পাতা:বিশ্বকোষ বিংশ খণ্ড.djvu/৫৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

• শেষবৎ [ ৫৫২ ] শেষবৎ বহি ধূমের ব্যাপক, কেননা যেখানে ধূম অাছে, অবশুই সেইখানে বহি আছে । প্রথমতঃ ধূম ও বহির ব্যাপ্তি নিশ্চয় হয়, অর্থাৎ বহ্নিকে ছাড়ির ধূম কখনই থাকিতে পারে না, ইহা বিশেষরূপে পরীক্ষিত হয়। ব্যাপ্তিজ্ঞানের প্রতি ব্যতিরেক নিশ্চয়ই প্রধান কারণ । “ধুম বহিকে ছাড়িয়া কখনই থাকিতে পারে না’ এরূপ জ্ঞান যে কাল পর্যন্ত না হয়, ততক্ষণ শত সহস্ৰ স্থলে বহি ও ধূমের একত্র অবস্থানারূপ অম্বল্পনিশ্চয়ে ব্যাপ্তি স্থির হয় না। উক্তরূপে ব্যাপ্তি স্থির হইলে পর পর্বতাদিতে অবিচ্ছিন্নমূল ধুমদর্শনের পর ধুম বহ্নির ব্যাপ্য এইরূপ স্মরণ হয়, এবং তখন বহ্নিব্যাপ্য ধূম পৰ্ব্বতে আছে এরূপ অনুমান হইয়া থাকে। ব্যাপ্তি দুই প্রকার,-অম্বয়ব্যাপ্তি ও ব্যতিরেকব্যাপ্তি, “তৎসত্ত্বে তৎসত্তা অস্বয়ঃ” যেখানে ব্যাপক বহ্ন্যাদি অবশুই থাকিবে, এইরূপ ব্যাপ্তিকে অস্বয়ব্যাপ্তি কহে। অস্বয়ব্যাপ্তি স্থলে হেতু ও সাধ্যের সীমানাধিকরণ অর্থাৎ একত্রাবস্থান পূৰ্ব্বে লক্ষিত হয়, পাকশালাতে ধূম ও বহির সামানাধিকরণ্য প্রত্যক্ষ হয় । এইরূপ অনুমান বীত অনুমান, ইহারই ভেদ পূর্ববৎ ও সামান্ততোদৃষ্ট । ইহা ভিন্ন অনুমান শেষবৎ, সুতরাং উহা অবীত । “তদসত্ত্বে তদসত্ত্ব বাপকাভাবৎ ব্যাপ্যাভাবঃ” তাহার অসত্তায় অর্থাৎ তদভাবে তাহার অভাব, ব্যাপকের অভাবে ব্যাপ্যের অভাব, যেখানে ব্যাপক বহ্নি প্রভৃতি নাই, সেখানে ব্যাপ্য ধূমাদিও নাই, বা থাকিতেই পারে না, এইরূপ ব্যাপ্তিকে ব্যতিরেকব্যাপ্তি কহে । শেষবৎ অনুমান এই ব্যতিরেকব্যাপ্তিমূলক। এস্থলে হেতু পূৰ্ব্বেও সাধ্যের সামানাধিকরণ্যজ্ঞান পূৰ্ব্বে না হইলেও চলে, স্থলবিশেষে সাধাজ্ঞান হইতেই পারে না, স্থলবিশেষে যোগ্যতা থাকিয় ন হইলেও ক্ষতি হয় না । এই অনুমান যথা— “ইয়ং পৃথিবী পৃথিবীতরভিন্ন গন্ধবত্ত্বাৎ" এই পৃথিবী বা ক্ষিতি গন্ধগুণবিশিষ্ট ৰলিয়া পৃথিবীতর হইতে ভিন্ন, যাহাতে গন্ধ আছে, সেই পদার্থট পৃথিবীতর জলদি হইতে ভিন্ন, কেন না ক্ষিতি ভিন্ন জলাদি অদ্য কোন পদার্থে গন্ধ গুণ নাই । যাহাতে গন্ধ আছে, সেক্টট পৃথিবী, ইহা অনুমানের পূৰ্ব্বে জানা যায় না। কিন্তু পৃথিবীতর ভেদের অভাব অর্থাৎ ব্যাপকাভাব, জলাদিতে আছে এবং সেই স্থলে গন্ধেরও অভাব আছে, ইহ জনা যায় ; অতএব “তদভাবব্যাপকীভূতাভাবপ্রতিযোগিত্বাৎ" অর্থাৎ সাধ্যাভাবের ব্যাপক যে অভাব সেই অভাবের প্রতিযোগীই হেতু ; এইরূপে ব্যতিরেকব্যাপ্তিগ্রহ হয়। হেতুর ব্যাপক সাধ্য এবং সাধ্যাভাবেল্প ব্যাপক