পাতা:বিশ্বকোষ প্রথম খণ্ড.djvu/৬৮৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অষ্ট্রেলিয়া [ ও৬০ ] অষ্ট্রেলিয়। জাল শিকারের দ্রব্য। বল্লামে লোহার ফল৷ নাই ; সামান্ত লাঠীর ডগার পাথর কিম্ব জস্তুর হাড় লাগানে৷৷ গাছের অণশ কিম্ব ঘাস দিয়া ইহারা মাদুরের মত এক প্রকার কাপড় বুনিতে পারে। পালক কিম্বা পশুর লেজ মাথার অলঙ্কার। গলায় গৌড়ী গুগুলীর মাল। তাহাদের মধ্যে কোন কোন জাতীয় লোক যৌবন কাল আসিলেই উপর মাড়ীর সন্মুখের দুইট দাত ভাঙ্গিয়া দেয়। অঙ্গের আয় পাচটা শোভার মধ্যে নবীন বয়সে সম্মুখ মাড়ীর দাত না থাক। একটা বেশী শোভ । ইহাদের আর এক সম্প্রদায় আছে। তাহাদের মধ্যে সুন্নত দিবার প্রথাও দেখা যায়। বল্লাম ভিন্ন ইহাদের দা এবং কুড়ালও অাছে। কিন্তু এগুলিও লোহার অস্ত্র নয়, বস্ত পশুর হাড়ে নিৰ্ম্মিত। উহাতেই তাহারা যুদ্ধ ও শিকার করে। ইহাদের আর এক প্রকার আশ্চৰ্য্য অস্ত্র আছে, তাহার নাম বুমেরাং । ইহা এক খানি বাকা কাঠের ফলা ; কিন্তু ইহার নিৰ্ম্মাণ কৌশল অনেকটা আশ্চৰ্য্য। সন্মুখ দিকে ছুড়িয়া মারিলে ইহা পুনৰ্ব্বার পশ্চাৎ দিকে ফিরিয়া আসে। স্ত্রীলোকেয়া মৃত পশুর শিরা ও গাছের আঁশ দিয়া জাল বুনে। ঐ জাল দ্বারা তাহার কাঙ্গারু প্রভৃতি বন্ত পশু এবং মৎস্ত প্রভৃতি ধরিয়া থাকে। সমুদ্রে মাছ ধরিবার জন্ত ইহাদের ভেলা এবং ডোঙ্গ৷ আছে। আজি কালি অসভ্য জাতির সংখ্যা ক্রমে কমিয়া আসিতেছে। এখানকার লোকের বিবাহের কিছু ঠিক নাই। কাহরও এক পত্নী, আবার অনেকের বহুপত্নীও আছে। কিন্তু বিবাহিতা স্ত্রীলোকের প্রায় সকলেই পতিব্ৰতা । তবে কেহই অসতী নাই এমন কথা নয়। কচিৎ কাহারও চরিত্র দোষ ঘটিলে ইহার সেই অসন্তী নারীর প্রাণ বধ করে। কিন্তু কুমারী কিম্বা বিধবাদের চরিত্র দোষ ততটা গুরুতর বলিয়া ধৰ্ত্তব্য নয়। ইউরোপীয়দের মধ্যে ফুষ্টলোকেরা ইহাদের অনেককে ব্যভিচারিণী করিয়া দিয়াছিল, সে জন্ত মধ্যে মধ্যে বিরোধ ঘটিত। তিন শত বৎসরের কম নয় ইউরোপের লোকে। অষ্ট্রেলিয়া দ্বীপ আবিষ্কার করিয়াছেন। প্রথম কে এখানে আসেন তাহার ঠিক নাই। উত্তমাশা অন্তরীপ আবিষ্কৃত হইল ; পশ্চিমে আমেরিকা,—তাহাও সভ্য জগতের চক্ষে পড়িল। নূতন দেশ, নূতন দ্বীপ বাছির