অপেয় জল পান করা অনুচিত। ব্রাহ্মণাদি কোন জাতি তাদৃশ কপের জল পান করিলে প্রায়শ্চিত্ত করা কৰ্ত্তব্য। ব্রাহ্মণে ত্রিরাত্র উপবাস করিয়৷ পঞ্চগব্য খাইবেন । ক্ষত্রিয়ের পক্ষে দুই রাত্রি উপবাস ও পঞ্চগব্য পান করা প্রশস্ত । বৈশুজাতি এক দিন উপবাস করিয়া পঞ্চগব্য খাইবেন । শূদ্রের দিবাতে উপবাস করিয়া রাত্রিতে পঞ্চগব্য থাইলেই শুদ্ধ ইষ্টতে পারে। কৃপের মধ্যে পঞ্চনথ পশুর মাংস পচিয় গেলে আপস্তম্ব আরও কিছু কঠিন নিয়ম করিয়াছেন । তিনি বলেন, এ রূপ ক্ষেত্রে ব্রাহ্মণের ছয় দিন উপবাস কর চাই। মানুষের মৃতদেহে জল দূষিত হইলে তাহাও পান করিবে না। জ্ঞানপুৰ্ব্বক পান করিলে বার দিন উপবাস করা আবশ্বক। গোদোহন পাত্রের জল, মসকের জল, বানির জল, দুগ্ধ মিশ্রিত জল, শিল্পীরা শিল্প কাৰ্য্য করিতে কোন দ্রব্যে যে জল দেয় তাহ এবং স্ত্রী বালক ও বৃদ্ধের অপ্রত্যক্ষে যে জলে কোন অনদ্বাবহার করে তাদৃশ জল ব্যবহার করা যাইতে পাবে। চৰ্ম্মভাণ্ড দ্বারা উদ্ধত জল, কলের দ্বারা উদ্ধৃত জল এবং অল্পবিত্র বস্তুর সঙ্গে যে জলের ধারা লাগিয়াছে, : [ ৪১১ ] তাদৃশ জলের পরিমাণ যদি এত অধিক হয় যে, তাহাতে ; একটী গোরুর তৃষ্ণ নিবারণ হইতে পারে, তবে অন্ত জল না পাইলে আপং কালে তাহা ভূমিতে ফেলিয়। পান কর। যাইতে পারে, তাহাতে দোয হয় না । বর্ষাকালে বৃষ্টির জল তিন দিন পরে পান করা যায়। অকালে বৃষ্টির জল দশ দিন পর্য্যন্ত অপেয় । যদি ইঙ্গার মধ্যে কেহ পান করে, তবে শাস্ত্রায়ুসারে তাহার প্রায়শ্চিত্ত করা কর্তব্য । বৃষ্টির জল এবং শূদ্রের আনীত জল দ্বারা স্নান, আচমন, দান, দেবপূজা ও পিতৃতৰ্পণাদি বৈধ কৰ্ম্ম কিছুই করিবে না । তাদৃশ জল পান করাও নিষিদ্ধ। গঙ্গা, যমুনা, প্লক্ষজাতা সরস্বতী প্রভৃতি সমুদ্রগামিনী নদী ও শোণ প্রভৃতি নদ ভিন্ন আর সকল নদীই শ্রাবণ ও ভাদ্র মাসে রঞ্জস্বল। হয় । তজ্জন্ত সেই সকল নদীতে স্নান বা তাহার জল পান করিতে নাই। সমুদ্রের জলও অপেয় । মতু প্রভৃতি প্রাচীন ঋষির নিয়ম করিয়াছেন যে, প্রসবের পর দশ দিন পর্য্যন্তু গো, মহিষ ও ছাগলের দুগ্ধ পান করিতে নাই । তদ্ভিন্ন, অশ্ব গর্দভ প্রভৃতি যে সকল পশুর খুর চেরা নহে, তাহদের দ্বন্ধ অপেয় । মহিষ ভিন্ন অন্ত কোন বহু পশুর দুগ্ধ পাস করা উচিত অপেয় নহে। ছাগল