গন্ধবণিক্ [ ২৬২ } গন্ধমাংসী ' কৃষ্ণাত্রেয়, মোঁদগলা, নৃসিংহ, রাসখষি, সাবর্ণ ও শাণ্ডিল্য প্রভৃতি গোত্র আছে। দেশাশ্রমী গন্ধবণিকের মধ্যে সাহ, সাধু, লাহা, ও খ এবং আঁউতাশ্রমীদিগের মধ্যে দত্ত, দে, ধর, ধার, কর, নাগ প্রভৃতি পদবী প্রচলিত দেখা যায়। ঢাকা জেলায় উপরিলিখিত শেষোক্ত তিনট অtশ্রমের মধ্যে পরস্পর অtদান প্রদান প্রথা ও ভোজনাদি প্রচলিত আছে । গন্ধবণিকের বাল্যাবস্থায় কস্তার বিবাহ দিয়া থাকে। বর ও কন্যা পক্ষের সাংসারিক অবস্থানুসারে কস্তাপণ দিতে হয়। বিক্রমপুরের গন্ধবণিকের বংশমর্য্যাদায় উন, তাহার। নিম্নশ্রেণীর ঘরে কভার বিবাহে বেশী পণ লইয়া থাকে এবং পুত্রাদির বিবাহে অল্প পণ দিয়া থাকে। ঢাকা সহরে গন্ধবণিকূদিগের ছয়ট দল আছে, তাহাদের মধ্যে বংশমর্য্যাদার মান্ত গণ্য এক এক ব্যক্তি দলপতি আছেন। ছয় দলের মধ্যে একট দলের বিবাহ রীতি কিছু নূতন ধরণের। বর বিবাহ করিতে আসিয়া একট চাপা গাছে চড়িয়া বসে, তাহার পর ক্যাকে একথানি চৌকি বা পিড়িতে বসাইয়। সাতবার বরকে প্রদক্ষিণ করান হয় । যেখানে চাপা গtছ পাওয়া যায় না, সেইখানে চাপা গাছের ডাল কাটিয়া, বা চাপা কাঠের নিৰ্ম্মিত তক্তায় বরকে বসিতে দেওয়া হয়। অষ্ঠান্ত দলের শূদ্রের ষ্ঠায় ক্রিয়াকলাপ করিয়া থাকে। ইহার প্রকাগুভাবে উপরিউক্ত দলের সহিত সামাজিকতা রাখে না, কিন্তু গোপনে পরস্পরের মধ্যে যাওয়া আসা চলিত হইয়া গিয়াছে। বিবাহ সময়ে বরকল্প উভয়কেই লালপাড় জরা চেলী পরিতে হয়। ক্যাকে বিবাহের দশদিন পর পর্য্যস্ত ঐ চেলী পরিয়া থাকিতে হয়। ইহাদের মধ্যে দুই বা বহুবিবাহপ্রথা প্রচলিত নাই । তবে প্রথম স্ত্রীর গৰ্ত্তে সন্তানাদি না হইলে, দ্বিতীয়বার দারপরিগ্রহ করিতে বাধা নাই। বিবাহবন্ধনচ্ছেদ বা বিধষার বিবাহ একবারে নিষিদ্ধ। স্ত্রীলোক অসতী ( পরপুরুষগামী ) জানিতে পারিলে তাহাকে জাতি ও হিন্দুসমাজ হইতে বহিস্কৃত করিয়া দেওয়া হয় এবং তাহার স্বামী তাহার মূৰ্ত্তি গড়িয়া দাহকার্য্য সম্পন্ন করে এবং তজ্জন্তু একটী মিথ্য শ্ৰাদ্ধও সম্পন্ন হয় । ইহাদের ক্রিয়াকলাপাদি সমস্তই উচ্চ শ্রেণীর হিন্দুর মভ। কায়স্থজাতির যাহা নিষিদ্ধ, তাহা ইহারাও মানিয়া চলে । ইহাদের অধিকাংশই বৈষ্ণব, কতকগুলি শাক্ত ও অল্প শৈব দেখা যায়। বৈশাখী পূর্ণিমায় ইহার একটা পারে পিঙ্গুর মাখাইয় তাহার সম্মুখে