লাট [ এই স্তন্তগাত্রে চুইট প্রধান ও কতকগুলি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র লিপি উৎকীর্ণ অাছে। তন্মধ্যে খৃষ্টপূৰ্ব্ব ৩য় শতাদের শেষভাগে বৌদ্ধসম্রাটু অশোকের প্রশস্তিই সৰ্ব্বাপেক্ষা প্রাচীন। উহা পালী অক্ষরে লিখিত। উহার বর্ণমালা ভারতীয় বর্ণমালার সর্বপ্রাচীন নিদর্শন, এখনও উহার অক্ষরাবগী পরিষ্কার খোদিত রহিয়াছে, কেবল মাত্র দুএকটা স্থানে পাথরের চটা উঠিয়া যাওয়ায় সেই স্থানের লিপি নষ্ট হইয়াছে। উহার শেষভাগে একটা ছত্রে সম্রাট, অশোকের এইরূপ অনুজ্ঞা উৎকীর্ণ আছে :–“ধৰ্ম্মের রক্ষা হেতু শিলাস্তম্ভোপরি এই শিলাফলক উৎকীর্ণ কর, যেন ইহা আবহমানকাল বিদ্যমান থাকে ” উহার উপরিভাগের চারিপাশ্বে চারিখানি ও নিয়ে একখানি শিলালিপি দেখা যায় । পুৰ্ব্বমুখী ফলকের শেষ দশ ছত্র ও অন্তান্ত ফলকগুলির লিপি এই দিল্লীস্তম্ভের পার্থক্য জ্ঞাপন করিতেছে । দ্বিতীয় একখানি ফলকে চৌহানরাজ বিশাল (বিগ্রহ) দেবের বিজয়বাৰ্ত্ত উৎকীর্ণ রহিয়াছে। উহ! পাঠে জানা যায় যে, তিনি হিমাদ্রি হইতে বিন্ধীগিরি পর্যন্ত সমুদায় ভূভাগ একচ্ছত্রাধীন করিয়াছিলেন। চৌহান-রাজবংশের গৌরবজ্ঞাপক এই লিপি দুইথাও বিভক্ত। উহার অর্থাংশ প্রাচীন অশোকলিপির উপরে এবং শেষাৰ্দ্ধ তাহার নিম্নে উৎকীর্ণ। উভয় লিপিখণ্ডেই ১২২০ সংবৎ লিখিত আছে। নিম্নখণ্ডের বর্ণমালা আধুনিক সংস্থত। উহাতে লিখিত আছে, শাকম্ভরীরাজ বিশালদেব ১১৬৯ খৃষ্টাৰো এই শিলাফলক নূতন খোদিত করিয়া দেন। ঐক্ষপ আর একটা লাটস্তস্ত মীরাট হইতে আনীত হইয়া দিল্লীনগরে স্থাপিত হইয়াছিল । সম্রাট অশোক তাহার স্বপ্রসিদ্ধ অনুশাসন রাজামধ্যে প্রচারার্থ যে সকল স্তম্ভ স্থাপিত করিয়াছিলেন, তাহাতেই পরবর্তী রাজষ্ঠ ও বৈদেশিক ভ্রমণকারিবর্গ আপন আপন বীরকীৰ্ত্তি উৎকীর্ণ করিয়া গিয়াছেন, তাহদের আর নূতন স্তম্ভ নিৰ্ম্মাণের কষ্টভোগ করিতে হয় নাই । ৪ দিল্লীর লৌহস্তম্ভ-মসজিদের মধ্যস্থলে স্থাপিত। উচ্চতা ২২ ফিট, এবং ব্যাস ১৬ ইঞ্চ। প্রত্নতত্ত্ববিৎ প্রিন্সেপ্ত উহাকে খৃষ্টীর ৩য় বা চতুর্থ শতাঙ্গে নিৰ্ম্মিত বলিয়া অহমান করেন। উহার গা গ্রন্থ লিপি “কনোজী নাগরী" ও অন্তান্ত মিশ্রবর্ণমালায় লৌহগাত্র খোদিত । ইহাতে হস্তিনাপুর-রাজ্যাপহীরক রাজা ধব এবং বালিকাদি জাতির উল্লেখ থাকায় উহাকে খৃষ্টীয় পঞ্চম শতাষ্ট্ৰীয় পরবর্তী বলিয়াই মনে হয়। ৫ নিগমবোধ—যমুনাতীরবর্তী একট তীর্থস্থান, দিল্লী হইতে কএকমাইল দক্ষিণে স্থাপিত । চাদ কবির বিবরণী হষ্টতে জানা যায় যে, চৌহানরাজবংশের গৌরবপ্রকাশক একটী স্তম্ভ "এখানে