অগ্ন্য [66 J जर्धा আর্য্যেরা বিজ্ঞান শাস্ত্রের অনেক জটিল বিষয় বুঝিয়াছিলেন ; তাই বোধ হয়, এখনকার ডাইনেমাটটের মত কোন রকম দাহ পদার্থ দিয়া তাহার একটা ভয়স্কর অস্ত্ৰ নিৰ্ম্মাণ করিয়া থাকিবেন । সে দিন পর্য্যন্ত হিন্দু, গ্রিক এবং মুসলমানের যুদ্ধক্ষেত্রে সর্প, বৃশ্চিক এবং আগুন ব্যবহার করিতেন, ইতিহাসে তাহার প্রমাণ পাওয়া যায় । মন্ধদ সুবক্তগীনের ইতিবৃত্ত “কিতাব ই-য়ামীনী’ নামক পুস্তকে লিখিত আছে যে, পূৰ্ব্বকালে শক্রদের মধ্যে সর্প ও বৃশ্চিক ফেলিয়া দিয়া যুদ্ধ করা হইত। কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের সময়ে দুর্য্যোধন আপন পক্ষের শিবির রক্ষা করিবার জন্তু সেনাদের হাতে সর্প, বৃশ্চিক, বালি ও তৈল দিয়া রাখিয়াছিলেন। তারিখ-ই-আলফা পুস্তকেও লিখিত আছে যে, মক্ষদের মৃত্যুর সাত বৎসর পরে, ওমারের রাজত্বকালে, নাসিবিন্ নগর আক্রমণের সময় শত্রুদের মধ্যে কাল কাল বিছা ফেলিয়া দেওয়া হইয়াছিল। প্রায় ত্রিশবৎসর হইল পূৰ্ব্ববাঙ্গালার চোরের যাত্রিদের নৌকায় সাপ ও আ গুন ফেলিয়া দিত। যাত্রিরা শশব্যস্ত হইলে তাহদের সর্বস্ব লুটিয়া লইত। তাই বোধ হইতেছে, সর্প অগ্নি প্রভৃতি ভয়ানক দ্রব্য দূর হইতে শক্রর মধ্যে ছুড়িয়া ফেলি। বার কোন রকম কৌশল আর্য্যের জ্ঞাত ছিলেন। কেহ কেহ বলেন, অগ্ন্যন্ত্র কামান কিম্বা বন্দুক হইবে। রাজপুতানার লোকে বন্দুককে অগ্নিবাণ কহে। বিলাতে রিভল ভারের কৃষ্ট হইবার পূর্বে রাজপুতানার লোকের রিভল ভার গড়িতে জানিত, তাহারও প্রমাণ আছে । গত বৎসরের (১৮৮৪ খৃ অব্দের) কলিকাভায় মেলায় রাজওয়াড় হইতে একটা চারিনল বন্দুক আসে। সেই রিভলভার বন্দুকট চারিশতবৎসরেরও অধিক পুরাতন। তাই কোন কোন লোকের বিশ্বাস যে, ভারতবর্ষে বন্দুক কামান ও গোলাগুলি বহুকাল হইতে চলিয়া আসিতেছে। এ অমুমান কত দূর সত্য জানি না। কিন্তু প্রাচীন আর্য্যেরা তীরের ফলায় অগ্নি ও এখনকার ডাইনেমাইটের মত কোন ভয়ানক দাহ পদার্থ ব্যবহার করিতেন তাহার প্রমাণ পাওয়া যায় । ন কৃটেরায়ুধৈর্যন্তাৎ মুখ্যমানে রণে রিপুন। ন কণিভিন্নপি দিগুৈর্নাগ্লিজলিততেজনৈ: | r . মনুসংহিতা ৭। ৯০ ৷ রাজা কখন কুটাস্ত্র দ্বারা যুদ্ধ করিবেন না, কর্ণাস্ত্র দিয়াও যুদ্ধ করিবেন না, কিৰা ৰে বাগের ফল বিষাক্ত বা যাহাতে অগ্নি প্রজ্বলিত