পাতা:বিশ্বকোষ ষোড়শ খণ্ড.djvu/২৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রথযাত্র [ २8¢ রথযাত্রী |--|-- সময়ে এই রথযাত্র। প্রচলিত হয়, তাহ এখনও স্থিরনিশ্চিত হয় নাই। কোন কোন পাশ্চাত্য পুরাবিং ও প্রত্নতত্ত্ববিদ ডাঃ রাজেন্দ্রলাল মিত্রের মতে বুদ্ধদেবের জন্মোৎসব উপলক্ষে বৌদ্ধসাধারণ যে রথযাত্র উৎসব করিত, তাছা হইতে ভারতীয় রথযাত্রার উৎপত্তি। তাহাদের এই যুক্তির কারণ— খৃষ্টীয় ৫ম শঙ্গাঙ্গে চীনপরিব্রাজক ফা-হিয়ান লি-য়ুল বা খেtহনরাজ্যে অবস্থানকালে বুদ্ধের রথযাত্র। বর্ণনা করিয়াছেন— ‘চতুর্থমাসের ১ম দিবসে নগরের সমস্ত রাস্তায় বাট ও জল দেওয়া হইল, রাজপথ নানারূপ ধ্বজপতাকায় ভূষিত ছইল, নগরের গোপুরের উপর চন্দ্ৰাতপ সাজান হইল। এই গোপুরের উপর রাজা, রাণী ও রাজপুরমহিলাগণের বসিবার স্থান। রাজ মহাযানেরই সমধিক সন্মান করিতেন বলিয়৷ সৰ্ব্বপ্রথমে মহাযানমতাবলম্বী গোমতী বৌদ্ধাচাৰ্য্যগণের প্রতিমাগুলি বাহির হইল। নগর হইতে প্রায় ৩৪ লি দূরে র্তাহীদের বিগ্রহের জন্ত রথ প্রস্তুত হয়। রথখানি চারি চাকার, উচ্চতায় প্রায় ৩• ফিট্র, সপ্ত মহারস্তু-সুশোভিত, দেখিতে যেন একটা সচল রাজ প্রাসাদ। তাহার উপর চারিদিকে রেশমের চন্দ্রা তপ ও রেশমের পর্দ উড়িতেছে। মধ্যস্থলে মূল বিগ্ৰহ, তাহার সহচররূপে দুই পার্থে দুই বোধিসত্ত্ব এবং তাছাদের অনুচরক্কপে নানা দেবমূৰ্ত্তি। স্বর্ণ ও রৌপ্যের অভিনব সুচিঙ্কণ অলঙ্কার সকল বাতাসে ছলিতেছে। রথ গোপুরের নিকটবর্তী ছইলে রাজ নিজ রাজমুকুট খুলিয়া ফেলিয়া নুতন কাপড় পৱিয় খালি পায়ে হাতে ধুপ ধুন ও ফুলের মালা লইয়া মমুচরগণ-পরিবৃত হইয়া রথের সন্মুখে উপস্থিত হইলেন, এবং অবনত মস্তকে দেবের পদে পুষ্পাঞ্জলি দিয়া ও ধূপধূনা জালিয়া তাহার পুজা করিলেন। নগরে প্রবেশকালে গোপুর रुङ्गे उ রাণী ও রাজপুরমহিলাগণ নানাবিধ পুষ্প অবিশ্রান্ত বর্ষণ করিতে লাগিলেন।’ এইরূপে মহাসমারোহ হইয়া থাকে। “এইরূপ প্রত্যেক সঙ্ঘারাম হইতে বিভিন্ন প্রকার রথ বাহির হইয়া থাকে। চতুর্থ মাসের প্রতিপদ হইতে সকলের ৰাত্রা আরম্ভ এবং চতুর্দশীর পরে উৎসব শেষ হয়। উৎসব শেষ হইলে রাজ ও রাণী প্রাসাদে ফিরিয়া আসেন। (Fo Kwo-ki, ch. II ) ফা-হিয়া পাটলিপুত্ৰ-দৰ্শনকালেও এইরূপ বর্ণন করিয়াছেন,— ‘প্রতিবর্ষেই ২য় মাসের ৮ম দিবসে যাত্রোৎসব হইয়া থাকে। এই সময়ে তত্ৰতা অধিবাসিগণ রথে বুদ্ধ প্রতিমা লইয়া ৰাছির হয়। ঐ রথ চারিট চক্রবিশিষ্ট, পঞ্চ আর শোভিত, খেত্রিশূলাকার ২২ ফিটু উচ্চ ধ্বজদও গতি, ঐ রথ দেখিতে XVI tుశి ঠিক মন্দিরের মত, তাহ আধার