শোঁচ • "ধৰ্ম্মবিদক্ষিণং হস্তমধঃশোঁচে ন যোজয়েৎ । তথৈব বামহস্তেন নাভেরূৰ্দ্ধং ন শোধয়েৎ ॥ o উদ্ধৃতোদকমাদার মৃত্তিকাঞ্চৈব বাগবতঃ। উদঘুখে দিবা কুৰ্য্যাৎ রাত্রেী চেদক্ষিণামূখঃ ॥ এক লিঙ্গে গুণে তিস্রো দশ বামকরে তথা । হস্তদ্বয়ে চ সপ্তান্ত মৃদঃ শোঁচোপপাদিকা ।” ( আহ্নিকতত্ত্ব ) দিবাভাগে উত্তরমুখে এবং রাত্রিকালে দক্ষিণমুখী হইয়া শোঁচ কাৰ্য্য করিতে হয়। এইরূপ শৌচ করিয়া পাদদ্বয়েও তিন তিন বার মৃত্তিক ও জল দ্বারা ধুইয়া ফেলিতে হয়। তৃণাদি দ্বারা নখমধ্যদেশ হইতে মলাদির শোধন করিবারও বিধান আছে। তৎপরে পাণিপাদ উত্তমরূপে প্রক্ষালন করিয়া দুইবার আচমন করিবে। এইরূপ করিলে শৌচ অর্থাৎ শুদ্ধিলাভ করা যায়। এই যে শোচের কথা বলা হইল, দিৰাভাগে ইহার সম্পূর্ণ এৰং রাত্রিকালে ইহার অৰ্দ্ধেক পরিমাণ করার বিধান আছে। জাতুর ব্যক্তির পক্ষে তদৃদ্ধ পরিমাণ এবং পথিমধ্যে তাঙ্গরও অৰ্দ্ধেক শৌচ বিধেয়। অনুপনীত দ্বিজ, স্ত্রী ও শূদ্রগণের মলাদির গন্ধ ও লেপ অপগড় হইলেই তাহাদের শৌচ হইয়াছে বুঝিতে হইবে। “যথোদিতং দিব। শৌচং অৰ্দ্ধং রাত্রে বিধীয়তে। আতুরে তু তদদ্ধং সাত্তদদ্ধং তু পথি স্থতম্ ॥ ন যাবস্থাপনীয়েত দ্বিল্প: শূদ্ৰস্তথাঙ্গনা। গন্ধলেপক্ষয়করং শৌচং তেষাং বিধীয়তে ॥" ( আহ্নিক তত্ত্ব ) শৌচ সম্বন্ধে বিশেষ এই যে যতক্ষণ পৰ্য্যস্ত নিজের শুদ্ধি না হয়, ততক্ষণ শৌচ করিবে, পূৰ্ব্বে যে সংখ্যা অভিহিত হইয়াছে, সেই সংখ্যানুসারে শৌচকার্য্য করিলেও যদি নিজের গুদ্ধি বোধ না হয়, তাছা হইলে তাহার আরও অধিক পরিমাণে শৌচ করিতে হয় । যে সকল ব্যক্তি শৌচাচারবিহীন, তাহীদের সমস্ত ধৰ্ম্মকৰ্ম্ম নিষ্ফল হইয় থাকে । “প্ৰমাণং শৌচসংখ্যা বা ন শিষ্টৈরুপদিশ্যতে। যাবৎ শুদ্ধিং স মন্তেত তাবৎ শৌচং সমাচরেৎ ॥ মূনাধিকং ন কর্তব্যং শৌচং শুদ্ধিমতীপসত। শৌচাচারবিহীনস্য সমস্ত নিষ্ফলঃ ক্রিয়াঃ ” (আহিকতত্ত্ব) এই জন্ত যথা বিধানে শৌচক্রিয়া করা সকলেরই কর্তব্য । ভগবান মন্ত্র বলিয়াছেন,— “উপনীয় গুরুঃ শিষ্যং শিক্ষয়েচ্ছৌচমাদিতঃ। আচারমগ্নিকার্য্যঞ্চ সন্ধ্যোপাসনমেব চ।” ( মন্ত্র ২৬• ) গুরু শিষাকে উপনয়ন দিয়া প্রথমে তাহাকে শৌচশিক্ষা দিবেন। অগ্রে বাহশৌচ, তৎপরে আভ্যন্তর শৌচ ৷ বহিঃশোঁচ স্বারা দেহ বিশুদ্ধ এবং অভ্যস্তর শেচে আত্মার শুদ্ধি হয় । । [ ¢v २ ] শোঁচ যে স্থলে শৌচ ক্রিয়া করা হয়, সেই স্থান জল দ্বারা শোধন করিবে, যিনি