গয়াসৃউদ্দীন র্তাহার আজ্ঞাপালন না করায় তাহার গলায় জিঞ্জির দিয়া টানিয়া আনেন । কিছুদিন পরে বরঙ্গলে বিদ্রোহ ঘটে। সম্রাটের পুত্র উলুগ খাঁ বা জুন খাঁ গিয়া নগর অবরোধ করিলেন। রাজা লডডরদেব র্তাহার সহিত ঘোরতর যুদ্ধ করিতে লাগিলেন। কিন্তু গ্রীষ্ম ও উত্তপ্ত বায়ুর জন্ত পীড়িত হইয়া সম্রাটেয় সেনা দলে দলে মরিতে লাগিল । সৈন্তগণ দিল্লী প্রত্যাগমনের জষ্ঠ বিশেষ উৎসুক হইয়া উঠিল । কএক জন সেনাপতি না বলিয়া রাত্রিযোগে পলায়ন করিলেন। রাজপুত্রকে অগত্যা অবরোধ ছাড়িয়া চলিয়া আসিতে হইল। প্রত্যাগমন সময়ে শত্রুরা পশ্চাৎ ধাবমান হইয়া অনেক সৈন্ত বিনষ্ট করিল। দিল্লীতে ফিরিয়া আসিয়া নুতন সৈন্ত সংগ্ৰহ করিয়া কুমার আবার যুদ্ধ যাত্রা করি লেন । এবার বিদর ও বরঙ্গল অধিকৃত হইল। তিনি রাজাকে বর্ণী করিয়া দিল্লীতে পাঠাইয়া দেন। ইতিমধ্যে একবার গুজব উঠে যে সুলতানের মৃত্যু হইয়াছে। যাহার এই কথা রটাইয়াছিল সুলতান তাহদিগকে ধরিয়া আনিয়া জীবিত অবস্থায় সকলকে গোর দেন । সম্রাট তাহাদিগকে বলিয়াছিলেন যে, “তোমরা মিথ্যা করিয়া জীবিত অবস্থায় আমাকে গোর দিয়াছ, আমি সভ্যতা সত্য জীবিতাবস্থায় তোমাদের গোর দিব।” বঙ্গের লোকের তথাকার শাসনকৰ্ত্তার বিরুদ্ধে কতকগুলি অভিযোগ উপস্থিত করায় গয়াসউদ্দীন ৭২৪ হিজিরাসনে তাহার তদারক করিতে গেলেন, যাইবার সময় কুমার উলুগখাকে দিল্লীতে রাজ্যভার দিয়া যান। বাহাদুর বাঙ্গালার পুৰ্ব্ব অঞ্চলের শাসনকৰ্ত্তা ছিলেন। সুবর্ণগ্রামে তাহার রাজধানী ছিল। তিনি সম্রাটুকে উপেক্ষা করিয়া নিজের নামে টাকা প্রচলিত করেন। তাছার অত্যাচারে সকলেই জালাতন হইয়াছিল। গয়াসউদ্দীন আসিবার সময় ত্রিহুতে পৌছিলে লক্ষ্মণাবতীর সুলতান শাহাবুদ্দীন বস্থা শাহ বা বস্থর ধ। তাহার বহুত স্বীকার করিলেন । এই শাহাবুীন স্বীয় ভ্রাতা সুবর্ণগ্রামের বাহাদুর শাহের বিপক্ষে সম্রাটের নিকট অভিযোগ করেন। গয়াসউদ্দীন সুবর্ণগ্রামে গিয়া বাহাদুরকে পরাস্ত করিয়া তাহার গলায় রজু দিয়া দিল্লীতে পাঠাইয়া নিজেও দিল্লীযাত্রা করিলেন । পথে ত্রিহুত জর করিয়া গেলেন । রাজধানী পৌছিবার সময় পুত্র উলুগ খ তাহার সম্মানার্থ অগ্ৰে আসিয়া আফগানপুরে একটা কাঠের বাট নিৰ্ম্মাণ করিয়৷ তথায় তাহার অত্যর্থনা করেন। নানাপ্রকার ধূমধামের পর গয়াসউদ্দীন [ રg ] গয়াসৃউদ্দীন , --- তথা হইতে দিল্লীযাত্রার