিতাড়িত এবং ক্ষত্রিয়গণের প্রাধান্ত স্থাপিত হয়। মুসলমান আক্রমণে ক্ষত্রিয় ও তররাজগণের প্রভাব ক্রমশঃই খৰ্ব্ব হইয় পড়ে। ১০৩০ খৃষ্টাব্দে সৈয়দ সালর মসাউদ এই স্থান আক্রমণ করেন। ১১৮৯ খৃষ্টাব্যে ঔসরি সেখগণ শিহরিয়াদিগকে পরাস্ত করিয়া এখানে উপনিবেশ স্থাপন করিয়াছিল। ১২৩৮ খৃষ্টাব্দে জোহেলপুরের নিকট ভরজাতিকে পরাজিত করিয়া মুসলমানসেনানী আবহূল বাহিদ সেই স্থান জৈদপুর নামে অভিহিত করেন। ঐ সময়ে খেওলির সৈয়দগণ ভরদিগের নিকট হইতে ভিঠোঁলী এবং ভাটিনামক মুসলমানগণ বাই-ক্ষত্রিয়দিগের নিকট হইতে ববেীলী ও ভর-অধিকৃত মবাই-মহোলার নামক স্থান দখল করে। ১৩০০ খৃষ্টাম্বে রুধৌলী ও ১৩৩৫ খৃষ্টাব্দে রসুলপুর ভরশাসনচ্যুত হয়। খৃষ্টীয় ১৫শ শতাকে এই স্থান দিল্লীর লোনী ও জৌনপুরের শকি-বংশের যুদ্ধাভিনয়স্থল হইয়াছিল। ঐ সময়ে ফতেপুরের মুবাদার দরিয়াও র্থ কর্তৃক দরিয়াবাদে এবং কামিয়ার ও কঙ্কলন জাতির বাসভূমিতে ( ঘর্ঘরা নদীর উভয় তীরবর্তী ভূমি ) অচলসিংহ কর্তৃক একটী সেনা-নিবেশ স্থাপিত হইয়াছিল। উক্ত অচলসিংহের বংশধরগণ এখনও ছয়খানি ভূসম্পত্তির অধিকারী এবং প্রায় বিংশতি সহস্ৰ কলহন সেই অচলসিংহকে আপনাদের পূৰ্ব্বপুরুষ বলিয়া গৌরব করিয়া থাকে। ঐ সময়ে এই জেলার ইতস্ততঃ মুসলমান কর্তৃক বিক্ষোভিত হইলেও হরাহ নগর স্বৰ্য্যবংশী ও স্বৰ্য্যপুর সোমবংশী ক্ষত্রিয়গণের হস্তে গুস্ত ছিল । রামনগরের রাইকবাড় ক্ষত্রিয়গণ কোন সময়ে এখানে আসিয়া বাস করে, তাহার কোন প্রকৃত ইতিহাস পাওয়া যায় না । [ বরাইচ দেথ । ] সম্রাট আকবর শাহের রাজত্ব সময়ে রাইকবাড়-সর্দার হরিহয়দেব কাশ্মীর-যুদ্ধে বিশেষ বীরত্বের পরিচয় দিয়াছিলেন। পারিতোষিক স্বরূপ সম্রাট তাহাকে এই জেলার সইলাক পরগণ প্রদান করেন। ১৭৫১ খৃষ্টাব্দে রাইকবাড়গণ বিদ্রোহী হইলে লক্ষ্মেী আক্রমণ করে। কল্যাণীনদীতে মুসলমানসৈন্তের • সহিত তাহদের ঘোল সংঘর্ষ উপস্থিত হয়। অবশেষে খাজাদাগণ জয়ী হইয় তাহদের সমুদায় সম্পত্তি কাড়িয়া লন । ১৮১৪ খৃষ্টাব্দে সয়াদং আলীর্থার মৃত্যুর পর রাইকবাড়গণ তাহীদের হৃতরাজ্য পুনরুদ্ধার করিতে সমর্থ হইয়াছিলেন। ১৮৫২ খৃষ্টাব্দে ইংরাজ-শাসনভুক্ত হইবার পূৰ্ব্বে তাহারা একটা বিস্তৃত রাজ্য সংগঠন করিয়াছিল। দেশীয় রাজার অধিকারে এইস্থান অত্যাচারের আদর্শস্থল হইয়।. উঠে। গোমতী ও কল্যাণীতীরবর্তী জঙ্গলময় পাৰ্ব্বত্যপ্রদেশে স্বৰ্য্যপুরের শৈরাজ বারাসিয়া