পাতা:বিশ্বকোষ নবম খণ্ড.djvu/৭১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

{ } . নাগা লম্বে প্রায় ৪০ এবং উচ্চে ১২১৩ হাত। গৃহের মধ্যে অতি বিস্তৃত একটা বড় কামরা থাকে। এই কুটরের মধ্যস্থানে অগ্নিকুণ্ড , উহার চতুদিকে কাষ্ঠনিৰ্ম্মিত-তক্তপোষ পরিপাটর সহিত সঞ্জান থাকে । তাঁহাই গৃহবাসীদিগের বসিবার ও শয়নের সামগ্রী । এক পল্লীর সমুদায় বালকগণ একত্র হইয়। অবিবাহিত কালপর্যন্ত এই রঙ্কিতে বাস করে। তাঁহাদের তত্ত্বাবধানের নিমিত্ত একটা পরিণত-বয়স্ক যুবক ঐ ঘরের এক পার্ধে একটা স্বতন্ত্ৰ কামরায় থাকে। যেরূপ বালকগণ গৃহস্থা শ্রম গ্রহণ করিবার পূৰ্ব্বে একত্র হইয় দকচিাংএ বাস করে, তদ্রপ বালিকাগণও বিবাহের পূর্বাবস্থায় তদ্রুপ গৃহে বাস করিয়া থাকে। কুমারীদিগের এই গৃহের নাম ছিলোকী। ইহার গঠন ও আকৃতি ঠিক রঙ্কির ন্যায়। বালিকাদিগের তত্ত্বাবধানের নিমিত্ত একটী বৃদ্ধ স্ত্রীলোক নিযুক্ত থাকে। কি বালক, কি বালিকা সকলেই অতি সুশৃঙ্খলভাবে তথায় বাস করে । নাগাদের প্রধান বসন নীল কিম্বা কাল রঙ্গের, জামাও ঘরে বুনান এক রকম মোটা কাপড়। ঐ জামাতে থরে থরে গেটে কড়ি বসানে। ঐ বস্ত্র কটদেশ বেষ্টনপূর্বক স্কন্ধের উপর দিয়া ঝুলাল থাকে। ইহা ব্যতীত যোদ্ধগণ ছাগলোমনিৰ্ম্মিত লালবর্ণের একখানি চাদর ব্যবহার করিয়া থাকে। ইহা গলদেশ বেষ্টন করিয়া কোমর পর্যন্ত ঝুলিতে থাকে। নিহত শত্রদিগের দোদুল্যমান কেশগুচ্ছ এবং গেঁটে কড়ি বিলক্ষণ নিপুণতার সহিত ইহাতে বসানো থাকে। যদি কোন বীরপুরুষ শক্রকে নিহত করিতে পারে, তবে সে তাহার জামার উপর তিন চার সারি গেটে কড়ি বসাইবে এবং শক্রর কেশগুলি কার্পাস জড়াইয়া চুড়া করিয়া মস্তকে পরিধান করিবে। ইহা ব্যতীত ধুনিপার্থীর পালক মাথায় পরিয়া থাকে এবং যে যত বেশী শত্র নিপাত করিয়াছে সে তত বেশী পালক ধারণ করে । পুরুষের যৌবনাবস্থায় নানা প্রকার অলঙ্কারও পরিধান করিয়া থাকে। বাহতে গজদন্ত নিৰ্ম্মিত অথবা কাঠের পদক ধারণ করে। কণ্ঠে হাড়ের মালা ও লালরঙ্গের বেতের তাড় প্রধান অলঙ্কার। পায়ে বেতের মল এবং কৰ্ণে পিত্তলের মাকড়ি মনোহর শোভা সম্পাদন করিয়া থাকে। শূকরের দন্ত নিৰ্ম্মিত কর্ণভূষণও ব্যবহার করিয়া থাকে। নাগা স্ত্রীলোকের খোপা বাধে। ইহাদের অলঙ্কারাদি পুরুষের অলঙ্কারের মত। কিন্তু স্ত্রীলোকেরা মুখে উদ্ধি পরে। এমন শুনা যায় যে, উস্কি না পরিলে নাগ বালিকাদিগের বিবাহ হয় না। বালক