উদ্যোগ করিতেছেন । এমন সময়ে সেই রাট ভাঙ্গিয় তাহার উপর পড়িয়া গেল । তিনি তখনই পঞ্চভূ পাইলেন । কেহ বলেন যে, পুত্র অনেক দিন হইতে পিতাকে বিনাশ করিবার চেষ্টা করিতেছিলেন। সেই জন্তই এই বাট নিৰ্ম্মিত হইয়াছিল। কেহ বলেন, মায়াবলে এই বাট নিৰ্ম্মিত হয়, ইশ্রজাল অপহৃত হইবামাত্র বাট পড়ির গেল। রাজাবলীগ্রন্থে লিখিত আছে যে, সেই সময় দিল্লীতে মুদ্দীন আউলি নামে এক মহাপুরুষ ছিলেন। র্তাহাকে সকলে বাদশাহ অপেক্ষ অধিক সম্মান করিত । গয়াসউদ্দীন বঙ্গদেশ হইতে প্রত্যাগমন সময়ে পথে তাহাকে লিথিয় পাঠাইলেন যে, “হয় তুমি দিল্লীতে থাক, নয় আমি দিল্লীতে থাকি।” মহাপুরুষ উত্তরে লিখিলেন— “দিল্লী এখনও অনেক দূরে অাছে।” বাদশাহ এই কথা শুনিয়া তোগলকাবাদে পহুছিয়া যে ঘরে রহিলেন, সেই ঘরের ছাদ ভঙ্গিয়া বাদশাহের উপর পড়িল । তাহাতেই র্তাহার মৃত্যু হইল। ১৩২৫ খৃঃ অব্দে (৭২৫ হিঃ সনে ) ফেব্রুয়ারিমাসে এই ঘটনা ঘটে। গয়াসউদ্দীন দিল্লীনগর নূতন করিয়া নিৰ্ম্মাণ করির তোগলকাবাদ নামক দুর্গ নিৰ্ম্মাণ করেন। তারিখ মুবারক-শাহী পুস্তকে লিখিত আছে যে, এই দুর্গ নিৰ্ম্মাণ করিতে তিন বৎসরের অধিক সময় লাগে। দুর্গট বালুপাথরে নিৰ্ম্মিত। আরব্যপরিব্রাজক ইনে বতুতা মুলতানের জুম্মা মসজিদে একটা শিল্পলিপি খোদিত দেখিয়াছেন । তাহাতে বাদশাহের পরিচরস্থলে লিথিত আছে, “আমি ২৯বার তাতারাদিগকে আক্রমণ করিয়া পরাজিত করিয়াছি। এই জন্ত আমার নাম মালিক্ ইদানির।” জিয়াউদ্দীন বরণী কৃত তারিখ ই ফিরোজশাহী গ্রন্থেও ঐরূপ লেখা আছে। গয়াসউদ্দীন ৪ বৎসর ২ মাস রাজত্ব করেন । গয়াসউদ্দীম্ তোগৃলক ২য়, দিল্লীর একজন সম্রাট। ইনি সম্রাটু ফিরোজশাহ তোগুলকের নাতি ও ফতেখার পুত্র। ফিরোজশাহের মৃত্যু হইলে ১৩৮৮ খৃঃ অন্ধে (৭৯ হিঃ সনে ) সিংহাসনারোহণ করেন। বিলাসপরবশ হইয় রাজকাৰ্য্যে অবহেলা করিতেন বলিয়া রাজ্যের প্রধান প্রধান লোক ও সৈন্তসামন্ত বিদ্রোহী হইয়৷ ১৩৮৯ খৃষ্টাব্দে ১৯এ ফেব্রুয়ারী দিবসে র্তাহাকে নিহত করেন । তিনি ছয়মাস মাত্র রাজত্ব করেন। মাক্ষ দশাহ নামক পাৰ্ব্বতীয় রাজার সহিত যুদ্ধই ইহার রাজ্যকালের প্রধান ঘটনা । গয়াসৃউদ্দীন, বঙ্গদেশের একজন সুলতান। সুলতান সেকমার শাহের পুত্র। সেকন্দর শাহের স্থই পত্নী ছিলেন ।
পাতা:বিশ্বকোষ পঞ্চম খণ্ড.djvu/২৫৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।