অন্তঃসত্ত্ব আট মাসেয় ছেলের ওজন দুই সের হইতে আড়াই সের পর্য্যস্ত, দৈর্ঘ্য ১৭ । ১৮ ইঞ্চ । এই অবস্থায় প্রায় কোন অঙ্গ গজাষ্টতে বাকি থাকে না। শরীরও বেশ ঈষ্ট পুষ্ট ও পরিপক্ক হয়। তাই সাত আট মাসে ভূমিষ্ট হইয়া অনেক সন্তান জীবিত থাকে । পূর্ণগর্ভাবস্থ। এখানে স্বাভাবিক সংস্থানের কিছু ব্যতিক্রম হইয়াছে। ৯ । ১০ মাসে পূর্ণগর্ভাবস্থা উপস্থিত হয়। পূর্ণগর্ভা বস্থায় সস্তানের ওজন প্রায় ৩ সের হইয়া থাকে, এবং দৈর্ঘ্য নুনাধিক ২০ ইঞ্চ পর্য্যস্ত হইতে পারে। কিন্তু, জনক জননী দীর্ঘাকার হইলে অনেক স্থলে গর্ভের সন্তানও দীর্ঘাকার হয় । নভাস্কোসিয়াতে একটি স্ত্রীলোক ৭ ফিট্ ৯ ইঞ্চ দীর্ঘ ছিলেন, তাহার স্বামী ৭ ফিট্ ৭ ইঞ্চ দীর্ঘ ছিলেন । ঐ স্ত্রীলোকেয় একটা সস্তান জন্মে। শিশুটা ভূমিষ্ঠ হইয়াই প্রাণত্যাগ করে। তাহার ওজন, কিছু কম ১২ সের হয়, এবং দৈর্ঘ্য ৩০ ইঞ্চ হইয়াছিল। কিন্তু এরূপ ঘটনা অতি বিরল । তবে, ১১ । ১২ মাসে সস্তান ভূমিষ্ঠ হইলে অপেক্ষাকৃত কিছু অধিক ভারী ও বড় হইবার সম্ভাবনা । জরায়ুর ভিতর ছেলের মাথা নিম্ন দিকে থাকে। চিবুক, কণ্ঠার নিম্নে বক্ষঃস্থলে চাপা । হাত দুইটা পর স্পর বাহুর উপর দিয়া বুকের মধ্যে গুটান ; পা, উরুর নিম্ন দিয়া পেটেয় উপরে টানিয়া রাখা । নাভি-রজু, উরু এবং বাহুর মধ্যস্থলে থাকে, সে জন্ত তাহাতে চাপ লাগিতে পায় না । ছেলের এই রূপ সংস্থানের অন্যথা হইলে প্রসবের সময়ে বিঘ্ন ঘটিতে পারে। কিন্তু সং [ ૭૦૯ ] অন্তঃসত্ত্ব৷ স্থানের সামান্ত রূপ ব্যতিক্রম হইলে কিছুই অনিষ্ট ঘটে না । গর্ভের ভিতরে সন্তান মুখ দিয়া খায় না ; কিন্তু তবু বাচিয়া থাকে, দিন দিন হৃষ্ট পুষ্ট হয়। তাহার কারণ এই, ভোজনের ফল অন্ত প্রকারে সিদ্ধ হইয়া থাকে । গর্ভসঞ্চায়ের প্রথমাবস্থায় অণ্ডের কি রূপে পরিপোষণ হয়, সে বিষয়ে অনেক মতভেদ আছে । কেহ কেহ অম্বুমান করেন যে, অণ্ড-প্রণালীর ভিতর হইতে এক প্রকার রস বাহির হয় । জরায়ুর দিকে অণ্ড আসিবার সময়ে সেই রস তাহার আবরণে মিশ্রিত হইয়া যায়। প্রথম প্রথম তাহাতেই ক্রণের পোষণ হইয়া থাকে । গর্ভাশয়ের ভিতরে অও আসিয়া পড়িলে তখন নাভি-পদার্থে উহার পোষণ হয়। তাহার পর ফুল ও নাভি হইতে নাড়ীরঞ্জ জন্মে, তখন জননীর শরীরের রসে সন্তান দিন দিন বাড়িতে থাকে। আমরা নাক মুখ দিয়া নিশ্বাস লই, নিশ্বাসের বায়ুতে অম্লজান আছে । সেই অন্নজনে শরীরের রক্ত পরিষ্কার হয়। আর প্রশ্বাস ফেলিলে তাহার সঙ্গে শরীরের দুষ্ট পদার্থ বাহির হইয়া যায়। গর্ভের ভিতরে সস্তানের এ প্রকার নিশ্বাস প্রশ্বাস নাই। ফুল দিয়া গর্ভিণীর শরীরের পরিষ্কার রক্ত সস্তানেয় দেহে আসে এবং ফুল দিয়া সস্তানের শরীরের অপরিষ্কার পদার্থ বাহির হইয়া যায়। ইহাতেই শ্বাস প্রশ্বাসের ফল সিদ্ধ হয়। গর্ভের ভিতরে সস্তানের ফুসফুস যকৃতের মত নিরেট থাকে। সন্তান ভূমিষ্ঠ হইয়। কাদির উঠে, তখন ফুসফুসে ছিদ্র হয় । অতএব, ছেলের নাভির সঙ্গে জননীর গর্ভে ষে নাড়ী ও ফুল লাগিয়া থাকে, তাহাই সস্তানের জীবন রক্ষার একমাত্র উপায়। রক্ত সঞ্চালন, শ্বাস প্রশ্বাস, পরিপোষণ এবং স্বাভাবিক সমুৎসর্গ সকলি ঐ ফুল দিয়া হইতে থাকে। যমজ সন্তান হয় কেন, এ কথার ঠিক উত্তর দেওয়া সুকঠিন। (৬)তবে এই কথা অনেকে বিশ্বাস করেন যে, একটা পানমুচিয় ভিতরে দুইট সন্তান থাকিলে একটা পুত্র ও আর একটী কন্যা হয়। এমন অবস্থায় ফুলও একটী থাকে। প্রথম হইতে অণ্ডের মধ্যে ছুইটী অঙ্কুর থাকিলে (৬) আমাদের ৰৈদাশাস্থে স্ত্রী, পুরুষ ও নপুংসক জরাইবার এই রূপ কারণ নির্দিষ্ট আছে ; যুগ্মস্থ পুত্র জায়ন্তে স্থিয়ৌহযুগ্মাহু রাত্রিযু। ঋতুর যুগ্মরাত্রিতে পুরুষ সংসর্গ ঘটিলে পুত্র হয় এবং অযুগুয়াত্রিতে কন্য। জন্মে।
পাতা:বিশ্বকোষ প্রথম খণ্ড.djvu/৩২৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।