থাকে, তেমন অস্ত্ৰ দিয়া শক্রকে আঘাত করিবেন না । মতুর এই বচন দ্বারা স্পষ্ট জানা যাইতেছে, অগ্ন্যন্ত্র কেবল কবিদের কল্পনা নহে। কল্পনা হক্টলে মতু তাছার জন্তু কখন একটা নিষেধ বিধি করিতেন না । অগ্নাস্ত্র সকলের প্রতি নিক্ষেপ করিতে নাই। রাক্ষস প্রভৃতি যাহারা প্রবল শক্র, আর্য্যের তাহাদিগকেই অগ্নিবাণ মারিতেন। তবে যুদ্ধের সময় ক্রোধ সম্বরণ করিতে না পারিয়া কোন কোন বীর মানুষকেও অগ্নিবাণ মারিয়া ছেন, মহাভারত তাহার প্রমাণস্থল । প্রথম প্রথম, মানুষে অগ্নিদ্বারা আপনাকে রক্ষা করিতে ও শক্রকে নষ্ট করিতে চেষ্ট পাইতেন । কেহ গ্রাম কিম্ব তুর্গ আক্রমণ করিলে আততায়িদের মাথায় পাথর ও আগুন ফেলিয়া দেওয়া হইত। ১৩৯৯ খৃ অব্দে তৈমুর শাহ দিল্লি আক্রমণ করেন । তিনি ভারতবর্ষীয় গঙ্গযুথকে ভয় দেখাইবার জন্য উটের পৃষ্ঠে তৃণরাশি জালিয়া শত্রীদের দিকে তাড়াষ্টয়া দিলেন । সেই আগুন দেখিয়া সমস্ত হাতী চুটিয়া পলাইল । আর্যের প্রথমে তীরের ফলায় ধুন, তৈল, ঘুত, পাট, তুল প্রভৃতি দ্রব্য জড়াইয়া রাথিতেন। শক্রকে বাণ মারিবার সময় তাহ জালিয়া নিক্ষেপ করিতেন। ক্রমে ক্রমে বুদ্ধি ও বিজ্ঞানের উন্নতি হইতে লাগিল, তাহার আরও উৎকট উৎকট ব্ৰহ্মাক্সের আবিষ্কার করিলেন । আরাকান, ব্রহ্মদেশ, চীন, সিন্ধুনদের নিকটবর্হিস্থান এবং পারস্যদেশে মাটর ভিতর দাহ পদার্থ মিলে । (Naptha and other bitumenous substances) এই পদার্থে এক্ষণে কেরোসীন তেল প্রস্তুত হয়। আর্য্যের ঐ দ্যাপথ। প্রভৃতি দ্রব্যের সঙ্গে ধূনা, গন্ধক, সোরা ও অন্তান্ত দাহ পদার্থ মিশাইসা কোন প্রকার অস্ত্ৰ নিৰ্ম্মাণ করিয়া থাকিবেন। তাছার তেজ এখনকার ডাইনেমাইট্র অপেক্ষা কোন অংশে নুন নছে, ইহাই অকুমান হইতেছে। মূখের হাতে পড়িলে এই অন্ত্রদ্বারা এক দিনে ত্রিজগৎ উল্টিয়া যাইতে পারে, তাই বিজ্ঞলোকের যে সে ব্যক্তিকে অগ্ন্যস্ত্রের গৃঢ় সন্ধান বলিয়া দিতেন না । নিতান্ত প্রিয় শিষ্য হষ্টলে গুরুর তাহাদিগকে দুই একটা বাণ দিতেন । আর্ধ্যেরা এত । সাবধান ছিলেন, তথাপি প্রাচীন গ্রিকৃয়া ভারতবর্ষ হইতে কি প্রকারে অগ্ন্যন্ত্রের কৌশল শিখিয়া লইয়াছিলেন। গ্রিসে এই রূপ প্রবাদ আছে যে, ক্যালেনে ।
পাতা:বিশ্বকোষ প্রথম খণ্ড.djvu/৭৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।