পাতা:বিশ্বকোষ বিংশ খণ্ড.djvu/১২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শক্তি [ *२१ গনশক্তি ক্রিয়াশক্তিঃ কর্তৃপ্তাকর্তৃতাপি চ। ইত্যাদিকানাং শঙ্কীনমিত্তো মাস্তি শিবাত্মনঃ ॥” ( যোগবশিষ্ঠ নিৰ্ব্বাণ-প্রকরণ ) অর্থাৎ অপ্রমেয়, শান্ত, চিত্মা নিরাকার ও মঙ্গলস্বরূপ পরমাত্মার প্রথমে ইচ্ছাশক্তিয় শরণ হয়, পরে বেণমসত্ত্বার, কাললস্তার ও নিয়তি সত্তার যথাক্রমে অভিব্যক্তি হইয়া থাকে । ইচ্ছােসৱারি অনুগতাসহ মহাসভা নামে অভিহিত। ইচ্ছাদি সত্তাই ঐশীশক্তি । জ্ঞানশক্তি, ক্রিয়াশক্তি, কর্তৃত্বশক্তি, অকর্তৃত্ব শক্তি ইত্যাদি নামে পরমেশ্বরের বহু শক্তি আছে। এই সকল শক্তি শক্তিমান পরমেশ্বর হইতে অভিন্ন“শক্তিঃ শক্তিমত্তো রভেদাৎ” । যোগবাশিষ্ঠকার বলেন—“শিবস্তানত্তরূপস্ত এষাচিন্মাত্ৰতাত্মনঃ ” ইহাতে আপাততঃ মনে হইতে পারে যে শক্তিমান হইতে শক্তি ভিন্ন। কিন্তু টীকাকার লিখিয়াছেন— "মায়। হি স্বরূপতোংলস্তং শিবং গুণতঃ শক্তিতঃ কার্য্যতশ্চানস্তং কুৰ্ব্বাণ তষ্ঠানস্ত্যং বৰ্দ্ধয়তাব নতু বিহুন্তীতি ভাবঃ মনাগপি ৰিকল্পনাদ্ভিন্ন ন বস্তুত ইত্যর্থঃ ” 尊 অর্থাৎ সেই শিব হইতে শক্তি যে ভিন্নরূপে ৰিকল্পিত হয়, উহ! বিকল্প মাত্র, বস্তুতঃ ভিন্ন মহে । যোগবশিষ্ঠের ব্যাখ, অপর রূপেও হইতে পারে ; তা যথা-চিন্মাত্রাত্ম যে পরমাত্মা তথা হইতে শক্তি ভিন্ন। শক্তি মায়ারই স্ফৰ্ত্তিমাত্র। তাদৃশ নিগুৰ্ণ নিক্রিয় নিরঞ্জন হইতে শক্তি ভিন্ন পদার্থ। সাংখ্যদর্শনেও শক্তি শব্দের ব্যবহার দৃষ্ট হয়। করণ, wikiঙা বা শক্যতা এবং উপাদান কারণ বুঝাইতেই সাস্থ্য দর্শনে শক্তি শব্দের প্রয়োগ দৃষ্ট হয় যথা— “শকুন্তবায়ুস্তবাভ্যা নাশক্যোপদেশঃ ” ( ১।১১ ) পদার্থের ধৰ্ম্মত্ব কখনও অপনোদিত হয় না, অর্থাৎ স্বভাব কিছুতেই একবারে বিধ্বস্ত হয় না। আপত্তি হইতে পারে যে অঙ্কুল্পোৎপাদনই বীজের স্বভাব, কিন্তু বীজ দগ্ধ হইলে তাহার এই স্বভাব বিধবস্ত হয় । কপিলদেব এই আপত্তি খগুনার্থ বলিয়াছেন, এই দৃষ্টান্ত দ্বারা শক্তির অত্যন্ত উচ্ছেদ সপ্রমাণ হয় না । এই° ব্যাপারে শক্তির কেবল ক্ষণিক তিরোভাবই সপ্রমাণ হয়, কিন্তু অভ্যন্ত বিনাশ এ উদাহরণে সপ্রমাণ হয় না। যোগিগণের সঙ্কল্প কাৰ্য্যবশতঃ দশ্বৰীজাদিতেও অঙ্কুল্পোৎপাদিক শক্তির উত্তৰ হইতে পারে। সাংখ্য প্রবচনভাষ্যে লিখিত হইয়াছে “ন শেয়াছুৱশষ্ট্র্যোয়ভাবে ভবতি । রজফব্যাপায়ৈর্যোগিসঙ্কলালিভিশ্চ স্বৰূপটভূষ্টৰীজয়েঃ পুনঃ শোকান্থরশক্ত্যাৰিভাষাििड;र्थः ५” - | শক্তি বিজ্ঞানভিক্ষু বলেন ষে তদৃযথা— o “কাৰ্য্যশক্তিসত্বমেব উপাদানকারণত্বম্ সা শক্তি; কাৰ্য্যস্তামাগতাৰম্বৈৰ ।” e পাতঞ্জলদর্শনেও শক্তি শস্যের প্রয়োগ দেখিতে পাওয়৷ যায়। তথায়ও যোগ্যতা ও সামর্থ্য প্রভৃতি অর্থেই ব্যবহৃত হইয়াছে। পূৰ্ব্বমীমাংসায়ও উক্ত মর্থেই শক্তি শম্বের প্রয়োগ দেখিতে পাওয়া যায়। যথা— “তদশক্তিস্বাক্ষরূপত্বাৎ" (পুং মীঃ ১।৩২) অর্থাৎ শব্দাদির যে অপভ্রংশ হইয়া থাকে উছৰ্ণ অশক্তির অমুরূপ নিবন্ধন । অর্থাৎ উচ্চারণের সামর্থ্যহীনতা অনুসারেই শব্দপভ্রংশদোষ সংঘটিত হইয়া থাকে। দৃষ্টান্ত স্থলে বল, যাইতে পারে গো শঙ্কট সাধু। কিন্তু উচ্চারণ সমর্থ্যহীনতা নিবন্ধন কেহ কেহ ইহাকে “গাঠা” বলেন। মহৰ্ষি জৈমিনিও যোগ্যতা ও সামর্থ্য অর্থেই শক্তি শব্দের প্রয়োগ করিয়াছেন । ” অতঃপর উত্তর-মীমাংসাতে বা ব্ৰহ্মপুত্রেও “শক্তি” শব্দটী দেখিতে পাওয়া যায়-- “শক্তি বিপর্যায়াৎ।” (২।৩৩৮ ) ইহার তাৎপৰ্য্য এই যে জীধই কর্তা হইবার যোগ্য ; বুদ্ধ নহে। বুদ্ধিকে কর্তা বলিলে তাহার করণশক্তির লোপ ও কত্ত্বশক্তি বুদ্ধির আবার ভিন্ন করণের কল্পনা করিতে হয় ; উহা অষ্ঠায্য। এই সুত্রের শঙ্কর ভায্যের মৰ্ম্ম এইরূপ--অষ্টান্ত কারণেও জীবকেই কর্তা বলা উচিত। সে কারণ এই—যদি বিজ্ঞান শব্দবোধ বুদ্ধিকৰ্ত্ত হয়, তাহ হইলে শক্তি বৈপরীত্য মানিতে হয়। অর্থাৎ বুদ্ধির করণশক্তি হানি ও কাশক্তির প্রাপ্তি স্বীকার করিতে হয়। বুদ্ধির কত্ত্বশক্তি মানিলে উহা যে অহং জ্ঞানের গম্য, ইহা স্বীকার্য্য হইয়া উঠে । কিন্তু আসল কথা এই যে কৰ্ত্ত করণ হইতে পৃথকৃ। জীব কর্তা, বুদ্ধি করণ মাত্র, বুদ্ধিকে কওঁ বলিয়া স্বীকার করিলে শক্তি বিপৰ্য্যয় ঘটে । এস্থলেণ্ড শক্তি অর্থে সামর্থ্য বা যোগ্যতা । ভর্তৃৎরিকৃত বাক্যপদীয় গ্রন্থেও আমরা শক্তি শব্দের এক বিশিষ্ট ব্যবহার দেখিতে পাই । তদৃযথা—

  • একমেব যদান্নাতং ভিল্লং শক্তিব্যপাশ্রয়াং । অপৃথকৃত্বেছপি শক্তিভ্যঃ পৃথকৃত্বেনেৰ বৰ্ত্ততে " - অর্থাৎ শব্দ ব্রন্ধে একত্বের অবিরোধিনী, পরম্পর পৃথক আত্মভুত শক্তিসমূহ বিরাজমান । এই সকল শক্তির ভেদারোপ নিমিত্ত শক্তিসমূহ হঠতে যদিও ব্রহ্ম মূলতঃ পৃথষ্ণ নহেন, তথাপি ব্রহ্মের পৃথকৃত্ব আরোপ হইয় থাকে।

বাক্যপদীয়কার আরও লছেন,— “কাৰ্য্যের অনাগত অবস্থাই শক্তি ।”