অভিনয় এরূপে আর কিছুতে ব্যক্ত হয় না। বাক্য দ্বারা মনের ভাব ব্যক্ত করিতে হইলে এই টুকুই তাহার সৌন্দৰ্য্য। শকুন্তলা যদি বলিতেন,–‘না সখি! আমার এপ্রকার মনঃকষ্ট হইয়াছে যে, তোমরা পদ্ম পত্র দ্বারা বাজন করিতেছ তাহা আমি জানিতেও পারিতেছি না”— তাহা হইলে কিছুই সৌন্দৰ্য্য থাকিত না, শকুন্তলার কাতর বাক্যে আমাদের হৃদয়ের মৰ্ম্মস্থান পর্য্যস্ত স্পর্শ করিত না । সীতা বনবাসে আছেন, এক দিন হঠাৎ রামের মত মধুর কথা শুনিয়া তমসাকে জিজ্ঞাসা করিলেন,— জলভরা নবীন মেঘের মত গম্ভীর শব্দ এ আমার আর্য্যপুত্রের ভিন্ন আর ত কাহারও নয় ? তমসা দুই একবার চাতুরী করিলেন ; কিন্তু শেষে গোপন করিয়া আর না রাখিতে পারিয়া বলিলেন,— শ্ৰয়তে তপস্ততঃ শূদ্ৰস্ত দণ্ডধারণার্থম্ ঐক্ষাকে রাজা জনস্থানমাগত ইতি। শুনিয়াছি, ইক্ষাকু বংশের রাজা নাকি কোন শূদ্রের তপস্তার জন্ত দণ্ড করিতে এ জনস্থানে আসিয়াছেন । বার বৎসর স্বামীর সঙ্গে দেখা নাই ; এমনস্থলে সামান্ত ঘরের সামান্ত প্রকৃতির স্ত্রীলোক হইলে আহলাদে ও দুঃখে কত কাদিতেন, চুটিয়া গিয়া স্বামীর পদতলে লুটাইয়া পড়িতেন। কিন্তু সীতা জনক কন্যা, রঘুকুল বধূ, বীরপত্নী ; তাহার উচ্চ হৃদয়ে উচ্চ তেজ, অগাধ গাম্ভীৰ্য্য, আবার মন অভিমানে ভরিয়া আছে। তিনি আহলাদ করিলেন না, কেবল বলিলেন,—দিf ট্রঅ৷ অপরিহীণরাঅধৰ্ম্মে কৃথু সে রাজা । ভাগ্যক্রমে সে রাজার রাজধৰ্ম্ম অক্ষুঃ ভাবে চলিতেছে ত ? এখানে এই কয়েকট শব্দে সীতার তেজ, অভিমান ও মনের ভাব একেবারে উথলিয়। উঠিয়াছে। এমন সৌন্দৰ্য্য আর কিছুতে নাই। অভিনয় ব্যাপারে সীতার মত অভিমান করিয়া ঠিক সে সময়ের মত কাতরোক্তি করাই যথার্থ সৌন্দর্য্য। রসজ্ঞ ব্যক্তিরা বলিয়া থাকেন, সৌন্দৰ্য্য একেবারে খুলিয়া দেখাইলে তাহার তেমন শোভ থাকে না । পূর্ণচন্দ্র দেখাইতে হইলে অল্প ভাঙ্গা ভাঙ্গা লঘু মেঘের কোলে একটু ঢাকিয় দেখাইলে অধিক মুনীর দেখায়। নাটকেরও ভাব একেবারে খুলিয়া বলিলে তাহার রস নষ্ট হয়। কিঞ্চিৎ অস্পষ্ট রাখিয়া মনের কথা বলিলে श्रथिक मिठे शहेग्रां १८क । [ ৪৫১ ] ज्रछिमग्न বেশভূষাদি রচনাদার প্রকৃত মূৰ্ত্তির অনুকরণ করাকে আহার্য্য কহে। প্রকৃত ঘটনার মধ্যে যে ব্যক্তির যেমন বয়ঃক্রম এবং যে ব্যক্তির যেমন বেশভূষা হওয়া উচিত, অভিনয়কালে ঠিক তক্রপ হওয়া আবশুক । এই নিয়মানুসায়ে কাজ না করিলে অভিনয় মনোহর ছয় না। আজি কালি যাত্রার মধ্যে অনেকস্থলে এই নিয়মের প্রতি লোকের দৃষ্টি থাকে না, তজ্জন্ত দৃপ্ত অতি কুৎসিত হইয় উঠে। লব কুশ সাজিতে হইলে দ্বাদশ বৎসরের বালক হইলেই শোভা পায়। আবার তাহারা বনবাসী ; বনে রাজবসন, রাজভূষণ নাই ; অতএব লব কুশকে বাকলেয় মত কোন কাপড় এবং বন ফুল দিয়া সাজাইলেই ভাল দেখায় । স্তম্ভ স্বেদ রোমাঞ্চাদিকে সাত্ত্বিক ভাব কহে । এই ভাব, মুখ এবং হস্তপদাদির বিশেষ ভঙ্গী দ্বারা, এবং রোমাঞ্চ ও অশ্রুপাত দ্বারা সাধিত হয় । অভিনয়ে কয়েকট গুণ নিতান্ত আবক্সক। যথা— অনুকরণনৈপুণ্য, দৃপ্তসৌষ্ঠব, শ্রীতিমাধুৰ্য্য এবং পরি হাস। মানুষের প্রকৃতি এই, মনে যথার্থ বস্তুর সংস্কায় হইয়া থাকিলে, পরে তাহার নকল বস্তু দেখিলে অতিশয় আহলাদ জন্মে। মানুষের স্বাভাবিক এই ধৰ্ম্ম আছে বলিয়া আমরা বানরের নানাপ্রকার কৌতুক দেখিতে ভাল বাসি । কারণ তাহারা অনেক সময়ে মানুষের অনুকরণ করে। পট এবং পুতুল দেখিতেও আমাদের কৌতুহল জন্মে, কারণ এ গুলিও স্বাভাবিক বস্তুর অহুকয়ণ। কিন্তু অমুকরণে ঠিক সোসাদৃগু না থাকিলে কিছুই আহলাদ জন্মে না। অভিনয় কাৰ্য্যও অনুকরণ। কিন্তু চিত্ৰপট এবং পুতুলের চেয়ে এ অমুকরণ আরও কঠিন। ইহাতে হৃদয়ের প্রত্যেক ভাবভঙ্গী উপরে আনিয়া দেখাইতে হয়। মনে যথার্থ শোক দুঃখ নাই, তবু অমুকরণের উপরোধে একবার কঁাদিতে হুইবে । কিন্তু সে সময়ে হাসি মুখে শুষ্ক কাল্প কাজিলে চলিবে না । গাল ফুলাইয়া, ঠোঠ কঁপাইয়া, চক্ষু ছল ছল করিয়া ঠিক শোকের সময়ের মত মলিন মুখে অশ্রুপাত করিতে হইবে । এই রূপ সকল বিষয়েই যথার্থ অনুকরণনৈপুণ্য না থাকিলে অভিনয় প্রীতিকর হয় না । पृथानोईद गरुण गमट्ज भश्कब्रt१ब्र अछ भांदशक ন হইতে পারে, কিন্তু রঙ্গভূমিতে ইহা শ্রোতা এবং দর্শকদের প্রতি জন্মাইবার একট প্রধান উপকরণ।
পাতা:বিশ্বকোষ প্রথম খণ্ড.djvu/৪৭৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।