দাড়ি, বাটুখারা ও হিসাবের থাত রাখিয়া ষোড়শোপচারে নিজ নিজ ইষ্টদেবীর পূজা করিয়া থাকে । গন্ধেশ্বরী ইহাদেরই ইষ্টদেবী । ব্রাহ্মণের আসিয়া গন্ধেশ্বরী মূৰ্ত্তির পূজা করিয়া থাকেন। ইহার নানাবিধ মসলা চন্দনাদি দ্রব্য ও নানাবিধ গাছ গtছড়া ও ঔষধ বিক্রয় করিয়া থাকে। বর্তমানকালে ইহার বিলাতজাত নানাপ্রকার দ্রব্যেরও ব্যবসা করিতেছে এবং অধীত বিদ্যা না থাকিলেও ইহার কতক কবিরাজী ঔষধের ব্যবস্থা দিতে পারে। জাত ব্যবসা করিয়া ইহারা এরূপ পারদর্শিতা লাভ করিয়াছে যে সহজেই লবণ ও কোনরূপ খনিজ পদার্থের বিভিন্নত ধরিতে পারে । অল্প স্বল্প রোগ হইলে ইহার ঔষধ দিয়া থাকে। হিন্দুস্তানী ভাষায় ইহাদিগকে “পল্লারী” বলে। একখানি পনসারীর (বেনের) দোকানে প্রায় ৩৬০ রকম ঔষধ পাওয়া যায়। ইহার নিজ হইতেই নানাবিধ পাচনাদি প্রস্তুত করিয়া বিক্রয় করে । এই গন্ধবণিকৃদিগকে বর্তমান সময়ে অনেকে নবশাকের অন্তর্গত বলিয়া স্থির করিয়াছেন, কিন্তু বস্তুতঃ তাহ নহে, ‘পরাশর পদ্ধতিতে’ও নবশাক বলিয়া ইহাদের কোন উল্লেখ নাই । গন্ধবন্ধ (স্ত্রী) গন্ধস্ত বন্ধোগ্রহণং যয়া বহুত্ৰী, টপ্। নাসিক। ( শবরত্নী” ) গন্ধবন্ধু (পুং) গন্ধং বাতি বন্ধউৎ যদ্বা গন্ধস্ত বন্ধুরিব। আত্ম বৃক্ষ । ( শবরত্না" ) গন্ধবিশিষ্ট । ( গীতগো" ) গন্ধবহল । পুং ) গন্ধে বহলো বহুলোহন্ত বহুব্রী। তিতার্জক। গন্ধবহুল (পুং) গন্ধে বহুলো যন্ত বহুব্রী। গন্ধশালি । গন্ধবহুল (স্ত্রী ) গন্ধে বহুলো যন্তাঃ বহুরী ততঃ টাপ। গোরক্ষীবৃক্ষ । ( রাজনি-) গন্ধভদ্রা ( স্ত্রী ) গন্ধে ভদ্রং রোগনাশকে ষস্তাঃ বহুত্ৰী । গন্ধোলী, গন্ধভাদলী । ( শব্দরত্না” ) গন্ধভাদালী (গন্ধভদ্রা শব্দজ ) গন্ধোলী । গন্ধভাণ্ড (পুং ) গন্ধস্ত ভাও ইব । গর্দভাণ্ড বৃক্ষ, গাধি ভাট । ( শব্বরত্নাবলী ) ইহার পর্য্যায় নন্দিবৃক্ষ, তাম্রপাকী, ফলপাকা, পীতক, গন্ধমুণ্ড ও ক্ষিগ্রপাকী। (বৈদ্যকরত্নমালা) গন্ধমাংসী (স্ত্রী ) গন্ধপ্রধান মাংসী। জটামাংগীবিশেষ । ইহ দেখিতে ধূসরবর্ণ, কেশর জটার সদৃশ। পৰ্য্যায়—কেশী, ভূতজটা, পিশাচী, পুতনা, ভূতকেশী, লোমশা, জটাল, লঘুমাংসী। ইহার গুণ-তিক্ত, শীতল, কফ, কণ্ঠরোগ, রক্তপিত্ত, বিষ ও জল্পনাশক এবং কাস্তিপ্রদ। ( রাজনি" ) { জটামাংসী দেখ ]
পাতা:বিশ্বকোষ পঞ্চম খণ্ড.djvu/২৩৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।