বিদ্যমান ছিল । কালবশে উহ নাশ প্রাপ্ত হইয়াছে। ২০৭ J লাট ও বারাণসীন্থ অশোকের প্রশস্তিযুক্ত স্তম্ভ। উচ্চতা ৪২ ফিটু ৭ ইঞ্চ । ইহার গাত্রে নানা প্রকায় কারুকার্ধ্য আছে । ৭ গাঙ্গিপুরস্তম্ভ --গাজিপুরে স্থাপিত একটী বৌদ্ধস্তম্ভ । উহার বর্ণমালা পূর্ণসংস্কৃত নহে, এই কারণে সাধারণের পক্ষে সহজবোঁধ্য নহে। ইহার গাত্রে যে শিলাফলক খোদিত আছে, তাহা জালাহাবাদ, দিল্লী প্রভৃতি স্তম্ভের ছায় বৌদ্ধস্তম্ভোপরি স্থাপিত হইয়াছে। উহাতে গুপ্তবংশীয় সমুদ্রগুপ্ত হইতে যুবরাজ মহেন্দ্রগুপ্তের নাম পাওয়া যায়। ৮ রূপবাস-শৈলস্তম্ভ–ভরতপুর রাজ্যের রূপবাসবিভাগের একটা গগুশৈলোপরি স্থাপিত । ইহা বেলেপাথরে নিৰ্ম্মিত এবং অসম্পূর্ণ অবস্থায় নিপতিত রহিয়াছে। উহার বুচৎ দুইটার একের উচ্চতা ৩৩০ ফিটু এবং অপরটর ২২॥৩ ফিট । ৯ ধৌলীস্তম্ভ-কটকের ধৌলীগ্রামে অবস্থিত । ইহাতে লাটবর্ণমালা এবং মধ্যে মধ্যে বলউী ও লিওনী লিপির অক্ষরমালা দৃষ্ট হয়। উড়িষ্যা-বিভাগে যে সকল অশোকস্তম্ভ প্রতিষ্ঠিত আছে, তৎসমুদায়ই বেলেপাথরে গঠিত। ১০ জুনরস্তস্ত--ইহাতে ছুইখানি শিলাফলক উৎকীর্ণ আছে । নানাঘাটের স্তম্ভোপরি উৎকীর্ণ লিপির সহিত দিল্লীস্তম্ভের ও গির্ণর পর্বতস্থ শিলাফলকের সোসাদৃশু আছে। গির্ণরের পাৰ্ব্বত্য-লিপিকে জেমস্ প্রিন্সেপ্ত, পালি বলিয়া অনুমান করেন । লাটলিপি । মহামতি কর্ণেল টড রাজস্থানের প্রাচীন কীৰ্ত্তি ও স্তম্ভখোদিত লিপিমালা দেখিয়া মুক্তকণ্ঠে বলিয়াছিলেন, “অগ্রে ইন্দ্রপ্রস্থ, প্রয়াগ, মেবার, জুনাগড়ের শৈলমালা, বিজুলী ও আরাবল্লী শিখরে স্থাপিত স্তস্তাদির, পৰ্ব্বতগাত্রণোদিত লিপির এবং ভারতের সর্বত্র প্রতিষ্ঠিত জৈন ও বৌদ্ধমন্দিরাদিতে উৎকীর্ণ শিলাফলকসমূহের প্রকৃত তত্ব অবগত হইতে পারিলে, অবশুষ্ট আমরা ভারতবর্যের প্রাচীন ইতিবৃত্ত আলোচনা করিতে অগ্রসর হইতে পারি।” সেই মহৎ সঙ্গল্পে ব্ৰতী হইয়া মহামতি জেমস প্রিন্সেপ, গম্ভীর গবেষণার সহিত ভারতীয় প্রত্নতত্ত্বাবুশালনে যত্নবান হন। তিনি প্রথমে লাটলিপি উদ্ধারে কৃতসঙ্কল্প হইয় পৰ্য্যবেক্ষণ করিতে করিতে বুঝিতে পারিলেন যে, উহ! পালী ও সংস্কৃত ভাষার মিশ্রণে গঠিত। উহার বিশেষ্য ও অপরাপর পদগুলি পাঙ্গিবিভক্তি ও প্রত্যয়যোগে সাধিত এবং ক্রিয়াপদ গুলি প্রায় সংস্থত হইতে গৃহীত হইয়াছে। ভিলক্ষ। স্তন্তেও গুপ্তবংশীর ফলকাদির অনুরূপ ভাষার প্রয়োগ আস্তে, তিনিই প্রথমে ভিলস স্তম্ভের সংখ্যানিরূপণ দ্বারা কালনির্ণয়
পাতা:বিশ্বকোষ সপ্তদশ খণ্ড.djvu/২১১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।