অতি শুভ্র সুচিক্কণ ও মানাदtfििजङ बश्नशूङ। उ िशएउ आंदोग्न से९इहे कि१थाप्दग्न চাদোয়ার মধ্যস্থলে স্বর্ণ, রৌপ্য ও স্ফটিকের অলঙ্কার যুক্ত নানা দেবমূৰ্ত্তি, রথের চারিট চৈত্য, তন্মধ্যে চারিট ধ্যানী বুদ্ধমূৰ্ত্তি, প্রত্যেকটর সম্মুখে একটা দণ্ডায়মান বোধিসত্বমূৰ্ত্তি। এইরূপ ২• খানি বৃহৎ স্লথ গঠিত ও নানা বেশভূষাৰ স্থসজ্জিত হঠয়া থাকে । এই রথোৎসবে কি যতি, কি শ্রমণ, কি ব্রাহ্মণ, কি জন সাধারণ সকলেই যোগদান করিয়া থাকেন। নানাবিধ বাস্ত ধ্বনি ও কৌতুক চলিতে থাকে। সমস্ত রাত্রি জাগিয়া সকলে দীপালোকে প্রতিমার আবাহন, তযুদ্দেশ্বে গীতৰাস্ত ও আমোদ প্রমোদ করেন । বহুদূর দেশ হইতে অনেক লোক আসিয়া এই উৎসবে যোগদান করেন।” ফা-হিয়ান পাটলিপুত্রে যে দিন রথোৎসব সন্দর্শন করেন, ঐ দিনই বুদ্ধের জন্মদিন বলিয়া অনেকের বিশ্বাস • ফা-হিয়ানের উক্ত বর্ণনা পড়িয়া এখানকার জগন্নাথদেবের রথযাত্রা–বুদ্ধদেবের রথযাত্রারই নিদর্শন বলিয়া অনেকে মনে করেন। মুতরাং বৌদ্ধগণ হইতেই ভারতে রথযাত্রার প্রচলন হইয়াছে, তাহাই অনেকের ধারণা। কিন্তু এ সম্বন্ধে সন্দেহ করিবার যথেষ্ট কারণ আছে বলিয়া মনে করি। প্রথমতঃ *বুদ্ধের জন্মোৎসব উপলক্ষে যে রথযাত্রার স্বষ্টি, তাহাই ঠিক মনে হয় না। কারণ পূৰ্ব্বতন বৌদ্ধদিগের মধ্যে এক সময়ে এই উৎসবের প্রচলন ছিল না। ফা-হিয়ানের বিবরণ হইতেই জানা যায় যে,কোথাও ২য় মাসের ১ম দিবসে, আবার কোথাও ৪র্থ মাসের ৮ম দিবসে বুদ্ধদেবের রথযাত্রা হইত। বর্তমান কালে জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা ভারতের সব্বত্রই আষাঢ় মাসের শুক্লা দ্বিতীয়াতে হুইয়া থাকে, এরূপ স্থলে এখনকার জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা ও পূৰ্ব্বকালের রথযাত্রা কিরূপে বুদ্ধের জন্মোৎসব বলিয়া মনে করি । কেবল জগন্নাথদেবের রথযাত্র বলিয়া নহে, কুৰ্ম্ম ও ভবিষ্যপুরাণ হইতে ভাদ্র মাসে সুৰ্য্যের রথযাত্র ; দেবীপুরাণ হইতে কাৰ্ত্তিক মাসে দেবীর রথযাত্রা ; পদ্ম, বরাহ ও ভবিয্যোত্তর পুরাণ হইতে (রাসম্বাত্রার পূৰ্ব্বে) কাৰ্ত্তিক মাসে শ্ৰীকৃষ্ণের রথযাত্র, মৎস্ত ও একান্ত্ৰপুরাণে চৈত্র মাসে শিবের রথযাত্রা, স্বয়ষ্ণুপুরাণে ঐ সময়ে স্বল্পম্ভুনাথ বুদ্ধের রথযাত্র এবং জৈনপুরাণ অথবা জৈনধৰ্ম্মগ্রন্থ হইতে মার্গশীর্ষে চাতুর্মাতের পর পার্শ্বনাথ ও মহাবীরের রখযাত্রার বিস্তৃত বিবরণ পাওয়া যায়। এমন কি, এক সময়ে যুরোপেও যে রথযাত্র প্রচলিত ছিল, তাহারও প্রমাণ পাওয়৷

  • Dr Rajendra lala Mitra's Antiquities of Orissa, Vol. II, p. 185.