ತ್ರ সকল ভাষাতেই ছন্দ দেখিয়া ভাষার কতক কতক কাল নিরূপণ করা যায় । বিদ্যাপতি ও চণ্ডীদাসের পয়ার ও ত্রিপদী আছে, কিন্তু তাহাতে বেশ শৃঙ্খলা নাই। তাহার পর, কবিকঙ্কণের পুস্তকে কতকটা পদ্য রচনার শৃঙ্খলা আসিয়া দাড়াইল । শেষে, ভারতচন্দ্র রায় একট নির্দিষ্ট নিয়ম ধরিয়া ছন ঠিক রাখিয়া গিয়াছেন । কিন্তু ঐ সকল কবিদের পুস্তকে অমিত্রাক্ষর ছন নাই। অতএব অমিত্রাক্ষর ছন দেখিলেই বুঝা যায় যে, আমরা বিদ্যাপতির সময় হইতে অনেক দূরে আসিয়া পড়িয়াছি। সংস্কৃত ভাষার পক্ষে অনুষ্টুপ ছন্দও ঠিক সেই প্রকার। ঋষিরা যখন প্রথম বেদমন্ত্র রচনা করিয়াছিলেন, সে সময়ে অম্বষ্টপ, ছন্দ ছিল না। তাহার পর অনুষ্টপ ছন্দের যত অধিক চলন দেখা যায়, ততই বুঝিতে পারি যে, আমরা প্রথম বৈদিক কাল হইতে অনেক দূয়ে আসিয়া পড়িয়াছি। বেদের সময়ে এই ছন্দ অল্প অল্প চলিত হইয়াছিল। তাহার পর পৌরাণিক সময়ে সকলেই ইহার আদর করিতেন। এখন ইহা সৰ্ব্বত্রই বিশেষ প্রচলিত। অম্বুষ্টপ ছন্দ সরল ও মিষ্ট এবং ইহাতে সহজে শ্লোক রচনা করা যায় । পূৰ্ব্বে বাঙ্গ,লায় অমিত্রাক্ষরচ্ছনা ছিল না। পদ্যের শেষে কথার মিল না থাকিলে, বাঙ্গালায় সে কবিতার কেহই আদর করিতেন না। মধুস্থদন দত্ত অমিত্রাক্ষরচ্ছন্দে কাব্যাদি রচনা করিয়া গিয়াছেন । তাহা বেশ মিষ্ট ও প্রাঞ্জল হইয়াছে। কিন্তু এই অমিত্ৰাক্ষর প্রচলিত হইলে পাঠকেরা দুই শ্রেণীতে বিভক্ত হইয়া পড়িলেন। যাহার। ইংরাজি জানেন, ইংরাজি ভাষায় মিণ্টন প্রভৃতি মহাকবিদের অমিত্ৰাক্ষর রচিত অপূৰ্ব্ব কাব্য পাঠ করিয়াছেন, তাহারা মধুস্থদনের কাব্যেয় বিস্তর প্রশংসা করিতে লাগিলেন । অমিত্রাক্ষরচ্ছন তাহাদের মিষ্টও বোধ হইল। কিন্তু ইংরাজি অনভিজ্ঞ ব্যক্তিরা ইহার রস পাইলেন না। র্তাহার। মেঘনাদবধাদির নিন্দ করিতে লাগিলেন। অনুষ্টুপ ছন্দের ভাগ্যেও ऊांशहे ঘটিয়াছিল। ইহা প্রথম চলিত হইলে কেহ কেহ ইহার পক্ষপাতী হইয়া উঠিলেন, কেহ কেহ প্রকারাস্তরে ইহার নিনা করিতে লাগিলেন । ঐতরেয় আরণ্যকে লিখিত আছে যে, অনুষ্ট,প, ছলে স্বৰ্গকামনাপূর্ণ হয়। (অম্বষ্টভে স্বৰ্গকাম কুৰীত৷ দুইটা অকুটুম্ভে চৌষট্টি অক্ষর আছে। তাছার তিনটা অক্ষরে এই তিন লোক । তাহাতে আবায় একুশ লোক [१७ } [ ২৮৯ ] ಇಳಿಳ হইয়াছে। প্রত্যেক একুশ অক্ষর