গঙ্গেশ - দেখিল, তাহাতে র্তাহার আত্মপুরুষ উড়িয়া গেল। একটা মৃতদেহের উপর বসিয়া এক যোগী তথন শবসাধনা করিতেছে। গঙ্গেশ যোগীর পদে বিলুষ্ঠিত হইলেন। যোগী গঙ্গেশের সুখে তাছার আসিলার কারণ ও দুরবস্থার কথা জানিতে পারিলেন । তিনি গঙ্গেশকে সঙ্গে করিয়া লইয়া চলিলেন । তাহারই অনুগ্রহে মুর্থ গঙ্গেশ অল্পদিন মধ্যে অনেক শিথিয় ফেলিলেন । এদিকে সকলে জানিল যে গঙ্গেশ আর ইহজগতে নাই, তাহাকে ভূতে থাইয়াছে। মাতুল মহাশয় ও নিশ্চিন্ত হইলেন । কিন্তু কিছুদিন পরে গঙ্গেশ অকস্মাৎ মাতুলালয়ে আসিয়া উপস্থিত ! তঁtহাকে দেখিয়া সকলেই আশ্চর্য্য হইল। কিন্তু গঙ্গেশ কাহার ও কাছে কোন কথা প্রকাশ করিলেন না । মাতুল র্তাহাকে গোরু বলিয়া গালি দিলেন। গঙ্গেশ তদুত্তরে কছিলেন— “কিং গবি গোত্বং কিমগবি গোত্বং যদি গবি গোত্বং ময়ি মহি তত্বম্ । অগবি চ গোত্বং যদি ভবদিষ্টং ভবতি ভবত্যপি সম্প্রতি গোত্বম্ ।” গোত্ব যদি গোতে হয়, তবে আমি তাহী নই। আর যদি গো ভিন্ন গোত্ব সম্ভব, তবে একথা এখন সকলেই থাটিতে পারে । উত্তর শুনিয়া মাতুল অবাক! সেইদিন হইতেই গঙ্গেশ ‘চুড়ামণি' বলিয়া প্রসিদ্ধ !” উপরোক্ত জনশ্রুতি কিছুমাত্র সত্য বলিয়া বোধ হয় না। গঙ্গেশ বঙ্গদেশবাসী নহেন, যখন বঙ্গের নবদ্বীপে ন্যায়ের টোল ছিল না, বাসুদেব সাৰ্ব্বভৌম ও র্তাহার গুরু পক্ষধরমিশ্র যখন আবিভূত হন নাই, তাহারও অনেক পূর্বে গঙ্গেশোপাধ্যায় প্রাদুভূত হন। তিনি মিথিলাবাসী ছিলেন কিনা তাহাও নিঃসন্দেহে বলিবার উপায় নাই । তবে তাহার গ্রন্থ পাঠ করিলে তাহাকেই নব্যন্তায়ের জন্মদাতা বলিলেও অত্যুক্তি হয় না। 尊 র্তাহার অক্ষয়কীৰ্ত্তি তত্ত্বচিন্তামণি, উহা ‘ন্যায়তত্ত্বচিন্তামণি", “চিন্তামণি বা ‘মণি’ নামেও উক্ত হইয়া থাকে। এই মছা দ্যাল্পগ্রন্থ চারিখণ্ডে বিভক্ত –প্রত্যক্ষ, অনুমান, উপমান ও শব্দ খণ্ড । ইনি প্রত্যক্ষথণ্ডে শিবাদিত্যমিশ্র ও টীকাকার বাচস্পতির মত উদ্ভূত করিয়াছেন। তচিন্তামণির যেরূপ বিস্তৃত ও বহুসংখ্যক টকা আছে, কোন স্থায় গ্রন্থের এরূপ টীকা নাই। প্রথমে পক্ষধর মিশ্র, তৎপয়ে তাহার শিষ্য রচিদজ্ঞ চিন্তামণির টীকা রচনা করেন। ১৬৩ ] গঙ্গৈকগুীপুর এতক্তির বাস্থদেৰ সাৰ্ব্বভৌম, রঘুনাথ শিরোমণি, গদাধর, জগদীশ, মথুরানাথ, গোকুলনাথ, তবানন্দ, শশধর, শীতিকণ্ঠ, হরিদাস, প্রগলুভ, বিশ্বনাথ, বিষ্ণুপতি, রঘুদেব, প্রকাশধর, চন্দ্রনারায়ণ, মহেশ্বর, হুমুমান প্রভৃতি প্রধান প্রধান নৈয়ায়িক রচিত অনেক টীকা পাওয়া যায়। এই সকল টাকার আবার শত শত টীকা টিপ্পনী আছে । { ন্যায় দেখ। ] গঙ্গেশ উপাধ্যায়ের পুত্রের নাম বদ্ধমান উপাধ্যায়, তিনিও একজন অদ্বিতীয় নৈরায়িক ছিলেন । { বৰ্দ্ধমান উপাধ্যায় দেখ । ] ২ রামাৰ্য্যাশতক নামে সংস্কৃত গ্ৰন্থকার । গঙ্গেশদীক্ষিত, তর্কভাযার একজন টীকাকার। গঙ্গেশমিশ্র, চতুবৰ্গচিন্তামণি নামে একখানি বেদান্তরচরিত। গঙ্গেশমিশ্র উপাধ্যায়, স্বমনোরম নামে সংস্কৃত ব্যাকরণ রচয়িত । গঙ্গেশ্বর বা গল্পেশ্বর দত্ত { গঙ্গেশ দেখ। ] গঙ্গেশ্বরসূলু, গঙ্গেশ উপাধ্যায়ের পুত্ৰ বৰ্দ্ধমান । গঙ্গৈকণ্ডাপুর, যাম্রাজ প্রদেশের ত্রিচীনপল্লী জেলা একটা নগর ও পুণ্যস্থান। জাইমকোণ্ডুসোলাপুরের ৩ ক্রোশ পূৰ্ব্বে তঞ্জোর হইতে আর্কটে যাইবার বড় রাস্তার অৰ্দ্ধক্রোশ দূরে অবস্থিত । অক্ষা ১১° ১২′৩০′′ উঃ, দ্রাঘি ৭৯ ৩• পূঃ । এখানে গঙ্গাদেবীর সুবৃহৎ ও প্রসিদ্ধ মন্দির আছে, তাহ। হইতে এই স্থানের নাম গঙ্গৈকওীপুর হইয়াছে। আবার কাহারও মতে, এই স্থানের প্রকৃত নাম গঙ্গাইকোণ্ড-সোলপুর অর্থাৎ গঙ্গাই নাম চোলরাজের রাজধানী। বাস্তবিক পুৰ্ব্বকালে চোলরাজগণের সময়ে এই নগর বিশেব সমৃদ্ধিশালী ছিল, গঙ্গামন্দিরও সেই সময় নিৰ্ম্মিত হয় । এমন সুন্দর ও বৃহৎ মন্দির দাক্ষিণাত্যেও বিরল। পূৰ্ব্বে ৫৮৪ × ৩৭২ ফিট্ পাথরের প্রাচীর দিয়া ঘেরা ছিল । সেই দুর্ভেদ্য প্রাচীরের প্রতি কোণে এক একটী কামান ছিল, এখন আর তাহ নাই । মন্দিরের সমুচ্চ বিমান অতিদূর হইতে দর্শকের মন আকৃষ্ট করে। মন্দিরের সম্মুখে ছয়ট ভগ্ন গোপুর পড়িয়া আছে। ইহার শিল্পনৈপুণ্য অতি চমৎকার, এখানে নানা স্থানে প্রাচীন রাজগণের সময়কার শিল্পলিপি খোদিত রহিয়াছে, কিন্তু তাহার পাঠোদ্ধার হয় নাই । এই নগরের পার্শ্বে ৮ ক্রোশ বাধের ভগ্নাবশেষ পড়িয়া আছে । বাধের উত্তরভাগে প্রায় ৩৯ ক্রোশ বিস্তৃত ও জঙ্গলাবৃত একটা বৃহৎ সরোবর আছে। কোন পুরাবিদ লিখিয়াছেন, "যেমন প্রাচীন বাবিলন নগরের চারিদিকে প্রাচীন ভগ্ন গৃহাদি শু,পাকারে পড়িয়া রহিয়াছে, এখানকার
পাতা:বিশ্বকোষ পঞ্চম খণ্ড.djvu/১৬৬
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।