বালিকার তাহাদের পিতামাতার সহিত IX [ १०d ] নাগাপাহাড় একত্র অাহারাদি করে এবং দিন ভোর সাংসারিক কাৰ্য্য করে ; পরে রাত্রিকালে স্ব স্ব শয়নাগারে গিয় নিশাযাপন করে। লজ্জা কাহাকে বলে, নাগারা তাহ জানে না । পুরুষের অতি খাট কাপড় পরিধান করিয়া স্ত্রীলোকদিগের সম্মুখ দিয়া কাজ কৰ্ম্ম করিতেছে এবং দিবাভাগে যুবক যুবতীদের পরস্পর দেখা শুনা হইতেছে। যুবকেরা আপনাদের ইচ্ছানুযায়ী কন্তু পছন্দ করিয়া লয় এবং অভিভাবকের সন্মতিক্রমে বিবাহ করিয়া থাকে । [ নাগাদিগের অস্ত্র সম্বন্ধে অঙ্গামীনাগা ৮০ পৃষ্ঠা দ্রষ্টব্য। ] নাগার। কখনই দুগ্ধ পান করে না। গোমহিষাদি প্রতিপালন করে বটে, কিন্তু চাষ আবাদের জন্ত নয়, শুদ্ধ বলিদান ও মাংসের নিমিত্ত । ইহারা সকল প্রকার মাংস খাইয়া থাকে । তবে হাতীর মাংস অধিক পছন্দ করে। অধিক কি, ইহার বাঘের মাংস পৰ্য্যন্তও থাইয়া থাকে। নাগাদের ধৰ্ম্মবিষয়ে জ্ঞান অতি সামাষ্ঠ । তাহদেয় বিশ্বাস ইহজীবনে সৎকাৰ্য্য করিলে জীবনান্তে আকাশে নক্ষত্র হইবে, নতুবা অধৰ্ম্ম করিলে সাত জন্ম ভূতযোনি প্রাপ্ত হইয়। পরে মধুমক্ষিক হইবে। তাছাদের নিকট আত্মার কথা জিজ্ঞাসা করিলে বলে “ইহ। কবরে রাখা হইয়াছে, তাহার পর কোথায় গিয়াছে জানিনা ।” শপথ করিবার সময় অস্ত্র দস্ত দিয়৷ কামড়াইয়া শপথ করে ; ইহার তাৎপর্যা এই যে যদি মিথ্য অঙ্গীকার করে, তবে যেন এই অস্ত্রে তাহার প্রাণ বিনাশ করা হয় । শকার ও কৃষিকার্যা ইছাদের প্রধান উপজীবিক। ইহারা বাঘ, ভলুক, হরিণ, হস্তী ইত্যাদি নানা প্রকার বন্ত জন্তু শীকার করিয়া থাকে। অতি সুকৌশলে হস্তী শীকার করে। একটী গৰ্ত্ত করিয়া তন্মধ্যে বঁাশের খোটা পুতিয়া রাখে, ইহার উপর সামান্ত রকম আবরণ থাকে। হস্তীর যেমন সমতল ক্ষেত্র ভাবিয়া তথায় পদ নিক্ষেপ কয়ে, অমনি বংশবিন্ধ হইয়৷ তথায় প্রোথিত হয়। ইহার যে প্রণালীতে কৃষিকাৰ্য্য করে, তাহাকে ঝুম বলে অর্থাৎ তিন তিন বৎসর অস্তর জঙ্গল কাটিয়া ও পোড়াইয়া জঙ্গল স্থান আবাদ করিয়া থাকে। নাগাসম্প্রদায়ের মধ্যে অনেকে এক্ষণে বঙ্গদেশে ও অন্যান্য স্থানে বাণিজ্যাদি আরম্ভ করিয়াছে। [ শাসনপ্রণালী সম্বন্ধে অঙ্গামী নাগা ৮১ পৃষ্ঠা দ্রষ্টব্য । ] নাগপাহাড়, ইহা আসামের দক্ষিণপূর্ব কোণে অবস্থিত একটা জেলা। অক্ষা ২৫° ১৩% হইতে ২৬° ৩২' উঃ এবং দ্রাঘি ৯৩ ৭ হইতে ৯৪° ১৩' পূঃ । ইহার এক পার্শ্বে নওগাঁ জেলা, অপর পাখে মণিপুর। ইহা প্রায় ৬৪০০ বর্গ ১৭৭