পাতা:বিশ্বকোষ প্রথম খণ্ড.djvu/৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

উপক্রমণিকা

———: ০: ———


এই পুস্তকে পাণিনি প্রভৃতির যে

সকল প্রত্যয়াদি গৃহীত হইয়াছে

তাহাদের ব্যাখ্যা।

 ১। ধাতু এবং প্রাতিপদিকের উত্তর যাহা বিহিত হয় তাহাকে প্রত্যয় কহে। প্রত্যয় পাঁচ প্রকার; বিভক্তি, কৃৎ, তদ্ধিত, স্ত্রী প্রত্যয় এবং ধাত্ববয়ব।

 ২। বিভক্তি—প্রাতিপদিকের উত্তর সু ঔ জস্‌ প্রভৃতি, এবং ধাতুর উত্তর তিপ্ তস্‌ ঝি প্রভৃতি যে সকল অন্ত অবয়ব বিহিত হয় তাহাদিগকে বিভক্তি কহে।

 ৩। কৃৎ—ধাতুর উত্তর তব্য অনীয়র্‌ প্রভৃতি যে সকল প্রত্যয় বিহিত হয় তাহাদিগকে কৃৎ কহে। পাণিনি এই প্রত্যয় গুলিকে দুই শ্রেণীতে বিভক্ত করিয়াছেন; কৃত্যকৃৎ এবং কৃৎ। তৃতীয় পাদের প্রথম অধ্যায়ের ৯৫ সূত্র হইতে ১৩২ সূত্র পর্য্যন্ত কৃত্যকৃদন্ত প্রক্রিয়ার অধিকার, অবশিষ্টগুলি কৃৎ। (কৃত্যাঃ প্রাঙ্‌ ণ্বুলঃ। পা ৩। ১। ৯৫)। কৃত্যকৃদন্ত প্রকরণের ভিতরে, ১ তব্য, ২ তব্যৎ, ৩ অনীয়র্‌, ৪ কেলিমর্‌, ৫ যৎ, ৬ ক্যপ্‌, এবং ৭ ণ্যৎ এই প্রত্যয়গুলি গৃহীত হইয়াছে। অবশিষ্ট প্রত্যয়গুলি কৃৎ প্রকরণের অন্তর্গত।

 ৪। তদ্ধিত—গ্রাতিপদিকের উত্তর ঠঞ্‌ কন্‌ প্রভৃতি যে সকল প্রত্যয় বিহিত হয় তাহাদিগকে তদ্ধিত বলে। এতদ্ভিন্ন তিঙন্তপদের উত্তরেও কল্প প্রভৃতি তদ্ধিত প্রত্যয় বিহিত হয়।

 ৫। স্ত্রী প্রত্যয়-স্ত্রীলিঙ্গে টাপ্‌, ঙীপ্‌ প্রভৃতি যে সকল প্রত্যয় বিহিত হয় তাহাদিগকে স্ত্রী প্রত্যয় বলে।

 ৬। ধাত্ববয়ব-ধাতুর উত্তর ইট্‌ সিচ্‌ প্রভৃতি, এবং প্রাতিপদিকের উত্তর যক্ কাম্যচ্‌ প্রভৃতি যে সকল প্রত্যয় বিহিত হয় তাহাদিগকে ধাত্ববয়ব কহে।

 ৭। প্রত্যয়ের মধ্যে যে সকল বর্ণ দেখিতে পাওয়া যায়, কার্য্যকালে তাহাদের সকল বর্ণ থাকে না। যেমন, ঘঞ্‌ একটী প্রত্যয়, কার্য্যকালে ইহার স্থানে কেবল অ

থাকে, বাকি ঘ এবং ঞ থাকে না। যে সকল বর্ণ কার্য্যকালে থাকে না, তাহাদিগকে ইৎ বর্ণ কহে। ই ধাতুর অর্থ যাওয়া (ই গতৌ), ইহার উত্তর ক্বিপ্‌ প্রত্যয় করিলে ‘ইৎ’ এই প্রকার শব্দ নিষ্পন্ন হয়। ইৎ শব্দের ঠিক অর্থ যাহা চলিয়া যায়, অর্থাৎ যাহা থাকে না। প্রত্যয়ের কোন কোন বর্ণ কার্য্যকালে থাকে না বলিয়া তাহাদিগকে ইৎ বর্ণ বলা যায়।

 ৮। কিন্তু পাণিনির একটী বর্ণও নিষ্ফল নহে। কার্য্যকালে প্রত্যয়ের কোন কোন বর্ণ থাকে না বলিয়া যে, তাহারা কোন কাজে লাগে না, এমত নহে। এক একটী উদ্দেশ্য সিদ্ধ করিতে ইৎ বর্ণগুলি সঙ্কেতের জন্য গৃহীত হইয়াছে। ইৎ বর্ণ দেখিয়া ধাতুর ও প্রাতিপদিকের গুণ বৃদ্ধি করিতে হয়, ত প্রভৃতির আগম করা যায়, আকার এবং টি প্রভৃতির লোপ করা হয়, উদাত্তাদি স্বর বুঝিতে পারা যায়, স্ত্রীপ্রকরণের প্রত্যয়বিশেষ বিহিত হয়, ইত্যাদি অনেক উদ্দেশ্য সিদ্ধ হইয়া থাকে।

 ৯। *। হলন্ত্যম্‌। পা ১। ৩। ৩। উপদেশ অবস্থায় যে হল্‌ বর্ণ অন্তে থাকে তাহা ইৎ হয়। যেমন ক্যপ্‌ অণ্‌ ইত্যাদি স্থলে অন্ত্য হল্‌ প ও ণ ইৎ হইয়া থাকে। কিন্তু বিভক্তির তবর্গ, সকার এবং মকার ইৎ হয় না। (ন বিভক্তৌ তুস্মাঃ। পা ১। ৩। 8।) যেমন, তবর্গ—বৃক্ষ—ঙসি (টা ঙসি ঙসামিনাৎস্যাঃ। পা ৭। ১। ১২। অকারান্ত অঙ্গের টা স্থানে ইন ঙসি স্থানে আৎ, এবং ঙস স্থানে স্য আদেশ হয়) সুতরাং বৃক্ষ আৎ বৃক্ষাৎ হইল। এখানে ঙসি বিভক্তির স্থানে যে আৎ আদেশ হইয়াছে তাহার তকার ইৎ হয় নাই। সকার যথা,—রাম-জস্‌ রামাঃ। পচ্‌-তস্‌ পচতঃ। পচ্‌-থস্‌ পচথঃ। মকার যথা,—পচ্‌-তাম্ অপচতাম্। পচ্‌-তম্ অপচতম্‌।

 ১০। কিন্তু এইগুলি বিভক্তির তকার প্রভৃতি না হইলে ইৎ হইয়া থাকে। যেমন—। *। অচো যৎ। পা ৩। ১। ৯৭। অজন্ত ধাতুর উত্তর যৎ প্রত্যয় হয়। জি-যৎ জেয়। এখানে কৃৎ প্রকরণের যৎ প্রত্যয়ের তকার ইৎ হইল। *। ঊর্ণায়া যুস্‌। পা ৫। ২। ১২৩। উর্ণা-যুস্‌