হেত্বভাব, যেখানে ধূম আছে, সেইখানে বহি আছে, যেখানে বঙ্কির অভাব আছে সেইখানে ধূমের অভাব আছে, ইহাই স্থির করিতে হইবে। গন্ধট গুণপদার্থ, সুতরাং দ্রব্যে থাকে। জলদিও দ্রব্য সুতরাং তাহাতে গন্ধ থাকা সম্ভব ছিল, কিন্তু প্রমাণ দ্বারা স্থিরীকৃত আছে, গন্ধ পৃথিবী ভিন্ন অন্ত কোন পদার্থে নাই ; আর ‘গুণাদি নিগুণপ্রিয়ঃ’ এই বচনানুসারে গুণাদিতে গুণ থাকিতে পারেন, সুতরাং জুলাদি পদার্থ ও রূপাদি গুণ গন্ধে থাকা অসম্ভব বিধায় পরিশেষে উচ্চ যে পৃথিবীতেই আছে ইহা স্থির নিশ্চয় । অতএব এই গন্ধ জ্ঞান স্বারাই পুথিবীত্বের জ্ঞান হইয়া থাকে, ইহাই শেষবৎ অনুমান । ইহার আরও একটু পরিষ্কার করিয়ু বলিতে হটলে বলা হয় যে শেষবৎ অনুমানে হেতু সাধ্যের ব্যাপ্যব্যাপকভাবষ্ঠান নাই, কিন্তু সাধ্যা ভাব ও হেত্বভাবের ব্যাপ্যব্যাপকভাবজ্ঞান আছে, তাহার ফলে সাধ্যাভাবের নিষেধ হয়, সুতরাং সাধাজ্ঞান হইয় পড়ে, যথা পৃথিবী পৃথিবীতরেভো ভিদ্যতে গন্ধবস্থাৎ” পৃথিবীতে পৃথিবীভেদ নাই; হেতু গন্ধ পৃথিবীভেদ গদ্ধাভাবের ব্যাপ্য এবং গন্ধাভাব পুথিবীতে নাই, এই জ্ঞান হইলে পৃথিবীতে পৃথিবীভেদ নাই, এইরূপ জ্ঞান হয়, পরিণামে পৃথিবীত্ব তাহাতে আছে, এই প্রকার বোধ হইয়া থাকে। সাংখ্য মতে এই ধে শেষোক্ত বোধ ইহা অনুমিতি । পৃথিবীত্ব কিন্তু এ অনুমিতির বিধেয় নহে, বিষয় মাত্র। পূৰ্ব্ববং অনুমান দ্বারা পৰ্ব্বতে ষে বহির অনুমিতি হয়, তাহাতে বহি বিধেয় হইয়া থাকে। বিধেয়ত মনোবৃত্তি বিশেষ, যে অনুমিতিতে বিধেয়তারূপ মনোবৃত্তিৰ সম্পর্ক নাই, সেই অনুমিতিসাধন প্রমাণই শেষবৎ অনুমান । নৈয়ায়িকদিগের মতে ব্যতিরেকব্যাপ্তি জ্ঞানকে শেষবৎ অনুমান কহে । “সাধ্যাভাবব্যাপকভাবপ্রতিধোগী হেতু এই জ্ঞানই ব্যতিরেকব্যাপ্তিজ্ঞান । ব্যাপকের প্রচলিত অর্থ যে ব্যাপিয়া থাকে। ব্যাপ্যের চলিত অর্থ যাহাকে ব্যাপিয়া থাকে, এই অর্থ সৰ্ব্বধাদি সন্মত। যাহার অভাব, তাহাকে প্রতিযোগী বলা যায়, যথা—ঘটের অভাব, এ অভাবের প্রতিযোগী ঘট । এখন বুঝিয়া দেখ ষে “অয়ং পৃথিবীতরেভো ভিস্ততে গন্ধবস্থাৎ গন্ধ হেতু এই বস্তু পৃথিবীর ইতর বস্তু হইতে ভিন্ন. এই স্থলে সাধ্য পৃথিবীতরভেদ সাধ্যাভাব পৃথিবীতরত্ব, তাহার ব্যাপক যে অভাব, তং প্রতিযোগী গন্ধ, অর্থাৎ গন্ধাভাব তাহার ব্যাপক । যে বস্তু পৃথিবী নহে, তৎসমুদ্ৰায়ে গন্ধ নাই, এই রূপ জ্ঞানকে বাতিরেকব্যাপ্তি জ্ঞান কহে। সাধ্য যে পৃথিবীতর ভেদ, তাহার জ্ঞান না হইলেও সাধ্যাভাব যে পৃথিবীতরত্ব তুষিয়ে জ্ঞান হয়, এই রূপ জ্ঞান হইলে তখনই অনুমিতি হয়। ইহাই শেষবং অঙ্কুমান । ( সাংখ্যতত্ত্বকেী" ) { প্রমাণ ও হায়দৰ্শন দেখ ]