ভিন্ন আর যে সকল পশুর কেবল ছুইটী করিয়া বাট আছে, তাহাদের দুগ্ধ পান, কর অকর্তৰ্য। বাছুর মরিয়া গেলে কিম্বা গর্ভগ্রহণের নিমিত্ত গাভি যাড়ের কাছে থাকিলে তাহার দুগ্ধ পান করিবে না । গোরু প্রভৃতির দুগ্ধ শুদ্ধ, কিন্তু স্তনে ক্ষত থাকিলে অথবা কোন পশুকে মদ্যাদি পান করাইলে তাহাঙ্গের দুগ্ধ পান করিতে নাই। যাতার দুধ বাট হইতে আপনিই ক্ষরিত হয় এবং যে গোরুর দুইট বাছুর, তাহাদের দুগ্ধ অপেয় । মামুষের দুগ্ধও দুছিয়া পান করিতে নাই। শঙ্খের মতে, দীর্ঘকাল ঐ সকলের দুধ পান করিলে প্রায়শ্চিত্ত করা কর্তব্য। শাতাতপের মতে, পুনঃ পুন: উটের কিম্বা মানুষের দুধ পান করিলে ব্রাহ্মণাদির পুনৰ্ব্বার উপনয়নের সহিত তপ্তকৃচ্ছ, প্রায়শ্চিত্ত করা উচিত। গোতম বলেন, মাটা তোলা দুধ এবং মাখন গল - ইলে যে শিঠ পড়ে তাহ, তৈল বাহির করা খইল, অত্যন্ত সার বাছি র করা জলের দ্যায় ঘোল, ও সারাংশ উদ্ধৃত করিলে আসার মাংস প্রভৃতি কোন দ্রব্যই ব্যবহার করিবে না । শূলপাণির মতে, কপিলা গোরুর দুধ পান করিলে সচ্চরিত্র ক্ষত্রিয়, বৈপ্ত ও শূদ্রের প্রায়শ্চিত্ত করা কৰ্ত্তব্য । বৈদ্যশাস্ত্রোক্ত ধাতুবৈষম্যজনক কতকগুলি অপেয় আছে, তাহার অধিকাংশই কুপথ্যের মধ্যে পরি গণিত, বর্ষাকালের জলে গাঙ্গেয়ত্ব ও সামুদ্রত্ব এই দুইটী গুণ হয়। তন্মধ্যে গাঙ্গেয়ত্ব জল পান করিতে নিষেধ নাই। সামুদ্র জলের চিহ্ন, বিকৃত বর্ণ এবং ক্লেদযুক্ত। যেই জল অপের। কীট, মূত্র, বিষ্ঠা, ডিম্ব ও শব প্রভৃতির রসে দূষিত, তৃণ ও বৃক্ষের পতিত পত্র দ্বার দুৰ্গন্ধ, ঘোলা ও বিষযুক্ত বর্ষাকালের জলে স্নান করিলে বা তাহ পান করিলে, বাহ এবং আভ্যন্তরিক রোগ স্ত্রন্মে। যে জল শৈবালাদিতে আচ্ছাদিত এবং যাহাতে চন্দ্র সুৰ্য্যের কিরণ বা বাতাস লাগে না, সেই বিরস ও বিবর্ণ জলের নাম ব্যাপল্প। ব্যাপন্ন জল স্নান ও পানাদির পক্ষে নিষিদ্ধ। তাদৃশ জল ব্যবহার করিলে শোথ, পাণ্ডুরোগ, চৰ্ম্মরোগ, অপরিপাক, শ্বাসকাস, প্রতিস্থায় (পীনস},শূল,গুল্ম,উদরী এবং অন্তান্ত অনেক উৎকটরোগ উৎপন্ন হয়। যে নদী পুৰ্ব্ব মুখে প্রবাহিত হয়, তাহাৰু জল স্বভাবতঃ ভারি, অতএব তাহ ব্যৱহাৰ্য্য লছে ।
পাতা:বিশ্বকোষ প্রথম খণ্ড.djvu/৪৩৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।