দ্বারা তিনি সেই সকল । লোকে আরোহণ করেন এবং চতুঃষষ্টিতম দ্বারা স্বৰ্গলোকে অধিষ্ঠিত হন। (দ্বয়োর্ব অনুষ্ট,ভোশ্চতুঃষষ্টিরক্ষরাণি । ত্রয় ইম উৰ্দ্ধা, একবিংশ লোক, একবিংশত্যৈকবিংশত্যৈবর্মালোকান রোহতি স্বর্গ এব লোকে চতুঃযষ্টিতমেন প্রতিতিষ্ঠতি ) ৷ বিষ্ণুপুরাণে লিখিত অাছে যে,—একবিংশস্তোম, অথৰ্ব্ববেদ, আপ্তেশ্যাম নামক যাগ, অম্বষ্টপ, ছন এবং বৈরাজ সাম ব্ৰহ্মার উত্তর মুখ হইতে উৎপন্ন হইয়াছিল। ( একবিংশমথৰ্ব্বাণমাপ্তোযামাণমেব চ। ಇಳಕಃ স বৈরাজম উত্তরাদস্থজন মুখাৎ । ১ । ৫ । ৫৫ ) । এদিকে ভাগবতপুরাণের মতে,-প্রজাপতির মাংসহইতেত্রি: স্বায়ু হইতে অনুষ্টুপ, এবং অস্থি হইতে জগতী ছল উৎপন্ন হুইয়াছিল । (ত্রি মাংসাৎ যুতো ইষ্টুষ্টব, জগত্যস্থ, প্রজাপতেঃ ৩। ১২ । ২৯)। নিরুক্তে লিখিত আছে যে,--শরৎ, অনুষ্ঠুপ, একবিংশস্তোম এবং বৈরাজসাম ইছারা পৃথিবী—আত্মক । ( শরদ বেক বিংশস্তোমো বৈরাজং সাম ইতি পৃথিব্যাত্মনি । ৭ । ১১ )। বাল্মীকি কিম্ব তৎপরবর্তী কবিদের কাছে অম্বষ্টপ বিলক্ষণ আদরের ছন্দঃ হইয়াছিল। তাই বাল্মীকি যাহাতে ঐ ছন্দের জন্মদাতা হন, সে জন্য ‘ম নিষাদ ইত্যাদি কবিতা রচনা করিয়৷ কেহ কেহ একটা গল্পের সৃষ্টি করিয়া গিয়াছেন । বাল্মীকি আদি কবি বলিয়া প্রসিদ্ধ, অতএব অম্বষ্টপ ছল: বাহির করার যশ: র্তাহাকেই শোভা পায় । কিন্তু বাস্তবিক বাল্মীকির অনেক পূৰ্ব্ব হইতে অম্বষ্টপ ছন্দঃ চলির আসি তেছিল। তবে, ছন্দটী ভাল বলিয়া এক এক জনে তাহ বাহির করিবার যশ পাইতে ইচ্ছা করিতেন । সেকালে অনুষ্টুপ ছল যাহাদের মনোনীত হইয়া ছিল, এই গেল তাহাদের মত। কেহ কেহ প্রকারান্তরে ইহার নিন্দাও করিয়াছেন। তৈত্তিরীয় সংহিতায় লিখিত আছে যে,—প্রজাপতি আপনার প{ হইতে একবিংশ স্তোমেয় স্বষ্টি করিলেন। তাহার পর অম্লষ্টপ ছন, বৈরাজ সাম, মনুষ্যের মধ্যে শুদ্র এবং পশুর মধ্যে ঘোড়ার স্থষ্টি করিলেন। তজ্জন্ত ঘোড়া ও শূদ্র জন্ত জন্তুকে বহন করে । তজ্জন্ত শূদ্র যজ্ঞ করিতে পায় না, কারণ তাহার পর আর দেবতার স্বষ্টি করা হয় নাই। তজ্জ্বল্প প। দ্বারা তাহারা জীবিকা লাভ করে, কারণ তাহার পা হইতে হুষ্ট হুইয়াছিল। (পত্ত একবিংশং দিমির্মীত।
পাতা:বিশ্বকোষ প্রথম খণ্ড.djvu/৩১৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।