সিংহজীর, ভবানীগড়ের মহীপংসিংহের ও কাগুনগড়ের গঙ্গাবক্সের বয়সেনাদলের বাসযোগ্য হর্জ্যে দুর্গসমূহ স্থাপিত ছিল। ১৮৫৭-৫৮ খৃষ্টাব্দের সিপাহীবিদ্রোহে এখানকার তালুকদারগণ যোগদান করিয়াছিলেন। নবাবগঞ্জের যুদ্ধে সীতাপুর ও বরাইচের রাইকবাড়গণ রাজপুতোচিত বীরত্বের পরিচয় প্রদান করিয়াছিল। তৎকালীন জনৈক ইংরাজসেনানী ইহাদের রণেস্মাদ ও ভীষণ সাহসের কথা অকপটে লিপিবদ্ধ করিয়া গিয়াছেন। ১৮৫৮ খৃষ্টাব্দের জুলাই মাসে এখানে শাস্তি স্থাপিত হয়। পরবৎসরে দরিয়াবাদ হইতে নবাবগঞ্জ জেলায় সদর উঠাইয়া আনা হয়। বারাবাকি, ফতেপুর, রামসনেহী ও হাইদরগড় এই চারিট জেলার উপবিভাগ । বারাসত, ২৪ পরগণার অন্তর্গত একটা উপবিভাগ। ভূ-পরিমাণ ৩৮৯ বর্গমাইল। বারাসত, দেগঙ্গা, হাবরা ও নৈহাটী প্রভৃতি থানা ইহার অন্তর্গত । ২ উক্ত উপবিভাগের একটী নগর ও বিচারসদর। অক্ষা” ২২:৪৩, ২৪"উ" এবং দ্রাঘি’ ৮৮° ৩১/৪৫' পূঃ। ১৮৩৪ খৃষ্টাব্দে যশোর ও নদীয়া জেলা হইতে কতকগুলি পরগণা ইহার অন্তভূক্ত করা হয়, উহা বারাসত জেলা’ নামে খ্যাত। ১৮৬১ খৃষ্টাঙ্গ পর্য্যস্ত এখানে একজন জয়েণ্ট মাজিষ্ট্রেট ছিলেন। এখানে বি, সি, রেলপথের একটা ষ্ট্ৰেসন আছে। ১৮৩১ খৃষ্টাব্দে সৈয়দ আহ্মদের মতাবলম্বী মুসলমানদল তিতুমিঞা নামক জনৈক মুসলমান ফকিরের বুজরকিতে ভুলিয়া হিন্দুবিদ্বেষী হয়। এই উদ্ধত মুসলমানগণ দেবমূৰ্ত্তি ভগ্ন ও ব্ৰাহ্মণগণের প্রতি বিশেষ অত্যাচার করিয়াছিল। এমন কি তাহারা গ্রাম পর্য্যস্ত জ্বালাইয়া দিতে কুষ্ঠিত হয় নাই। এখানে ইহার একটা বাশের কেল্লা প্রস্তুত করিয়াছিল । যুদ্ধক্ষেত্রে ইংরাজসৈন্সের সম্মুথে দাড়াইতে সমর্থ ন হইয় তাহারা ঐ দুর্গ মধ্যে আশ্রয় গ্রহণ করে এবং বিশেষ বীরত্ব-সহকারে ইংরাজের সহিত যুদ্ধ করিয়াছিল। অবশেষে এক শত মৃত ও আড়াই শত বন্দীরূপে ধূত হইলে তাহারা পলায়ন করে। তৎপরে একবার ইংরাজ-বিপক্ষে অস্ত্ৰধারণে চেষ্টা করিলেও তাহার পুনঃ পুনঃ নিগ্রহভোগ করিয়াছিল। ইহাই বাঙ্গালায় তিতুমীরের লড়াই নামে প্রসিদ্ধ। বারালিয়া, মধুমতী নদীর একটা শাখা। ফরিদপুর ও পোণ জেলার মধ্য দিয়া প্রবাহিত। থালপাড়ার নিকট মধুমতীকে পরিত্যাগ করিয়া পুনরায় লোহাগড়ায় আসিয়া মিলিত হই রছে। এই নদীতে সকল সময় পণ্যদ্রব্য লইয়া নৌবাদি গমনাগমন করিতে পারে ।
পাতা:বিশ্বকোষ দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৭৫৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।