ঐ স্থল শোধন না করেন, তাহার সেই স্থান সম্যকৃ অশুদ্ধ থাকে। যে পাত্রে জল লইয়া শৌচ ক্রিয় করা হয়, সেই পাত্রও গোময় বা মৃত্তিক দ্বারা মার্জন করিতে হয়। তৎপরে আচমন করিয়া আদিত্য, সোম বা অগ্নি দর্শন করিবে । “যস্মি স্থানে কৃতং শৌচং বারিণা তদ্বিশোধয়েৎ । ন শুদ্ধিস্ত ভবেত্তত্ব মৃত্তিকাং যো ন শোধয়েৎ ॥ শৌচানন্তরং হার্যতঃ গোময়েন মৃদ বা কমণ্ডলুং প্ৰমৃজ্য পূৰ্ব্ববন্ধুপম্প্রখ আদিত্যং লোমমগ্নিং বা বীক্ষেত।" ( चांश्रुिडस् ) পাতঞ্জলে আছে—“শৌচাৎ স্বাঙ্গজুগুপ্ত পরৈরসংসৰ্গ" (২৪• ) যাহাঁদের বাহশৌচ সম্পন্ন হইলেও তাঁহাদের নিজের দেহেই ঘুণ বোধ হয়, তখন উহাদের পরকীয় শরীরের সংস্পর্শ প্রবৃত্তি কিছুতেই হইতে পারে না । ইহার তাৎপৰ্য্য এই ষে শরীরশোধনের শাস্ত্রোক্ত যে উপায় অভিহিত হইয়াছে, তাহাই শৌচ। এই শৌচ বিহিত হইলে তদার ক্রমে স্বাঙ্গ-জুগুন্স উপস্থিত হয় । “স্বাঙ্গজু গুপায়াং শৌচমারভমাণ কায়াবন্তদশ কায়ানভিঘঙ্গী যতি ভবতি । কিঞ্চ পরৈরসংসর্গ: কায়স্বভাবাবলোকী স্বমপি কায়ং জিঙ্গাস্বমূ জলাদিভিরাক্ষাল গ্লপি কায়গুদ্ধিমপশুন্ কথং পরকায়ৈরত্যন্তমেবা প্রযতৈঃ সংস্থজ্যেভ” (ব্যাস ভাষ্য ২।৪৭) শরীরের প্রতি ঘুণ বোধ করিয়া শৌচ আরম্ভ করে, পরে শরীরের অশুদ্ধিরূপ দোষ দর্শন করিয়া উহাতে অভিঘঙ্গ অর্থাৎ স্কুল শরীরের সম্বন্ধ পরিত্যাগের বাসনা হয়। ইহাকে স্বাঙ্গজুগুপ্ত কহে। শরীরের স্বভাব অর্থাৎ স্থান বীজ প্রভৃতি সম্যক অমুশীলন করিয়া নিজ শরীরেরই পরিত্যাগের ইচ্ছুক হইয়৷ মৃত্তিক ও জলদি দ্বারা বারংবার সংস্কার করিয়াও যখন শুদ্ধি বোধ করে না,তখন অতিশয় অশুচি পরকীয় শরীর স্পর্শ করিবে, ইহা কখনই সস্তব নহে । ঘুণ বোধ না হইলে বৈরাগ্য জন্মে না বৈরাগ্য না হইলে পরিত্যাগের বাসনা হয় না এবং শরীরকে মুন্সর বলিয়া বোধ হয়। ইহার প্রধান কারণ, উহাতে আত্মাভিমান থাকাতেই নিজ শরীরের উপকারক পরকীয় শরীরও স্বনার বলিয়া বোধ হয়। শরীর হইতে আত্মাকে পৃথকৃ পৃথক্ বলিয়া জানিতে পারিলে আর সে মুনার ভাব থাকে না । তখন শরীরের বহুবিধ দোষ দৃষ্ট হয়, তখন কিরূপে একেবারে শরীরের সম্বন্ধ ত্যাগ হইবে, তাহার চেষ্ট হয়। প্রথমে বাহশৌচ সিদ্ধি দ্বারাই ইহা হইয় থাকে। বাস্থশোঁচ সিদ্ধি হইলে, পরে জাভ্যস্তরশোঁচ অভ্যাল করিতে হয়।
পাতা:বিশ্বকোষ বিংশ খণ্ড.djvu/৫৮৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।