ৰরিবার জন্ত চারিদিকে ইউরোপীয়দের জাহাজ ছুটিল। এই রূপ প্রবাদ, ১৬০৬ খৃঃ অবো তরেন মামক জনৈক স্পেনবাসী পেরু হইতে অষ্ট্রেলিয়া আসেন। তাছার পর যবদ্বীপ হইতে ওলন্দাজের এখানে উপস্থিত হন। ১৬৪২ সালে তাম্মান নামক এক জন ওলন্দাজ অষ্ট্রেলিয়ার নানা স্থান দেখিয়া যান। তাহারই নাম হইতে অষ্ট্রেলিয়ার দক্ষিণকূলবর্তী দ্বীপের নাম তন্মানিয়া। ১৬৮৬ সালে ইংরাজের প্রথম এখানে আসেন। সেই বৎসরেই কাপ্তেন উইলিয়ম দাম্পিয়ার নামে একজন সমুদ্র দস্থ উহার উত্তর-পশ্চিম কূল দিয়া ফিরিয়া ঘুরিয়া যায়। দুই বৎসর পরে, অষ্ট্রেলিয়ার বিশেষ অনুসন্ধান করিবার জন্য ইংরাজের দাম্পিয়ারকে এখানে পাঠাইয়। দিলেন । ১৭৬৯ সাল হইতে ১৭৭৭ সাল পর্য্যন্ত বিখ্যাত নাবিক কাপ্তেন কুক অষ্ট্রেলিয়ার চারিদিকের সমুদ্র কুল ভাল করিয়া দেখিয়া যান। ১৭৮৮ সালে ইংরাজের অপরাধীদিগকে অষ্ট্রেলিয়ার দক্ষিণ পূৰ্ব্ব প্রদেশে নব— দক্ষিণ—ওয়েলসে নিৰ্ব্বাসিত করিতে আরম্ভ করেন। যে স্থানে ইংরাজ অপরাধীরা আসিয়া থাকিত এখন সেখানকার নাম জাক্ষন বন্দর। আজি কালি সেই বন্দর প্রসিদ্ধ সিদ্‌নী নগর হইয়া উঠিয়াছে। ১৮০৩ সালে বান-দি-মান দ্বীপেও অপরাধীর প্রেরিত হইতে লাগিল। কালক্রমে নিৰ্ব্বাসিতদের পুত্রপৌত্রের স্বাধীন হইল । কিন্তু তাহারা দুৰ্বত্ত লোকের সস্তান, এ পরিচয় দিতে বড়ই ঘুণ। সে কারণ তাহারা বান-দি-মান দ্বীপের নাম তাম্মানিয়া রাখিল । ১৮২৫ সাল পর্য্যস্তু তাম্মানিয়া, নব-দক্ষিণ-ওয়েলসের অধীনে ছিল, তাহার পর উহ! পৃথক হইয় পড়ে। ১৮৩৫ সালে তাম্মানিয়ায় কতকগুলি লোক সমুদ্রের থাড়ী পার হইয়া নব-দক্ষিণ-ওয়েলসের দক্ষিণদিকের ভূভাগ অধিকার করে। পূৰ্ব্বে ঐ স্থানের নাম ফিলিপ, বন্দর ছিল, এখন উহা বিক্টোরিয়া নামে একটা পৃথক প্রদেশ হইয়াছে। ইহার প্রধান নগরের নাম মেলবোয়ন। ১৮২৭ সালে এক সম্প্রদায় ইংরাজ বণিকৃ পশ্চিম অষ্ট্রেলিয়। প্রদেশ সংস্থাপিত করেন। ইহার প্রধান নগরের নাম পার্থ। অপর এক বণিক্‌ সম্প্রদায় দক্ষিণ অষ্ট্রেলিয়া প্রদেশ সংস্থাপিত করেন। উহার প্রধান নগরকে আদিলেদ কছে। ১৮৫৯ সালে নবদক্ষিণ-অষ্ট্রেলিয়ার উত্তর ভাগ পৃথক প্রদেশ হইয়া পড়ে। উহ! এখন কুইন্সলান্দ নামে খ্যাত। ইহার রাজধানী